ক্রমান্বয়ে একাকীত্ব মানুষকে গ্রাস করছে
Source |
Hello,
Everyone,
টাকা ছাড়া দুনিয়া অচল হয়ে যায় তা সঠিক ।তবে সংসারে যদি টাকার অভাব থাকে তা দুজনে পরিশ্রম , চেষ্টা ও তাদের ভালোবাসা দিয়ে টাকার অভাব মিটিয়ে নিতে পারে । কিন্তু সংসারে যদি ভালোবাসার অভাব থাকে সেই সংসার টিকিয়ে রাখা যায় না।
আমরা যদি পেছনের ফেলে আসা দিনগুলোর কথা একবার ভেবে দেখি, সেখানে আমাদের দাদা-দাদির অনেক সন্তান ছিল । কারো ৮-১০ জন, কারো হয়তো ১২ জন অথবা তার থেকেও বেশিও ছিল । টাকার অভাবে অনেককে পড়াশোনা করাতে পারেনি। তারপরও তাদের মনে একটা সুখ ছিল । একে অন্যের প্রতি মধুর মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ ছিল ।
আমাদের এই আধুনিক সমাজে হয়তো অনেকের টাকার অভাব নেই , তাদের সন্তানও কম এবং সন্তানকে অনেক বড় বড় ডিগ্রী নিতে সাহায্য করেছেন । হয়তো সন্তানের পিছনে অনেক অর্থ ব্যয় করেছে। তারপরও সেই পরিবার কি সম্পূর্ণ সুখী হতে পারছেনা । অনেকেই ভালো নেই বা তাদের সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছেনা।
আমরা ছোটবেলা ভাবতাম, বাবা কখন ছুটি পাবে, কখন মামা বাড়িতে যাবে। আবার মামা বাড়ি থেকে আমাদের বেড়াতে আসার জন্য বলতেন। কবে ঈদের ছুটি আসবে বা কবে পূজার ছুটি আসবে এবং কবে মামা বাড়িতে যাব। সে একটা অন্যরকম আনন্দ ছিল। বর্তমান সময়ে পূজার ছুটি হোক বা ঈদের ছুটি হোক এখন আর কোথাও যেতে অতটা ভালো লাগেনা ।কারণ মামা বাড়িতে সেই আগের মত আনন্দটা এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না ।আপনজনের কাছে যাব, কিছু সময় থাকবো ,সেই যে একটা আন্তরিকতা তা দিন দিন ফিকে হয়ে যাচ্ছে ।
বর্তমান সময়ে সুখ পাখিটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে । সুখের সন্ধানে মানুষ ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে ।যারা গরিব বা দিন আনে দিন খাচ্ছে , তাদের হয়তো অনেক টাকা নেই ,পোশাক নেই ,তিনবেলা ভালো করে খেতে পারেন। তাদের টাকার অভাবে সুখ নেই।
আবার অনেক ধনী ব্যক্তি, যাদের অনেক টাকা আছে। তারপরেও তাদের মন ভালো নেই ,তাদের সুখ নেই। তারা সব সময় টাকার পিছনে ঘুরতে ঘুরতে পরিবারকে সময় দিতে পারছে না ।এমনকি সেই টাকা কোথায় রাখবে, কোথায় বিনিয়োগ করলে আরো টাকা বৃদ্ধি পাবে সেই চিন্তায় রাত্রে ঘুম হচ্ছে না। বর্তমান সময়ে ধনী-গরীব কেউ সুখে নেই । সবাই যেন দিন দিন একাকীত্বে ভুগছে। মানুষিক দুচিন্তা বেড়েই যাচ্ছে ।
দিন দিন লোভ-লালসার জন্য দুর্নীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে ।তবুও মানুষের মন থেকে মায়া, মমতা, দায়িত্ব-কর্তব্য এবং ভ্রাতৃত্ববোধ সমস্ত কিছু বিলীন হয়ে যাচ্ছে ।এখন সকলে একা থাকতে বেশি ভালোবাসে। মোবাইল নামক এই ডিভাইসটির মাধ্যমে মানুষ নিজেকে আরও একা করে নিয়েছে। এমনকি একই ছাদের নিচে থাকা মানুষগুলোর সাথেও ততটা সম্পর্ক নেই যতটা তার হাতের ডিভাইসটির সাথে সম্পর্ক রয়েছে।
আমি ভেবেছিলাম যে পরিবারে অর্থ সম্পদ বেশি থাকে সেই পরিবারের মনে হয় অনেক সুখ থাকে । আসলে আমার এই ধারণাটা একদমই ভুল প্রমাণিত হল। গরিবের হয়তো টাকা-পয়সা নেই সেজন্য তাদের অনেক কষ্ট কিন্তু যদি দুজনের প্রতি ভালোবাসা থাকে তখন একজন অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়ার কথা সহজে ভাবেননা।
বর্তমান সমাজে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করার থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটনার চিন্তা মানুষ বেশি করছে। মানুষ সবসময় নিজের সুখটাকে বেশি দেখছে । মানুষ কারো প্রতি একটুকু সহানুভূতিটা দেখাতেও রাজি হচ্ছে না। অনেক টাকা আছে কিন্তু সুখ পাখিটা নেই ।
Source |
আমরা সব সময় স্বামীর দ্বারা স্ত্রী নির্যাতিত হয় সেটা দেখেছি কিন্তু বর্তমানে সমাজে যে একটি পরিবারে স্ত্রী দ্বারা স্বামীও যে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয় । স্বামী-স্ত্রী দুজনে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং দুজনেই ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে। কর্মক্ষেত্রে হয়তো তারা দুজন ভালো কর্মকর্তা কিন্তু পরিবার পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা দুজনেই ব্যার্থ ।
প্রতিনিয়ত স্বামী মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরছে ।তার বাবা-মা, ভাই-বোনের সাথে সম্পর্ক ভেঙে দিতে বাধ্য হয়েছে । ছোটখাটো বিষয় নিয়ে স্ত্রীর বিশাল নাটক করছে । এই একাকীত্ব তাকে দিন দিন মানষিক ভাবে অসুস্থ করে তোলছে ।
Source |
এগুলো তার সন্তানদের উপরে কেমন প্রভাব ফেলবে তা আমরা সকলেই বুঝতে পারছি ।মানুষ একা একা কতদিন বেঁচে থাকতে পারে ।সারা বিশ্বে এই একাকিত্বের রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে । মানুষ যত শিক্ষিত হচ্ছে তত একাকীত্ব বাড়ছে। এই মানসিক রোগগুলো সেই সোনালী দিনগুলো কেড়ে নিচ্ছে । এর পরিণতি খুবই ভবন হতে পারে তাই প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া উচিত এবং এ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত ।
দিদি সত্যি কথা বলতে আমি এই কথাগুলো অনেক বার আমার বিভিন্ন আর্টিকেলে লিখছি যে এখন এই সমাজে শুধু স্ত্রীরাই নির্যাতিত নয় তার পাশাপাশি অনেক স্বামীরাও নির্যাতিত। তবে আপনি আজকে ভিন্ন রূপ রেখায় একই কথা প্রমাণ করলেন যে একাকীত্ব কারো জীবনেই সুফল ভয়ে আসে না।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি আর্টিকেল আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য ভালো থাকবেন।
একাকীত্ব ভয়ানক একটা দুঃসময়।
বর্তমান বিশ্বে একাকিত্ব রোগটা প্রচুর পরিমাণ সংক্রমিত হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে পরিবারের কাছে সবাই বিশেষ একটা দিনে শুধু মেসেজ পাঠায়, তাছাড়া কোনভাবে যোগাযোগ রাখে না। এ কারণে তারা সুসাইড নিয়ে আত্মহত্যা কে বেছে নেয়।