নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ঢাকা শহরবাসী
নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ঢাকা শহরবাসী |
---|
Hello,
Everyone,
আমি ১৯৫২ দেখিনি,আমি ১৯৭১ দেখিনি , দেখেছি আমি ২০২৪ সাল । এ দুটি মাসের ভিতরে যে এতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি আমাদের সামনে এসে দাঁড়াবে তা কখনোই ভাবতে পারেনি ।আমরা যখন একটি বিপদ পার করি তখন আরেকটি বিপদ সামনে এসে হাজির হয় । এভাবে যে আর কত আন্দোলন করতে হবে? কত যুদ্ধ করতে হবে? এই যুদ্ধ শেষ কবে হবে জানিনা ।
আমাদের জনবহুল ছোট্ট দেশটি যুদ্ধ , রক্ত, হানাহানি থেকে কবে মুক্তি পাবে ?আর কতবার দেশ স্বাধীন করতে হবে ? ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের জন্য রক্ত দিতে হয়েছে, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিতে হয়েছে,১৯৯০ সালের রক্ত দিতে হয়েছে। এভাবে বারবার রক্ত দিতে দিতে বাংলাদেশের মাটি থেকে আর রক্তের দাগ শুকাচ্ছে না।
রক্ত দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছে। এই স্বাধীনতার আনন্দ উল্লাস যখন ছাত্ররা করছে তখন এই আনন্দটাকে মলিন করার জন্য ডাকাত দল গভীর রাতে হিংস্র থাবা বসাচ্ছে। দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে জনগণকে জিম্মি করে সমস্ত কিছু লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে ।এমনকি মানুষ খুন করতে তাদের বুক কাপে না ।
এটুকু জীবনে আমি কখনো ডাকাত দেখিনি বা কখনো শুনিনি যে, ডাকাত এসেছে। আমার শাশুড়ি মায়ের মুখে গল্প শুনেছিলাম অনেক ।দেশে যখন দুর্ভিক্ষ চলছিল তখন ডাকাত দল ছিল যারা বড়লোকের অর্থ সম্পদ লুট করে নিয়ে গিয়ে গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দিত। তখনো কিছু হিংস্র ডাকাত ছিল। এক সঙ্গে এত ডাকাতীর খবর আগে কখনও দেখিনি বা আমরা শুনে নিন।
ঢাকা শহরে ডাকাতি হওয়ার মত ঘটনা খুব কমই ঘটে থাকে। বেশিরভাগ ডাকাতি হয়ে থাকে গ্রাম অঞ্চলে। কিছুদিন থেকে দিনের বেলা হোক কিংবা রাতের বেলা হোক, ঢাকা শহর যেন ডাকাত দল দখল করার চেষ্টা করছে । প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় অলি-গলিতে ডাকাত ঢোকার চেষ্টা করছে। নতুন নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করছে ডাকাত দল। এম্বুলেন্স, সিএনজি ব্যবহার করছে ।
২ থেকে ৪ জন করে ছোট ছোট দলে ভাগ করে তারা একত্রে হচ্ছে । একটি ডাকাত দলে ৫০ থেকে ৬০ জন থাকে । তাদের সাথে থাকছে চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি ,রাইফেল বিভিন্ন রকম অস্ত্র ।ঢাকার প্রায় প্রতিটি থানায় দুর্বৃত্তরা ভেঙে দেওয়ার ফলে অনেক থানা আজ পুলিশ শূন্য। ডাকাতেরা সেই সুযোগটি নিচ্ছে ।
ছাত্র ও এলাকাবাসী সকলে সচেতন। সকলে এই ডাকাতদের রূখতে মধ্যরাতেও নেমেছে। কিশোর, মধ্য বয়স্ক এমনকি নারীরাও আজ ডাকাতদের রুখতে সকলের সাথে একত্রিত হয়েছে। ডাকাতদণ ভুলে গেছে এখনকার সাধারণ জনগণ অতটা ভীতু নয়। আমাদের হয়তো ভারি অস্ত্র নাই কিন্তু আমাদের মনোবল আছে। লাঠি, দ্য-বটি, যার কাছে যা আছে তাই নিয়ে রাতে ঢাকার শহরকে রক্ষা করার জন্য রাস্তায় নেমেছে ।
এলাকাবাসী দলবদ্ধ হয়ে তাদের সম্পদ ও ঘরবাড়ি রক্ষা করার জন্য পাহারা দিচ্ছে।তার সাথে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ।রাত যত গভীর হয় তত ডাকাতের আতঙ্ক বৃদ্ধি পায়। এলাকাবাসী ও সচেতন হয়ে গেছে । রাতের বেলা ছাত্ররা রাস্তায় ক্রিকেট খেলছে ,কেউ টিভি দেখছে, রাত জাগার জন্য রাতে পিকনিকের আয়োজন করছে ।এখনকার ছাত্ররা ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে ডাকাতের গতিবিধি লক্ষ্য রাখছে ।
অনেক ডাকাত দলকে ধরে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিচ্ছে।উত্তরা, মোহাম্মদপুর ,ই সি বি চত্বর, মিরপুর এরকম বিভিন্ন জায়গায় একই সময় ডাকাত দল আক্রমণ করে ।এলাকাবাসীয তখন সতর্ক হয়ে যায় এবং ডাকাতকে ধরার চেষ্টা করে। এর মাঝে সেনাবাহিনী চলে আসেন । সেনাবাহিনীর সাথে গোলাগুলি হয় । ডাকাত দলের কিছু সদস্যদের ধরতে সক্ষম হয় ।
এক একটি রাত মনে হচ্ছে যেন এক একটি বছর। এই ডাকাত আতঙ্ক কবে যে দূর হবে তা জানি না ।যখনই মাইকে ঘোষণা করা হয়,” এলাকাবাসী সকলেই সতর্ক হোন এলাকায় ডাকাত পরেছে ,যার যা কিছু আছে তা নিয়ে সতর্ক থাকুন, এবং দলবদ্ধভাবে থাকুন “।তবে একটা বিষয় ভেবে পাই না এখনকার যে ডাকাত গুলো ধরা পরছে তাদের সকলেরই বয়স ১৫ থেকে ২০ বছরের ভিতরে, এর থেকে কম বয়সের ছেলেরা আছে ।এত অল্প বয়সে পড়াশোনা বাদ দিয়ে ডাকাতি করতে এসেছে। কারা এদের দিয়ে ডাকাতি করাচ্ছে ।তাদেরকে আদৌ কি ধরা যাবে ?
আশা করি আমাদের বর্তমান ছাত্র সমাজ . সাধারন জনগন মিলে ডাকাতসহ সকল অপশক্তির অবসান ঘটাতে পারবে ।আমাদের পুলিশ ভাইয়েরা আবার তাদের কর্মস্থলে সসম্মানে যুক্ত হবেন এবং দেশ রক্ষার কাজে অংশগ্রহণ করবেন। শুধু সেনাবাহিনীর পক্ষে একা এত বড় একটি শহর সম্মেলনে সত্যিই কঠিন ।সেনাবাহিনীর সদস্যগন থানা সামলাছে, সেনা ভবন গুলো সামলাচ্ছে তার সাথে সাথে জনগণের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
সাধারণ জনগণ, পুলিশ সহ সকল বাহিনী একত্রিত হলে আশা করি এই ভয়ংকর রাতগুলো আমাদের আর দেখতে হবে না ।ঢাকা শহরের এলাকাবাসী আবার রাতের বেলা শান্তিতে ঘুমাতে পারবে। নির্ঘুমরাত আর কাটাতে হবে না । সকলে ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন ।আজ এখানে বিদায় নিচ্ছি শুভরাত্রি ।
দিদি আমার মনে হয় বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি তার ট্যাকাল দিতে অবশ্যই পুলিশ ভাইদের খুব দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে এবং তাদের কাজগুলো পুনরায় সঠিক নিয়মের মধ্য দিয়ে করার সুযোগ করে দিতে হবে।
যেহেতু পুলিশ বাহিনী বাংলাদেশ কে সবসময় সাপোর্ট দিয়ে থাকে বিভিন্ন এলাকায় যে পরিমাণ ডাকাতিও চুরির ঘটনা ঘটছে তার একটি কারণ হলো আমাদের বড় একটি বাহিনী কাজ থেকে বিরত নেওয়ার কারণে। দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সমসাময়িক প্রেক্ষাপট নিয়ে খুব সুন্দর একটি আর্টিকেল আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।