তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প @muktaseo

একটি শিশু হলো সৃস্টিকর্তার সেরা উপহার ।সকল দম্পতির পক্ষে মা-বাবা ডাক শোনার সুযোগ হয় না ।তাদের সারাজীবন একটি সন্তানের অভাবে থেকে যায় । পরিবার ও সমাজের কাছে নানা রকম কথা শুনতে হয়। একটি সন্তানের যে কতটা গুরত্বপূর্ন তাদের জীবনে। শুধু সন্তানহীন বাবা-মা বুঝে।আবার অনেকে না চাইতেও অনেক সন্তানের বাবা –মা হয়ে যান । আবার কারো সন্তান হয় প্রতিবন্ধী ।তাই আমি করি একটি সুস্থ সন্তানের বাবা-মা হতে পারা ভাগ্যের বিষয় ।আবার কারো সন্তান বড় হয়ে একজন রূপান্তরিত নারী হয়ে যায়। আমি আজ এমন একজন রূপান্তরিত নারী ” নিপার কথা বলব ।

pexels

আমাদের পাড়ায় একদম্পতির কোল আলো করে একটি ছেলে শিশুর জন্ম হয় ১৫ দিন আগে ।সেই সংবাদ পেয়ে ৪জন হিজড়া এসেছে ।হিজড়া ৪ জন হল :নিপা ,বর্না মায়া,সাথী।তারা ছোট শিশুকে দোয়া করবে এবং তারা কিছু টাকা দাবি করেন । টাকা দেয়া নিয়ে প্রথমে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিলো ।পরে তারা টাকা পেয়ে খুশী হয়ে গান করল ও নাচ করল ।তখন আমি নিপার সাথে কথা বলতে বলতে কিছু প্রশ্ন করলাম ।প্রশ্নগুলো নিম্নরূপ :

✅ নিপা প্রথম কবে বুঝতে পারে সে অন্যদের মত নয়?

pexels

ছেলে পরিচয় জন্ম হয়েছিল । নাম ছিল নাহিদ । তিন ভাই বোনের মধ্যে নাহিদ ছিলো দ্বিতীয় ।সব সাভাবিক ছিলো ।যখন তার বয়স ৯-১০ বছর তখন থেকে তার ছেলে বন্ধুদের সাথে চলতে ভালো লাগতো না ।তার আপুর সাজার জিনিস দিয়ে সাজতে ভালো লাগতো ।আপুও মজা করে ওড়না দিযে পড়িয়ে দিও ।কিন্তু যখন তার বয়স ১২-১৩ বছর হয় তখন থেকে তার আর ছেলেদের পোশাক ভালোলাগে না ।মেয়েদের কাজ,মেয়েদের পোশাক ও মেয়েদের সাথে খেলা করতে ভালো লাগে ।তখন থেকে নিজেকে ছেলে না মেয়ে ভাবতে শুরু করে ।

✅ পরিবারের কেমন অনুভূতি ছিলো?

souecr
তার এই আচরণ দেখে বাবা-মা প্রথমেই ডাক্তার দেয়িয়েছেন তাতে কেন পরিবর্তন না আসায় হুজুরের কাছ থেকে কত তাবিজ-কবজ দিয়েছে ।একসময় বাড়ির বাহিরে যাওয়া বন্ধ করে দেয় ।আশে-পাশের লোক তাকে হিজড়া বলে ডাকতো ।বাবা-মাকেও সমাজের কাছে অপমানিত হতে হতো ।এমন কি বাবা- বিরক্তি হয়ে তাকে মারত ।

✅ বাড়ি ছেড়েছে কবে ?

pexels
তখন নাহিদের বাড়িতে খুব একা লাগছিলো।সে নিজেকে নতুন ভাবে চিন্তা করছে ।তার কথা গুলো কার কাছে বলবে,কে বুঝবে তাকে ? তখন ভাবে, এই পরিবার তার জন্য নয় ।সে নতুন আশ্রয় খুজতে থাকে ।তখন তার দেখা হয় একজন তৃতীয়-লিঙ্গের এক ব্যক্তির সাথে ।নাহিদ তার সাথে চলে যায় ।তারা নাহিদের নতুন নাম রাখে নিপা ।নাহিদের বাড়ির লোক কখনও তাকে খুজতেও আসেনি ।

✅ ৪ বর্তমান জীবন তার কেমন কাটছে ?

সে হেসে বললো, আমাদের আর জীবন । নানা কথা শুনতে হয় ।তাদের দেখলে অনেকে আবার হাসে ।তারপর বলেন আমি আমার সঙ্গের মানুষের সাথে আছি ।আমার জন্মদাতা বাবা-মা আমাকে ছেড়ে দিল ।

pexels

✅ সে সুযোগ পেলে কি করতে চায়?

এই প্রশ্নের উত্তরে বললো , : ”আমি একটি কর্ম স্থান চাই ।সুযোগ পেলে এই কাজ ছেড়ে দিবো ।”

নিপার উত্তর গুলো শুনে বুঝলাম , এই একবিংশ শতাদ্বীতে এসেও কিছু লোক মনে করেন একজন
ট্রান্সজেন্ডার হওয়া পাপ ।এমন কি কোন কোন সমাজে তাদের বাবা-মাকে একঘরে করে রাখে ।
তারাও সৃস্টিকর্তার সৃস্টি ।তাদেরও স্বাধীভাবে বাঁচার অধিকার আছে ।তারাও সুযোগ পেলে ডাক্তার ,সাংবাদিক ,টিচার , ইউপি চেয়ারম্যান হতে পারে ।

ভারত ,বাংলাদেশসহ
এমন অনেক দেশে আজ ট্রান্সজেন্ডার নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ।
বিশ্বের প্রায় সকল দেশ ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য শিক্ষা ও কর্মসংস্থান এর সুযোগ করে দিয়েছেন ।

ট্রান্সজেন্ডার বলে আবহেলার চোখে নয়

বন্ধুর চে্াখে দেখবো সবাই

---

---

Thank You So Much For Reading My Blog 📖