The diary game|| Better life with steem || একটি ব্যস্ততম দিন||
একটি ব্যস্ততম দিন |
---|
Hello,
Everyone,
আশা করি সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ নিয়ে ভালোই আছি। ২৫শে জুন অনেক ব্যস্ততার সাথে দিনটি কাটিয়ে ছিলাম । আপনাদের সাথে তা শেয়ার করছি।
গতকাল রাতে অফিসের কাগজ খোঁজার সময় আমার পাসপোর্টটি আর্মি বাবুর হাতে পরে। পাসপোর্ট খুলে দেখলেণ ২৬ জুন ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদ আছে ।আমাদের হাতে মাত্র ২ দিন সময় আছে । আমার ইদানিং কিছুই মনে থাকছে না । মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে যেন স্মরণ শক্তি কমে যাচ্ছে। আমি ভেবেছিলাম জুলাই মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত মেয়াদ আছে। কিন্তু না, তিনি দেখলেন এটি মেয়াদ আছে ২৬-০৬-২০২৪ পর্যন্ত।
রাতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে আজ সকালে আমাদের পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। আজ খুব সকালে উঠতে হলো। সকাল পাঁচটায় উঠলাম। উঠে প্রতিদিনের মতো আজও বারান্দায় গেলাম এবং রজনীগন্ধা গাছের দিকে কিছু সময় তাকিয়ে ছিলাম। গাছটি কবে বড় হবে? আসলে কি এই গাছটি থেকে ফুল আসবে ? এই গাছটিতে কবে ফুল আসবে ?
দেরি না করে ঝটপট ফ্রেশ হয়ে সংসারের কাজগুলো সেরে নিলাম ।সকালেই দুপুরের রান্নাটা সেরে নিলাম ।যেহেতু আজকে আমার পাসপোর্ট অফিসে বেশি সময় থাকতে হতে পারে । বাসায় এসে রান্নার সময় পাবো না। এই ভেবে আমি রান্নাটা করে নিলাম। সমস্ত কাজ সেরে আমরা সকাল ৯ টার দিকে বের হলাম।
পাসপোর্ট অফিস ছিল আগারগাঁও তাই আমাকে পল্লবী থেকে মেট্রো রেলে উঠতে হবে। সত্যি মেট্রো রেলে ভ্রমনটা আমাদের জন্য অনেক সময় বাঁচিয়েছে। আমরা সকলেই জানি, ঢাকার প্রধান সমস্যা হল যানজট ।১০মিনিটের পথ গাড়িতে যেতে হলে এক থেকে দুই ঘন্টা সময় লেগে যাবে। যেহেতু সকলে সবাই অফিসে যাচ্ছে , স্কুল /কলেজে যাবার সময় তাই এই সময়টিতে আরো যানজট বেশি থাকে ।
কিছু টাকা বেশি গেলেও আমার কাছে মেট্রোরেল ভ্রমনটা অনেক ভালো। যেহেতু আমরা সকাল ৯ টায় বের হয়েছিলাম এবং পল্লবী স্টেশনে এখনও তেমন লোকের সমাগম ছিলনা ।আমাদের মেট্রোরেলের প্রবেশ টিকিট সংগ্রহ করতে বেশি সমস্যা হয়নি ।আমরা সিরিয়াল ছাড়াই টিকিট সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম।
মজার বিষয় হল, টিকিট কাউন্টারে তেমন লোক ছিল না ভেবেছি মেট্রোতে কম যাত্রী থাকবে কিন্তু আমার ভাবনা সম্পূর্ণটাই উল্টো হয়ে গেল ।অফিস টাইম তাই মেট্রোরেলে অনেক লোক ছিল ।আমরা কোন বসার স্থান পাইনি। পল্লবী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আমাদের পুরোটা সময় দাঁড়িয়ে যেতে হলো ।তবে পল্লবী থেকে আগারগাঁও পাঁচ থেকে ছয়টি স্টেশন হবে তাই আমাদের বেশি সময় লাগেনি।
১৫ থেকে ২০ মিনিটের ভিতরে আমরা আগারগাঁও এসে পৌঁছেছি । যেখানে আসতে আমাদের দু'ঘণ্টার মতো সময় লাগতো। মেট্রোরেল থেকে নামার পথে ছোট্ট একটি দুর্ঘটনা ঘটল। আমি মেট্রো থেকে নেমে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে একটি ছবি তুলার জন্য মোবাইলটি বের করলাম। এমন সময় পিছন থেকে একজন বয়স্ক চাচার সাথে ধাক্কা লেগে আমার হাত থেকে মোবাইলটি পড়ে গেল ।
একটুর জন্য মোবাইলটি প্ল্যাটফর্ম থেকে পরে যায়নি । আমার মোবাইলটা এমনিতে ভাঙ্গা তারপরে যদি আবার সেটাও পরে যেত তাহলে আমি কিভাবে স্টিমিট এর জন্য ছবি তুলতাম। আবার মনে মনে ভাবছিলাম যে ,হ্যাঁ পরে গেলেই ভালো হতো তবে নতুন ফোন পাওয়া যেত ।
তাড়াতাড়ি ফোনটি তুলে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে চলে আসি । অফিসে এতটা ভিড় ছিল বলার মতো না ।অবশ্য আর্মি বাবু আগেই সকল তথ্য নিয়ে গেয়েছিলেন। প্রয়োজণীয় কাগজপত্র আমরা সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি । এখন অনলাইন মাধ্যম অনেকটা সহজ করে দিয়েছে ।
ফর্ম তুলে আনুষঙ্গিক কাজগুলো করতে ৩০ মিনিট সময় লেগেছে। ফর্ম জমা দেওয়ার স্থানে লম্বা লাইন ছিল। তা দেখে আমি মনে মনে ভাবছি, আজ বাসায় ফিরতে বিকেল হয়ে যাবে। এখানে সিরিয়াল দেওয়ার ব্যবস্থা খুব সুন্দর ছিল। আপনার পাসপোর্ট আপনি নিজেই করতে পারবেন ।কোন দালালের মাধ্যমে করতে হবে না।
আপনাকে নিয়ম মাফিক যেতে হবে তার জন্য একটু সময় লাগবে । অফিসের কর্মকর্তাগন এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে, কারো সাথে অতিরিক্ত কথা বলার মত তাদের কোন সময় থাকে না। কিন্তু আমার তো আর ধৈর্য ধরছিল না। কি করা যায়? একটু একটু করে মাথায় বুদ্ধি খাটাচ্ছি।
মেঘ না চাইতেই হঠাৎ বৃস্টি সামনের একটি আপুর কাগজপত্রে কিছু ত্রুটি ছিল তাই তাকে আবার সেগুলো সংশোধন করে নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। তার সাথে আমি দাঁড়িয়ে গল্প করছিলাম। গল্প করতে করতে আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল।
পিছনের আন্টি ভেবে ছিলেন যে, আমরা দুই বান্ধবী । আমিও সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছি । আমি বললাম ,আন্টি আপনার কাগজটা জমা দিন তারপরে আমি জমা দিব। এই কথা বলে, আমি প্রথমে আন্টির কাগজ জমা দিলাম এবং আন্টিকে সামনে পাঠালাম ।তারপর আমার কাগজগুলো জমা দিলাম।
১ম ধাপের কাজ সম্পূর্ণ হল। এবার আসলো ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেবার পালা ।সেখানেও লইন দিতে হবে। ৩০-৩৫ মিনিট বসে থাকতে হল আমাদের । বসে থাকাটা এতটাই বিরক্তিকর কিছুই করার থাকেনা। এখানে বসে থাকতেই হলো। সমস্ত কাগজপত্র গুলো দেখলেন এবং আমার ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি নিলেন।
আমাকে একটি রশিদ দিলেন । আমার কাজগুলো করতে কোন লোক ধরতে হয়নি এবং বাড়তি কোন টাকা দিতেও হয়নি। নিজের পাসপোর্ট নিজেই করতে পারবেন তবে একটু সময় দিতে হবে । আমি কবে পাসপোর্টটি পাবো তা রশিদে লেখা আছে ।
পাসপোর্ট অফিসের কাজ সম্পন্ন করার পর চিন্তা মুক্ত হয়ে দুজনে দু কাপ চা নিলাম ।আজ নতুন একটি চা পান করলাম, কালিজিরা চা । কিছু ফুলের দোকান দেখতে পেলাম। মনে মনে ভাবছিলাম, একটি ফুল আর্মি বাবু কিনে দিলেই তো পারে। কিন্তু বেচারা দিল না। মনের কষ্ট মনে রেখে আবার বাসায় চলে আসলাম।
আমাদের বেশি সময় লাগেনি । যেখানে পাসপোর্ট করার জন্য সারাদিন লেগে যেত সেখানে আমি খুব কম সময়ে কাজগুলো সম্পন্ন করতে পেরেছি। আগে কাজগুলো করতে সারাদিন লাগতো আর সেই কাজ আমার ২ ঘন্টার ভিতর হয়ে গেল।
আসার সময় আমরা গাড়িতে এসেছিলাম কারন আমাদের মিরপুর ১০ এ কিছু কাজ ছিল ।কাজগুলো সেরে বাসায় আসতে আসতে দুপুর দুটো বেজে গেল ।ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম এবং কিছু সময় বিশ্রাম নিলাম । এভাবে কেটে গেল আমার ২৫শে জুন তারিখের ব্যাস্ততম একটি দিন ।আশা রাখি আপনাদের দিনগুলো খুব ভালো ভাবে কেটেযাচ্ছে।আজ এখানে বিদায় নিচ্ছি ।সবার জন্য শুভকামনা রইল ।
Device | Description |
---|---|
Smartphone | oppo |
Smartphone Model | oppo A83(2018) |
Photographer | @muktaseo |
আজকে আপনি অনেক ব্যস্তময় একটি দিন অতিবাহিত করছেন সেগুলো আপনার লেখা পড়েই বুঝতে পেরেছি। বাংলাদেশের মেট্রো রেল আশাতেই অনেক মানুষের অনেক সময় বেঁচে যাচ্ছে জ্যামে আর ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয় না।
আপনি একদম ঠিক কাজ করেছেন খুব সকাল সকাল পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পৌঁছেছেন তা না হলে আপনার কাজগুলো সময়মতো করতে পারতেন না।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার একটি দিনের কার্যক্রম বেশ সুন্দর করে আমাদের কিছু উপস্থাপনা করার জন্য।
আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে পোস্টেটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
দিদি ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার পোস্টটি সংশোধন করেছি এবং পরবর্তী পোস্ট করার সময় আরো সতর্ক থাকব।
আপনার সারাদিনে কাজকর্ম শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি সারাদিন খুব ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছেন। আসলে সব রকম অফিশিয়াল কাজেই দেরি হয়। কিন্তু আপনার সেদিন বেশি সময় লাগেনি ।খুব তাড়াতাড়ি কাজটা সেরে ফেলেছিলেন। আপনার পোস্টে ফুলের ছবিগুলো অসাধারণ লাগছে। সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন, সরকারি অফিশিয়াল কাজে কিছুটা সময় বেশি লেগে যায় ।সে তুলনায় আমি দ্রুতই কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছিলাম ।আমি ফুল খুবই ভালোবাসি তাই যেখানে যাই কোথাও ফুল দেখতে পেলে তার ছবি তোলার চেষ্টা করি। এই প্লাটফর্মে বন্ধুদের জন্য আরও বেশি তুলতে হয় । সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
একটি সময় আমি বাংলাদেশে পাসপোর্ট এর জন্য অনেক সমস্যার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। তবে সব কাগজ গুলো যদি ঠিক থাকে তাহলে এই সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় না। এবং আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার সমস্যার সমাধান করতে পেরেছেন এটা জানতে পেরে ভালো লাগলো।
এতো ব্যস্ততার মাঝেও সুন্দর করে আপনার একটি দিনের কার্যক্রম আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
TEAM 7
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator09.Thank you mam @sduttaskitchen.
আপনি কি কারনে পাসপোর্ট অফিসের কাজ এত দ্রুত বা অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে পেরেছেন আমার জানা নেই। হয়তোবা পূর্ব থেকেই আপনার কিছু তথ্য জানা ছিল যে কারণে অল্প সময়ের মধ্যে করতে পেরেছেন।
কিন্তু বাস্তবতা এটাই আমাদের দেশে পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশে দালালে ভরা। যে কারণে একজন না বোঝা মানুষকে সেখানে গেলে অনেক বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হয়। এদিক-ওদিক করতে গিয়েই অর্ধেকটা সময় শেষ হয়ে যায়।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি দিনলিপি আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য। আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় লেখা পরিদর্শনের অপেক্ষায় রইলাম। তবে কমিউনিটিতে আপনার সক্রিয়তা নেই বললেই চলে, সক্রিয়তা বৃদ্ধি করার অনুরোধ করছি।
বেশি বেশি বাদাম খান তাহলে আপনার স্মরণ শক্তি অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। যাইহোক মজা করলাম। এ বিষয়গুলো খুব সিরিয়াসলি গ্রহণ করতে হয়। কেননা যদি একবার সময় পেরিয়ে যায় তাহলে আবার সব নতুন করে করতে গেলে, অনেক বেশি সময় লাগে। সকাল বেলা মেট্রোরেলে মানুষ থাকবে না এটা চিন্তা করা একেবারেই বোকামি। কেননা অনেকেই নিজেদের সময় বাঁচানোর জন্য একটু টাকা বেশি ব্যয় করে হলেও, একটু শান্তিতে অফিসে যাওয়ার চেষ্টা করে।
ওখানে গিয়ে আবার একটা মহিলার সাথে আপনার বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। যেটা খুবই ভালো। তবে আর্মি বাবু আপনাকে ফুল কিনে দেয়নি এটা হচ্ছে আপনার মনের কষ্ট। আশা করি আপনার মনের কষ্ট খুব তাড়াতাড়ি দূর হয়ে যাবে। ধন্যবাদ আপনার ব্যস্তময় দিনের খানিকটা অংশ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।