The Diary game||Reflecting on Memories|| 11th June-2024
![]() |
---|
সকাল সকাল ঘুম থেকে ঊঠে শুয়ে শুয়ে মোবাইল ব্রাউজ করছিলাম। একা একা বাসায় খুব ভালো একটা ঘুম হচ্ছে না কয়েকদিন ধরে। তবে এটা ভাবতেই শান্তি লাগছে আর দুদিন পর আবারো গ্রামে যাচ্ছি ৯ দিনের ছুটিতে।
এবার নিজ বাড়িতে ৫ দিন আর শশুর বাড়িতে ৩ দিন থাকার সিডিউল ঠিক করেছি। চাকুরীজীবনে এই প্রথম কোন ঈদে এত লম্বা সময় ছুটি পাচ্ছি। তবে এই ৯ দিনের ছুটির কত ঘন্টা আমার রাস্তায় জ্যামে কাটাতে হবে সেটাই এখন ভাববার বিষয়।
ঈদের ছুটিতে একটা বিয়ের প্রোগ্রাম আছে, তাই আমি সকাল সকাল ব্যাগ গুছিয়ে রাখলাম। ব্যাগ গুছাতে গিয়ে আলমারিতে আমার বাবার ব্যবহার করা ঘড়িটাতে চোখ পড়লো। বাবা চলে যাবার বেশ কয়েকবছর কেটে গিয়েছে। একটা সময় মনে হতো বাবা ছাড়া জীবন অচল, কিন্তু সেই আমি দিব্যি জীবন কাটিয়ে দিচ্ছি। আগে যেখানে সকাল সন্ধ্যা বাবার সাথে ফোনে কথা হতো, একদিন কথা না বললে দম বন্ধ হয়ে আসতো সেখানে কত বছর কেটে গেলো, বাবার ঘড়ি দেখে বাবার কথা বেশ মনে পড়লো।
![]() |
---|
এই ঘড়িটা বাবা মারা যাবার পর আমি স্মৃতি হিসেবে আমার কাছে রেখে দিয়েছি, এখন দিব্যি সচল আছে। তবে এটা পড়া হয় না, বিশেষ করে মায়ের সামনে তো নাই, পড়লেই তার পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে, আর মন খারাপ করে। জানিনা বাবা পরপারে কেমন আছেন। বাবার জন্যে শুধু দোয়া করা ছাড়া এখন আর কিছুই করার নাই।
রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা
সকাল সকাল মনের কোনে মেঘ জমলেও বাহিরের আকাশ ছিল পরিস্কার। বাইক নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। অফিসে প্রতিনিয়ত কাজের চাপ বাড়ছে। চীন থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্ডার এসেছে এবার, করোনার পর এক্সপোর্ট খাত আবারো চাংগা হচ্ছে, আর সেই সাথে বাড়ছে আমাদের কাজের চাপ।
অফিস ছুটির আগে বেশ কিছু রিপোর্ট সাবমিট করতে হবে,তার উপর টানা ছুটি নেয়ায় আমাকে সব গুলো কাজ গুছিয়ে নিতে হবে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে।
সারাদিন প্রচন্ড কর্মব্যস্ততার মধ্য দিয়ে কাটিয়ে রাতের বেলা বাসায় ফিরে রান্না বসালাম। ভাত চুলায় বসিয়ে ভাবলাম একটা উপন্যাস পড়া শুরু করি। একা সময় কাটছিলনা, তাই প্রিয় কবি ও লেখক হাসান আজিজুল হক এর লেখা প্রথম উপন্যাস শামুক নিয়ে বসে পড়লাম। তবে পুরোটা শেষ করতে পারি নি। লেখক এই উপন্যাস টি মাত্র ১৮ বছর বয়সে লিখেছিলেন। আর উপন্যাসের শুরুটা ছিল তেলাপোকা পাখি নয়, এই লাইন দিয়ে। কয়েক পৃষ্ঠা পড়ে মনে পড়লো চুলোয় ভাত দেয়া আছে, তারাতারি ভাত নামিয়ে মাড় গলিয়ে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম।
![]() |
---|
খাবার খেয়ে মনে পড়লো বাংলাদেশ ফুটবল দলের আজকে লেবাননের সাথে বিশ্বকাপ বাছাই এর ম্যাচ। জলদি জার্সি পড়ে খেলা দেখতে বসে পড়লাম, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে হেরে গেলাম।
![]() |
---|
খেলায় হার-জিত থাকবে, বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রতি ভালোবাসার টানে আবারো পরের ম্যাচ দেখতে বসে যাবো। বলতে পারেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ও ফুটবল দলের পাগলা ফ্যান আমি।
![]() |
---|
রাতে ঘুমাতে যাবার আগে বারান্দার গ্রিন লিফ গাছটা রুমে নিয়ে এলাম। গ্রামের বাড়িতে গেলে পানির কষ্টে এই গাছ গুলো হাহাকার করবে। তাই ভাবছি রুমে ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে যাবো, বাকিটা আল্লাহ ভরসা।
তো এই ছিল আমার কাটানো দিনটি। কেমন লাগলো অবশ্যই মতামত জানাবেন। ভালো থাকবেন সবাই।
বাবা-মা পৃথিবীতে না থাকলে তার স্মৃতি গুলো যখন সামনে আসে তখনই বুকটা ফেটে যায়। আপনার বাবার স্মৃতি একটি ঘড়ি আপনার কাছে এখনো বিদ্যমান রয়েছে। আসলেই তাই বাবা-মা পৃথিবীতে না থাকলে আমাদের করণীয় হলো তাদের জন্য প্রাণ খুলে দোয়া করা তাছাড়া তো আমাদের আর কোন করনীয় নাই।
সকল বাপ মা জান্নাতের শ্রেষ্ঠ মাকামে পৌঁছাক এই দোয়াই করি। ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার একটি দিনের কার্যক্রম আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।
বাবা মা যখন বেচে থাকে তখন অনেকেই তাদের কদর বুঝে না, অনেকেই সেভাবে তাদের পাশে থাকে না নানা অজুহাতে। তবে তারা যখন চলে যায় তখন অনেকেই আসলে বুঝতে পারে কি হারালাম। বাবা মায়ের জন্যে আমাদের সব সময়ই বেশি বেশি দোয়া করতে হবে।
ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ঈদের আনন্দ বইছে চারপাশে। ৯ দিনের বিশাল একটা ছুটি পেয়েছেন যা ঈদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আমিও আমার বাবার স্মৃতি হিসেবে কিছু জিনিস রেখে দিয়েছি। মাঝে মাঝে মনে পড়লে খুব খারাপ লাগে কিন্তু কি আর করার এটাই প্রকৃতির নিয়ম। বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের সব খেলা দেখা হলেও ফুটবল দলের সব খেলা দেখা হয় না।আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম সেই ম্যাচটি হেরে গেছে। হার জিত সব খেলাতেই থাকে। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।ভালো থাকবেন।
বাবা মা থাকতে মনে হয় তাদের ছাড়া আমাদের জীবন বুঝি অচল হয়ে পড়বে কিন্তু তারা না থাকলে জীবন কিন্তু জীবনের মতো বয়ে যায় , তবে চোখের সামনে ভেসে ওঠে শুধু স্মৃতিগুলো। আজ আপনার বাবার ঘড়িটা দেখে তার কথা মনে পড়লো। আশা করি তিনি পরপারে ভালো আছেন।
চাকরিতে ছুটির আগে ও পরে কাজের একটু বেশি চাপ থাকে। আপনার ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে। বেশ কিছুদিন মেয়ে আর গিন্নিকে ছাড়া বাসায় একা রয়েছেন তবে এবার ছুটিতে আপনিও গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। ভালো থাকবেন।