Better Life With Steem | The Diary game | 17th November |

in Incredible Indialast year
Untitled design (4).png
Made by Canva
শুরুতেই সবাইকে জানাচ্ছি শীতের উষ্ণ শুভেচ্ছা ।আশা করি সকলে ভালো আছেন এবং আমিও ভাল আছি।আমি আজ গতকালের দিনলিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি ।
সকাল

শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠা খুব কঠিন কাজ আমার কাছে । ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু করার কিছু নেই উঠতে হবে । মেয়ের পরীক্ষা এবং আমারও পরীক্ষা আছে আজ । যেহেতু আমাদের দুজনারি পরীক্ষা তাই উঠতেই হলো ।উঠতে অবশ্য একটু দেরি হয়ে গেল। সকাল ৬:৩০ মিনিটে উঠে বারান্দায় গিয়ে দেখি বৃষ্টির পানিতে থৈ থৈ করছে ।

IMG20231117070918.jpg

এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিম্নচাপ চলছে ।বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি ছিল ।সারা রাত বৃষ্টি হল এবং এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। তাই বারান্দাতে এখনো পানি জমে আছে। ফ্রেশ হয়ে নিলাম আর নাস্তা বানিয়ে নিলাম ।ভাবতেছি কিভাবে বের হব? কারন বরিশাল শহরে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা ঘাটে পানি জমে যায় এবং রিক্সা পাওয়া যায় না।

আজকে সকাল ১০ টা মেয়ের পরীক্ষা আবার বাহিরে বৃষ্টি পরছে। তবুও পরীক্ষা তো দিতেই হবে। ছাতা নিয়ে আমরা বের হয়ে গেলাম পরীক্ষার উদ্দেশ্যে কিন্তু বৃষ্টির সাথে সাথে হালকা বাতাস বইছে ।অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরে একটি রিকশা পেলাম রিক্সায় উঠলাম কিন্তু তাও আমরা ভিজে গেলাম। কোন রকম আমরা কোচিং সেন্টারে গিয়ে পৌঁছলাম ।

কোচিং সেন্টারে সামনেও প্রচুর পানি । আজকের পরীক্ষাতে অনেক কম পরীক্ষার্থী এসেছে । আজকে তার রসায়ন পরীক্ষা ছিল ।মামনি পরীক্ষা দিচ্ছে আমি ওয়েটিং রুমে একটু বই পড়তেছিলাম কিন্তু কিভাবে আর বই পড়া যায় । ভাবিদের সব গল্প শুরু হয়ে যাচ্ছে কি রান্না করেছো? বাচ্চারা কি পড়াশোনা করছে ? পরীক্ষার প্রস্তুতি কেমন? এক ভাবী তার বিবাহ বার্ষিকীর গল্প শুরু করে দিল। গতকাল তাদের বিবাহ বার্ষিকী ছিল ।তার বর কি কি উপহার দিল ? সেগুলো নিয়ে সে অনেক গল্প ।

এক ভাবী বল তার বর তাকে অনেক কাজে সাহায্য করে । এভাবে বরদের নিয়ে অনেক আলোচনা -সমালোচনা হল । আর আমার বই পড়া হলো না ।বইটি আবার ব্যাগের ভিতর রেখে দিলাম। দেখতে দেখতে দেড় ঘন্টা পার হয়ে গেল ।কিন্তু কিভাবে বাসায় আসব বৃষ্টি আরো বেড়ে গেল মনে হচ্ছে । কোচিং সেন্টারের সামনে সাগর তৈরি হয়ে গেছে । রিক্সা পাচ্ছিনা মা - মেয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করলাম । বৃষ্টিও কমছে না ও রিক্সাও আসছে না ।কিছুদূর আমরা হেটে সামনে আগালাম ,এতটা বৃষ্টি ও বাতাস আমাদের ছাতা উড়ে নিয়ে যাচ্ছে । বহু কষ্টে একটি রিকশা পেলাম উঠলাম কিন্তু আমরা মনে হচ্ছে যেন, গোসল করে উঠলাম এতটা ভিজে গেছিলাম।

দুপুর

বাসায় আসতে আসতে আমাদের ১২:২০ বেজে গেল । ঝটপট আমি গোসল করে নিলাম এবং প্রার্থনা সেরে নিলাম ।আজকে আর রান্না করেনি ।যেহেতু গতকালকে বেশি রান্না করেছিলাম। সেই খাবার গরম করে মা-মেয়ে খেয়ে নিলাম ।আমার পরীক্ষা ছিল দুপুর ২ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ।আমি ১:৩০ মিনিটে পরীক্ষা দিতে বের হব ।এই সময়টায় বৃষ্টি যেন আর বেড়ে গেল তাও আজকে আমার পরীক্ষা দিতে হবে ।যেহেতু আমার রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল আমিও ছাতা নিয়ে বের হয়ে গেলাম ।

আজকে আমি প্রথম মেয়েকে একা বাসায় রেখে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি। পরীক্ষার টেনশন তারপর মেয়েটা বাসাতে একা ছিলাম সেই টেনশন । অন্যদিনে অবশ্য আর্মি বাবু (আমার স্বমী) থাকেন । আজকে অফিসের কাজে সে তিনি বাহিরে ছিলেন। তাই মেয়েটি আমার বাসাতে একাই ছিল ।কোন রিক্সা পাচ্ছি না অবশেষে একটি সিএনজি পেলাম ।

পৌছে দেখি সবাই আমার মত ভিজে গেছে। পরীক্ষার হলে আমরা প্রবেশ করলাম আমাদের মত সবারই একই অবস্থা ।আবার হলে প্রবেশ করে দেখলাম বিদ্যুৎ নেই ,হল অন্ধকার । এত অন্ধকারে কিভাবেই প্রশ্ন দেখব? কিভাবেই উত্তর লিখব? যেহেতু আমার চোখে সমস্যা আছে ।তো আমার সহপাঠী এসে আমাকে অনেক হেল্প করলো ।ওর আসন ছিল জানালার পাশে আমার ছেলে তার পিছনে ।সে বলল “ঠিক আছে তুমি এখানে আমার আসনে বস আমি তোমার আসনে বসি”। আমি টিচারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ভাইয়ের আসনে বসলাম ।

পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে এসে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না মনে হচ্ছে । অনেক সাহায্য করলো এবং দশ মিনিট বাকি ছিল তখন আমার একটি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন বাকি ছিল । প্রশ্ন ঠিক পড়তে পারছি না ,এত ছোট লেখা তারপরে অন্ধকার । আমার সহপাঠ আমাকে প্রশ্ন পড়তে সাহায্য করল এবং সে তার উত্তরটাও বলে দিল । পরীক্ষার হলের শেষে মুহূর্তে আমাদের এই রকম অবস্থা ছিল।

পরীক্ষার হলে মোবাইল নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু টিচারের কাছে শুরুতে জমা দিয়েছিলাম । জমা দিয়ে আমরা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেছি । যেহেতু পরীক্ষা শেষ তাই মোবাইল নিয়ে একটি ছবি তুলে নিলাম । আমাদের হলের কি অবস্থা ছিল তাই তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম। আমার পরীক্ষার হল থেকে বের হলাম এখন বৃষ্টি থেমে গেল ।এই স্মৃতিটাকি ধরে রাখার জন্য আমরা একটি ছবি তুলে নিলাম ।

IMG20231117165714.jpgIMG20231117165726.jpg

আমার মন পড়ে রইলো বাসায় ! বাসাতে মেয়েটা একা আছে ।তাই আমি আর বেশি সময় ওদের সাথে সময় না দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বৃষ্টির পানিতে ভিজেছি তাই বাসায় এসে আমার প্রচন্ড পায়ে জ্বালা করছিল তারপর আগে গোসল করে পা ভালো করে স্যাভলন থেকে ধুয়ে নিলাম। তারপরও পায়ের জ্বালা কমছেনা , হ্যান্ড সেনিটাইজার দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম ।অবশেষে আমার পায়ের জ্বালা কমে গেল ।

সন্ধা ও রাত

আমি সন্ধ্যাকালীন প্রার্থনা করে নিলাম । আজকের অনেক ঝামেলা গেল তাই ভাবলাম কিছু একটা অর্ডার করি। ফুড পান্ডা থেকে হালকা কিছু নাস্তা অর্ডার করলাম এবং তারা ৩০ মিনিটের ভিতরে আমাদের খাবার নিয়ে আসলেন ।সত্যি অনলাইন ব্যবস্থা অনেক সুন্দর এবং অনেক দ্রুত এই কাজ করে।আজ আমরা মন চাইলে বাসায় বসে যে কোন জিনিস পেতে পারি খুব সহজে ।তাই সতর্কতা এবং বিশ্বস্ততা দরকার ।

IMG20231030200922.jpg

আমি বলব যারা এভাবে অনলাইন সার্ভিস দিয়ে থাকেন তারা অবশ্যই তাদের ব্যবসার সুনামবৃদ্ধি করার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত এবং মানসম্মত খাবার পরিবেশন করে থাকবেন । এই খাবারটা দিয়ে আমরা রাতের খাবার সেরে নিলাম । ভেবেছিলাম পোস্টটি রাত্রে করব কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় গতকাল পোস্টটি শেয়ার করতে পারেনি ।তাই পোস্টটি আজ এখন করছি। আমার গতকালের ডায়েরি খেলা এখানেই শেষ করলাম ।

সকলে ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন সেই কামনা করে আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি ।


◦•●◉✿ শুভ দুপুর✿◉●•◦

Sort:  
 last year 

শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠতে সবারই একটু আলসি লাগে তবে আবার যদি বৃষ্টি হয় তাতে তাহলে তো কথাই নেই মনে হয় যে লেপটা মুড়ো দিয়ে আরো একটু ঘুমাই। আমি একটা জিনিস বুঝি না কেন এই পরীক্ষাগুলো শীতের সময় বেশি হয় বেশিরভাগ বার্ষিক পরীক্ষা হয় এই শীতের সময় যাইহোক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট হোক এই কামনাই করি।
আর আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার একটি দিনের কার্যাবলী আমাদের কাছে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।

 last year 

আপনার জীবনের সুন্দর একটি দিন আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য সর্ব প্রথম আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শীতের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠতে সবার একটু সমস্যা হয়ে যায়। আপনার পোস্টের মাধ্যমে দেখতে পেলাম আপনার এবং আপনার মেয়ের পরীক্ষার জন্য আমরা সকালে উঠতে হয়েছিল। এবং বারান্দায় গিয়ে দেখেন বৃষ্টির পানি পড়ছে। সারারাত বৃষ্টির কারণে বারান্দায় বৃষ্টির পানিও পড়েছে এবং বরিশালে অল্প একটু পানি হলে রিক্সা পেতে অনেক কঠিন এটা অবশ্যই ঠিক বলেছেন শুধু বরিশাল বলে কথা নয় যখন বৃষ্টি আসে তখন রিক্সা বা গাড়ি পেতে অনেক কঠিন হয়ে যায় খুবই সমস্যা হয়ে যায়।

 last year 

সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এভাবে সব সময় পাশে থাকবেন।
আপনার জন্য রইল শুভকামনা ।

খুবই সুন্দর একটি দিন অতিবাহিত করেছেন। আমাদের এই দিকে বৃষ্টি না হলেও বাতাস ভালোই ছিলো। আপনার মেয়ে কেমন পরীক্ষা দিয়েছে...???

 last year 

আপনাদের দোয়ায় আমাদের পরীক্ষা ভালই হয়েছে। আশা করি একটা ভাল ফলাফল পাব।
আপনার জন্য রইল শুভকামনা ।

 last year 

বৃষ্টিতে ঢাকারই যে অবস্থা গেল, বরিশালে এর চেয়ে খারাপ অবস্থা হবে এটাই স্বাভাবিক। প্রায় সময়ই নিউজ চ্যানেলগুলোতে বরিশাল এর রাস্তায় জমে থাকা পানি দেখি।আর এই পানি ও বৃষ্টিতে বাইরে যাওয়া অনেক কঠিন।
কোচিং সেন্টার এর অভিজ্ঞতা আমারও আছে। ওইটা মায়েদের সারাদিন এর আড্ডার জায়গা।ওইখানে কোন মতেই পড়ার কোন পরিবেশ নেই। এরপরও এত কস্ট করে যে পরীক্ষা দিয়েছেন এটাই অনেক।
আপনার সারা দিনের কার্যাবলী এত সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবসময় এই শুভকামনা রইলো আপনার জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।একজন মায়ের কষ্ট শুধু একজন মাই বুঝে থাকে।আমাদের এই পথ চলা যে কতটা কঠিন তা শুধু মায়েরাই বুঝতে পারবে। এভাবে সব সময় পাশে থাকবে ।
আপনার জন্য রইল শুভকামনা ।

Loading...
 last year 

আমি আপনার সম্পূর্ণ লেখাটি পড়লাল। আমার খুবই ভালো লাগল আপনার লেখটা পড়ে। আসলে শীতের সময় ঘুম থেকে সকাল বেলা উঠতে ইচ্ছা করে না আমারও আপনার মতো। তারপর আপনি দেখেন বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে।

তারপর আপনি আপনার মেয়েকে কোচিং সেন্টারে নিয়ে গেছেন। তারপর আপনার আজকে পরীক্ষা আছে। তারপর আপনি পরীক্ষা দিতে গেছেন এবং মোবাইল শিক্ষক এর কাছে জমা দিছেন। তারপর আপনি পরীক্ষা দিছেন।

সব মিলিয়ে আজকে আপনার দিনটা অনেক ভালো কেটেছে। আপনার দিনলিপি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগল। আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় পোস্ট পড়ার জন্য অপেক্ষা থাকলাম এবং আপনি ভালো থাকবেন সবসময় সেই কামনা করি।

 last year 

আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এভাবে সব সময় পাশে থাকবেন।
আপনার জন্য রইল শুভকামনা ।

 last year 

নভেম্বর রেইন এ ভিজলে অসুখ ও ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা বেশি থাকে। দুই দিন আমাদের এখানেও আবহাওয়া এমন ছিল। ভালো লাগলো আপনার লেখাটী পড়ে।

 last year 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 98477.90
ETH 3327.94
USDT 1.00
SBD 3.07