সুখের সন্ধান
মানুষ সর্বদা মনের শান্তি ও আনন্দ খোঁজে। এবং সে তার আনন্দ এবং শান্তি খোঁজার জন্য সে সর্বদা ব্যাকুল হয়ে ওঠে। কিন্তু মানুষ জানে না সে আনন্দ চায় না সুখ চায়। আনন্দ হল চিরস্থায়ী যেকোনো অবস্থাতেই মানুষের আনন্দ হারিয়ে যায় না আনন্দ হল মানুষের অন্তর্নিহিত অবস্থা ।
অপরপক্ষে সুখ যা ক্ষণস্থায়ী মানুষ জানে না যে সুখ তার মানসিক অবস্থা। একই বিষয়ে মানুষ কোন সময় সুখ পায় আবার কোন সময় দুঃখ পায়। অর্থাৎ বিষয় একই থাকার সত্বেও মানুষের সুখ কিন্তু একই থাকে না। যেমন আমাদের ব্যবহৃত এই মোবাইল ফোনটি আমার যখন আমরা প্রথম কিনেছিলাম তখন আমাদের মনে এক নতুন সুখ সৃষ্টি হয়েছিল কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই সুখ আর নেই। কারণ মোবাইলে যখন আমরা ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম দেখি এবং আমাদের কোন কিছু তথ্য শেয়ার করি তখন সেখানে কেউ ভালো কথা লেখে বা কেউ খারাপ কথা লেখে কেউ খারাপ লিখলে তাতে আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়। আমরা দুঃখ পাই।
অর্থাৎ সুখ ও দুঃখ এরা দুই ভাই একে অপরের সাথে এমন ভাবে অতপ্রতভাবে জড়িত যে ,যে মুহূর্তে আমাদের সুখ অনুভব হচ্ছে ঠিক তার পরম হতে আমাদের দুঃখ হচ্ছে। যেমন ধরো আমরা অনেকেই রসগোল্লা খেতে ভালোবাসি তাই ভাবি রসগোল্লা খেয়ে হয়তো আমরা অনেক সুখ পাব সেজন্য যদি কখনো আমরা রসগোল্লার দোকানে বসে রসগোল্লা খেতে বসি, একটা দুটো তিনটে রসগোল্লা খেয়ে হয়তো আমাদের খুব সুখ হবে। কিন্তু যখনই আমরা দশটা বা কুড়িটা রসগোল্লা খেতে যাব সেই রসগোল্লা আর মুখ থেকে আমাদের গলা দিয়ে পেটে যাবে না কারণ আমাদের অস্বস্তি হবে এবং তা আমাদের দুঃখের কারণও হতে পারে।
এটিকে যদি আমরা আনন্দের কথা বলি তাহলে এমন কিছু কাজ আছে যা আমরা করলে সত্যি সত্যিই আনন্দ পায় এবং সময়ের ব্যবধানেও তা আমাদের স্মৃতিপটে উদ্ভাসিত হলেও আমাদের আনন্দই প্রদান করে থাকে। যেমন এই শীতের দিনে যদি কেউ কোন প্রয়োজনীয় মানুষকে শীতবস্ত্র বা তার প্রয়োজনীয় কোন জিনিস প্রদান করে থাকে তবে তা থেকে তার যা আনন্দ লাভ হবে সে আনন্দ কোনদিনও দুঃখে পরিণত হবে না এবং তার আনন্দ যখনই সে এই স্মৃতি বারংবার অনুভব করবে তার আনন্দ আরো উঠলে উঠবে এবং এরকম কার্যের সাথে সে নিজেকে এমন ভাবে জড়িয়ে ফেলবে যে তার মনে হবে যে তার জীবন যেন পরহীতায় ,পরোপকার এর জন্য অতিবাহিত করা উচিত।
বর্তমানে যুবকদের মধ্যে একটা মাদক দ্রব্যের নেশা করার প্রবণতা বেড়ে উঠেছে এবং সেই মাদক দ্রব্যের নেশা করার জন্য তারা বাবা-মার টাকা ধুলিস্যাৎ করে দিচ্ছে কিন্তু যদি তাদের এই নেশা করার প্রবণতার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া যায় অর্থাৎ তাদেরকে যদি স্বেচ্ছাসেবী কার্যের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া যায়। তবে সেরকম নেশায় তাদের জীবনও আনন্দময় হয়ে উঠবে এবং মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্তি তাদের কমে যাবে। তাছাড়া তাদের জীবনে উন্নতিও ঘটবে।
আসুন আমরা সকলে মিলে এমনই একটি সমাজ গড়ে তোলার চেষ্টা করি যেখানে কবি কামিনী রাই এর সুখ কবিতায় উদ্ধৃত -
'সকলের তরে সকলে আমরা ,প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।'এমন প্রবণতার বিকাশ ঘটে এবং আমরাও সেই সুখ বা আনন্দের অধিকারী হয়ে উঠতে পারি যে সুখ কখনো হ্রাস পাবে না বরং সময়ের সাথে সাথে তার বৃদ্ধি ঘটবে।
সত্যি বলতে আপনার আর্টিকেল পড়তে আমার অনেক ভালো লাগে উপরোক্ত লাইনটি আপনি খুব সুন্দর লিখেছেন যেটা আমার মনে লেগেছে।
এছাড়াও আপনি সুখের উদাহরণটা খুব ভালোভাবেই দিয়েছেন একই বিষয়ে প্রথমে সুখ আমরা দেখতে পেলেও আস্তে আস্তে সেটা দুঃখের কারণ হয়ে ও দাঁড়ায়। এটা অতি বাস্তব। সুখের আশায় প্রতিটা মানুষ বিশ্বস্ত মানুষের হাত ধরতে চাই। জীবনে সুখ চাইনা এমন মানুষের সংখ্যা নাই বললেই চলে।
দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি আর্টিকেল আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য ভালো থাকবেন।
0.00 SBD,
1.57 STEEM,
1.57 SP
Thank you so much for supporting me
@papiya.halder আধ্যাত্মিকতার পরিভায় সুখ এবং অন্তরাত্মার প্রকৃত শান্তির যে বিবরণ কিছু বাস্তব উদাহরণ দিয়ে আপনি তুলে ধরেছেন, সেটা মনকে ছুঁয়ে গেছে।
কত গভীর কথা কত সাবলীল ভাবে আপনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, যেখানে জীবনের চরম সত্য তথা নিগূঢ় আধ্যাত্মিক মানসিকতার ছাপ স্পষ্ট।
প্রায় অধিকতর মানুষ আত্ম সুখের জন্য বাঁচেন, কিন্তু সত্যিকারের আনন্দ যে লুকিয়ে আছে অন্যের প্রতি নিঃস্বার্থ অবদানে এটা আসলে সেই কাজে নিজেদের নিযুক্ত না করলে বোঝা অসাধ্য।
এর আগেও অনেক লেখায়, মন্তব্যে জানিয়েছি, বিভিন্ন এনজিও তে কাজের সুবাদে আমার জীবনের অনেক নগ্ন বাস্তব চাক্ষুষ করার সুযোগ হয়েছে, এবং আমরা যারা সুস্থ্য দেহে বেঁচে আছি, যাদের সব থেকেও জীবন নিয়ে হাজারো নালিশ, তাদের একবার এই মানুষগুলোর জীবন যাপন দেখা উচিত।
প্রয়োজন আর লালসার মধ্যে যে বিস্তর পার্থক্য আছে, সেটা আমরা কেউ মনে রাখি না, আপনি যেভাবে এই মিশনের সাথে যুক্ত আছেন, সেটাও সৌভাগ্যের প্রতীক।
কারণ, ঈশ্বর সকলকে জীবের সেবা করবার সুযোগ দেন না। ভালো লাগলো আপনার লেখা পড়ে, ভালো থাকবেন সবসময়।
আপনি এই আর্টিকেলটা অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন আপু। সুখ আর দুঃখ নিয়ে এই পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো এবং পৃথিবীতে যেমন সুখ আর দুঃখ সব সময়ই মানুষের সাথে মিশে থাকবে এটাই চিরস্থায়ী।