বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা : ১ম ওয়ানডে ম্যাচ

লাহিরু কুমারার বলে কাভার দিয়ে সজোরে চার মারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর শুন্যে ব্যাট তুলে উদযাপন। শতক উদযাপনে দেখা গেল নেতৃত্ব দেওয়ার গরিমা। এরপর অপেক্ষা মাত্র অল্প কিছু রানের। আর মাত্র ৩৮ রান করতে পারলেই মেতে উঠা যাবে জয়ের উৎসবে। নিজের ব্যক্তিগত ৩য় শতক উদযাপন সীমাবদ্ধ তাই ঐটুকুতেই। ৩৮ ওভার শেষে তখন ২১৮ রান। মাত্র ৯২ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর মুশফিকুর রহিম এর সাথে ১২৬ রানের অবিচ্ছন্ন জুটি গড়েন। একই সাথে শ্রীলংকার বিপক্ষে টানা তিনটি ৫০+ রানের ইনিংস খেলে তা নিয়ে গেছে সেঞ্চুরি পর্যন্ত। মহীশ তিকশানাকে চার মেরে জয়সূচক রানও আসে তারই ব্যাট থেকে। এমন একটা দিনের তার প্রতি সবার সুদৃষ্টি থাকাটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু তাই বলে মুশফিকের ইনিংস ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই। তার করা ৮৪ বলে অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংস বাংলাদেশের জয়ে ব্যাপক অবদান রেখেছে। পূর্ণ মেয়াদে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর এটি তার অধীনে প্রথম ওডিআই। কাজেই শুরুটা করলেন নিজের দায়িত্ব নিয়ে দলকে জেতানোর মাধ্যমে। বাংলাদেশের সকল ওয়ানডে অধিনায়কদের মধ্যে তার এই ১২২ রানের ইনিংস এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

মুশফিকুর রহিম এবং নাজমুল হোসেন শান্তর এই পারফরম্যান্স অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের ভুল ত্রুটি গুলোকে ঢেকে দিয়েছে। এই দিনে বাংলাদেশের ওপেনার লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, তাওহীদ হৃদয় তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারেননি। লিটন কুমার দাস ম্যাচের শুরুতে একদম প্রথম বলে আউট হয়ে যান। সৌম্য সরকার ও তাওহীদ হৃদয় করেন মাত্র ৩ রান। অবশ্য ব্যতিক্রম ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি ৩৭ রান করে আউট হলেও তার এই ছোট্ট ইনিংসের মহাত্ম্য ছিল অনেক। চতুর্থ উইকেট পার্টনারশিপে নাজমুল হোসেন শান্তর সাথে ৬৯ রানের জুটি বাংলাদেশ দলকে স্থিরতা এনে দেয়। যার উপর ভর করে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম করেন ম্যাচ উইনিং পার্টনারশিপ।

তবে ম্যাচ শুরুর আগে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রায় সব উইকেট ছিল একই রকম সবুজ। পিচ ছিল বেশ শক্ত যার ফলে খুব ভালো প্রাণ হওয়ার কথা ছিল এই ম্যাচে। কিন্তু এমন ব্যাটিং সহায়ক পিচে খেলেও শ্রীলঙ্কা ২৫৫ রানের বেশি করতে পারেনি। টসে জিতে শ্রীলঙ্কা প্রথমে ব্যাটিং নেয় এবং প্রথম দিকে দুই ওপেনার স্বচ্ছন্দে খেলে যাচ্ছিলেন। কখনো কাভার দিয়ে আবার কখনো বোলারের মাথার উপর দিয়ে বাউন্ডারির হাকাচ্ছিলেন তারা। তবে তানজিম হাসান এই ছন্দের পতন ঘটান। প্রথম ওভারে কোন উইকেট না পেলেও দ্বিতীয় তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে একটি করে উইকেট পান। আর এতে করেই শ্রীলঙ্কার রানের পাহাড় আর হয়ে উঠে না। তানজিম এর কাছে এই বিশাল ধাক্কা খেয়ে পরবর্তীতে শ্রীলংকান ব্যাটসম্যানরা আর আগের ছন্দ খুঁজে পাননি। তানজিম হাসানের পর শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন তিনটি করে উইকেট তুলে নেন।