Better Life with Steem|| The Diary Game|| 14 September 2024||সংসার টিকিয়ে রাখার লড়াই||
! |
---|
Hello,
Everyone,
আশা করি সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন ।হঠাৎ নিম্নচাপ হওয়ায় কিছু কিছু অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে ।অনেক অঞ্চলে বড় বড় গাছপালা পড়ে বিদ্যুৎ এবং অনলাইন সেবা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।তবে আমরা বাসা থেকে বের না হলে বুঝতে পারছি না যে কতটা বৃষ্টি হচ্ছে। সারাদিনই টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে যার জন্য অনেক রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে ।
আজকের সকাল |
---|
সারা রাত বৃষ্টি পড়ছিল , এখনো বৃষ্টি পড়ছে। সকাল বেলা কখন যে সূর্যমামা উঠে গেলে তা বুঝতে পারিনি । মেঘলা আবহাওয়া থাকায় বোঝা যাচ্ছে না ঘড়িতে কয়টা বাজছে । যেহেতু শনিবার ছিল ছুটির দিন । খুব অলসতার সকালবেলা পার করলাম ।ঘুম থেকে উঠতে নয়টা বেজে গেল। সকালবেলা ফ্রেশ হয়ে চিনি ছাড়া এক কাপ লেবু চা করে নিলাম ।
চা খেয়ে নিজেকে সতেজ করে নিলাম। এরই মাঝে মেয়ে উঠে গেল ।ওর জন্য সকালের নাস্তা বানিয়ে দিলাম নুডুলস ও চিকেন ফ্রাই। এটি আমারও খুব প্রিয়। আমি সাধারণত খুব কম মশলা দিয়ে নুডুলস পছন্দ করি।
আজকের দুপুর |
---|
সকালবেলার অলসতায় দুপুরের রান্না করতে একটু দেরি হয়ে গেল। এর মাঝে মেয়ের জন্য হেয়ার প্যাক তৈরি করতে হবে আজকে ।সে মাথায় প্যাক দিবে। কিছুদিন থেকে ওর চুল রুক্ষ হয়ে যাচ্ছিল ।যেহেতু এখন বর্ষাকাল ,এ সময় আমাদের চলে না না সমস্যা দেখা দেয় ।এই ”হেয়ার প্যাক” আমার মাও আমাকে তৈরি করে দিতে ছোটবেলা। আজ আমি আমার মেয়েকে দিচ্ছি। আসলে বাঙালি মেয়েদের চুলের যত্ন করা এটা বংশ পরাম্পরায় পেয়ে থাকে। এই প্যাকটি ব্যবহার করলে চুল সিল্কি হবে এবং ড্যামেজ চুলের পুষ্টি ফিরে পাবে।
প্যাক তৈরি |
---|
মেথি ও কালোজিরা গুঁড়ো করে নিলাম, তার সাথে সাধারণ নারিকেল তেল দিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রেখেছিলাম । টক দই , মেহেদি পাতা , অল্প কিছু কাঁচা পেঁয়াজ এবং সেই রাতে মেথি ও কালোজিরা ভেজানো তেল একত্রে বেটে একটি পেস্ট তৈরি করে নিলাম ।
এবার এই প্যাক মাথার প্রতিটা চলে গোড়া থেকে শুরু করে আগা পর্যন্ত দিতে হবে । এভাবে সমস্ত মাথায় ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে এবং এভাবে দুই থেকে তিন ঘন্টা রেখে দিতে হবে । শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিলাম , হয়ে গেল আপনার চুলের ট্রিটমেন্ট।
আজকের বিকেল বেলা |
---|
দুপুরে খাবার খেতে খেতে আমাদের বিকেল ৩ঃ০০ টা বেজে গেল । খাবার শেষে আমি সবকিছু গুছিয়ে নেব এমন সময় হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠল। দরজা খুলে দেখি জাহিদ ভাবি ।আমি জাহিদ ভাবের কথা এর আগেও অনেকবার শেয়ার করেছিলাম।
আমাদের সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ছোটখাটো সমস্যা হয়ে থাকে কিন্তু সেই সমস্যাটা ধরে রাখলে দূরত্বটা বেড়ে যায় ।তখন সংসার টিকিয়ে রাখাটা অনেক কঠিন হয়ে যায় ।
জাহিদ ভাই ১৫ দিন পরে গতকাল রাত দশটার সময় বাসায় এসেছে ।বাসায় আসার পর থেকে ভাবির সাথে কোন কথা বলেনি , এমনকি দুই মাসের মেয়ে শিশুটাকে কোলে নেয়নি। তবে ছেলের সাথে কথা বলেছে। এই ফ্লাট বিক্রি করে দিবে এবং সে ছেলেকে নিয়ে যাবে। মেয়ে ও মাকে ছেড়ে দিবে ।
ভাই আসার পরে থেকে কিছু খায়নি তাই আমাকে বলতে এসেছে “ আমি যেন ভাইকে খাবার খেতে বলি” । ভাবী খাবার খেতে বলার সাহসটুকু পাচ্ছে না, যদি আবার তাকে মারে। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম যাব না, ওদের স্বামী স্ত্রীর ব্যাপার । স্বামী স্ত্রীর ব্যাপারে এভাবে এগিয়ে আসাটা আমার কাছে কেমন একটা অস্বস্তি লাগছিল। তারপরেও গিয়েছি এবং ভাইয়া সাথে কথা বলি।
তিনি আমার সাথে প্রথমে ভালই কথা বললেন যখনই তাকে খেতে বলা হলো তখনই তিনি উত্তেজিত হয়ে গেলেন এবং তার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করলেন। কথার এক পর্যায় তিনি আমার সামনেই তার স্ত্রী গায়ে হাত তুললেন। আমি ভীত এবং লজ্জিত হই ।
সে স্বামী হতে পারে তাই বলে স্ত্রীকে এভাবে গায়ে হাত তুলতে পারেনা । আমি সভাপতির বাসায় চাই । আমরা কথা বলছিলাম এমন সময় ভাবী আবার ফোন দিলেন তাকে নাকি অনেক মারধর করছে । এর আগেও নাকি একই রকম ঘটনা ঘটিয়েছিল তারা ।
সভাপতি ভাইকে ফোন দেওয়া হয়েছে তিনি এবং আরো দুটো ভাইকে নিয়ে আমরা ওদের বাসায় আসি। তাদের দুজনেরই কথা শোনা হলো। জাহিদ ভাইয়ের অভিযোগ , তার মা এসেছিলেন এবং তিনি শুক্রবার যাবার কথা ছিল , তিনি কেন মঙ্গলবার গিয়েছেন। তিনি নাকি কান্না করতে করতে গিয়েছিলেন কিন্তু ভাবীও বলতেছেন “ তিনি কেন কান্না করেছেন”।
ভাই কোন কথাই শুনতে চাচ্ছে না তিনি শুধু ভাবির বিরুদ্ধে অভিযোগ চালাচ্ছে এবং তাকে মানসিক রোগী বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। সভাপতি তাকে অনেক বোঝালেন ,এমনকি কোরআন ও হাদিসের কথা দিয়েও তাকে অনেক কিছু বোঝানো হলো। এটাও বলা হলো যদি শাশুড়ির সাথে বউ কোন অন্যায় করে থাকে তবে শাশুড়ির কাছে বউ ক্ষমা চেয়ে নেবে। ওদেরকে ছেড়ে ১৫ দিন কিভাবে সে দূরে থাকতে পারে। ধরে নিলাম . ভাবীর সমস্যা আছে আী বলে ওদের ছেড়ে এভাবে লুকিয়ে থাকা তার উচিৎ হয়নি।
অনেক কথার পরে এবারও জাহিদ ভাই আগের মতই সভাপতির কাছে ক্ষমা চাইলে এবং এক সপ্তাহের সময় নিলেন।তিনি সবকিছু মানিয়ে নেওয়ার জন্য এবং ভাবিকে বলেছেন, তার শাশুড়ি মাকে আবার বাসায় নিয়ে আসকেন এবং তার কাছে ক্ষমা চাইবেন।
ভাবির একটা সমস্যা আছে, সেটা হল তিনি অনেক সহজ সরল কিন্তু তার শাশুড়ি এত সুন্দর অভিনয় করতে পারে তা আমাদের জানা ছিল না । আজকে ভাবী তার ছেলে বউ না হয়ে যদি তার মেয়ে হত তবে কি পারতো মেয়েকে মার খেতে দেখতে।
আজ বলতে হচ্ছে , আমরা নারীরা নারীর শত্রু। আরেকটা কথা মনে পড়ছে স্ত্রী কখনোই পুরুষের আপন হয় না ।যদি আপনি হত তবে তার কষ্টতে স্বামীও কষ্ট পেতো। সব সময় টাকা-পয়সা, ধন সম্পত্তিতে সুখ থাকে না। স্ত্রীর সাথে দুই মিনিট মিষ্টি করে কথা বলে দেখুন না পৃথিবীর সমস্ত সুখ আপনাদের দুজনা । জানিনা ওদের সম্পর্ক হয়তোবা এভাবে কত দিন সভাপতি ভাই বা ভাবীরা টিকিয়ে রাখতে পারবে। আসলে মন থেকে যদি একবার উঠে যায় সেই সম্পর্কটা যতই জোড়া লাগুক না কেন আগের মত হয় না।
যদি সম্পর্কে ভালোবাসা থাকে হাজার অভাবেও সম্পর্কে টিকে থাকে আর যদি সম্পর্ক কোন ভালোবাসার বন্ধন না থাকে শত চেষ্টা করল সে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায় না ।আমার মত ভাঙা সম্পর্ক টিকিয়ে না রাখাই ভালো। প্রতিদিন মার খাবার থেকে একবারে চলে যাওয়াই ভালো । আজ তেমন কোন ছবি তুলতে পারিনি।
আজকের পোস্ট অনেক বড় হয়ে গেল তাই এখানেই শেষ করছি। সকল স্বামী -স্ত্রীর ভালোবাসার বন্ধন অটুট থাকুক । শুভ রাত্রি
প্রথমে জানাই আপনার শেয়ার করা চায়ের ছবিটি দেখে লোভনীয় লাগছে। যদিও আমি একেবারেই চা প্রেমী নই, তবে মাঝেমধ্যে এক কাপ চা খেয়ে থাকি। আপনার তৈরি চা এতোটাই রিফ্রেশিং লাগছে যে, এক চুমুক খেতে ইচ্ছে করছে।
বর্ষাকালে চুলের অবস্থা সত্যিই অনেকটা খারাপ হয়ে যায়। তবে আপনার এই হেয়ার প্যাকটা পড়ার ফলে বেশ উপকার হলো বলতে পারি। বাকি রইল সংসার জীবনের কথা, যে ঘটনা আপনি উল্লেখ করেছেন এমন ঘটনা আমাদের আশেপাশে প্রায়শই ঘটছে। কিন্তু আপনার মতন করে অনেকেই তার সমাধান করতে এগিয়ে আসে না।
কারণ দিন শেষে আমরা সকলেই শুধু মাত্র নিজেদের গণ্ডিতে থাকতে পছন্দ করি। অন্যের ঝামেলায় নিজেরা এগিয়ে যেতে চাই না। একথাও আপনি ঠিক বলেছেন যে, বাইরে থেকে চেষ্টা করেও কোনো সম্পর্ককে খুব বেশিদিন টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়, যদি কিনা দুটি ব্যক্তির মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকে।
যাইহোক সারাদিনের গল্পের পাশাপাশি এমন একটি ঘটনা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আপনার মত আমিও প্রার্থনা করি যাতে তাদের মধ্যে সম্পর্ক আবার পূর্বের মতো হয়ে যায়।ভালো থাকবেন।
চা।
এটা বর্তমান একটা ট্রেন্ডিং বিষয়, চায়ের কাপ সকালবেলা অনেকের অভ্যস্ত। চা ছাড়া কারো দিন শুরু হয় না এমন মানুষও অনেক পাওয়া যায়।
সকালবেলা টেলিভিশনে চায়ের আড্ডা প্রোগ্রামটাও দারুন চলে।
আপনার চায়ের ছবিটি দেখে খুব ভালো লাগছে আশা করছি এটা খেতেও অনেক মজাদার। স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, বৃষ্টির দিনগুলোতে সবকিছু একটু এলোমেলো ভাব থাকে। সুন্দর এমন কিছু উপহার দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
তোমার লেখা কি করে বুঝতে পারলাম আপনার দিনটা অনেক সুন্দর কেটেছি। তবে একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় সেটা হচ্ছে সব সময় আমাদের মন মানসিকতা ভালো নিয়ে চলতে হবে।আপনার সুন্দর লেখাটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।