Thursday 02 March 2023

📸ফটো তোলার তারিখ-Wednesday 09 March 2022
👍সময়- রাত এগারোটার পর

👍স্থান- ভেন্ডাবাড়ী অষ্টপ্রহরের , ভোগ এর খাবার স্থান

👍বিষয়-কলা গাছের পটে'য় সারিবদ্ধভাবে মাটিতে বসে খাওয়ার ফটোগ্রাফ।

👍উদ্দেশ্য -হাজার হাজার বছর সংরক্ষণ করা।

বসন্তের বাসন্তী বেড়াতে এসেছে
আমার পাড়ার গাঁয়।
প্রথম পক্ষ,ই ছড়িয়ে দিতেছে
পশ্চিমা ধূপালি বায়।।

সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ছবি
উপহার দিতে এনেছি হেথা।
কলার গাছের পটে'য় খাওয়া
সাথে আরো কিছু কথা।।

সারি সারি লোক বসে খাবার খায়
হয়ে দুটি "কসি"।
ফটো তুলে ধন্য হয়েছি
পেয়েছি পাওনার চেয়ে বেশি।।

হ্যাঁ বন্ধুরা,

দেখতে দেখতে বসন্তকালের একটি পক্ষ এবছরের মতো আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছে। শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পক্ষের আনাগোনা। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে পশ্চিমা হাওয়ার মর্মর শব্দ। প্রকৃতিতে লেগে গেছে চৈত্রের আগমনী বার্তা। হাওয়ায় হাওয়ায় অনুভূত হচ্ছে চৈতালি আগুনের ছটা।

এলোমেলো গরম বাতাসে গাছের পাতাগুলো আরো দলবেঁধে মাটিতে নেমে আসতে দেখা যাচ্ছে। আধমরা পাতার এলোমেলো দল এদিক সেদিক আপন মনে ছুটাছুটি করছে। বসন্তের কোকিল গুলো আরো তৎপর হওয়ার কথা থাকলেও আস্তে আস্তে ঝিমিয়ে যাচ্ছে।

ক্ষনিকের বসন্তের আগমন নিমিষেই চৈত্রের কোলে লাফানো শুরু করছে। কোন কোন পাতা ঝরা গাছে রংবেরঙের কঁচি পাতায় ভরিয়ে উঠতে শুরু করেছে।

গৃহস্থ বাড়ির সুচতুর গৃহিণীরা রান্না শেষে ইতিমধ্যেই চুলায় পানি দেওয়া সহ ঢেকে রাখতে শুরু করেছে। ফাগুনের আগুন সর্ব কালে আমাদেরকে ধ্বংসের লীলা দেখিয়ে আসিতেছে।

এক সময় ছিল এক বাড়ি থেকে আগুনের উৎপত্তি হয়ে সারা গ্রাম পুড়ে ছারখার করে দিত। ইদানিং কালে মানুষের সচেতনতা ও আগুনের বিরুদ্ধে কুটকৌশল শিখে, লেলিহান শিখা গুলোকে কিছুটা হলেও অবদমিত করে রাখতে পারছে।

সরকার কর্তৃক প্রশিক্ষিত দমকল বাহিনী গঠন করে সহসা আগুনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বন্ধুরা

লেখার শুরুতেই কি সব লেখে আপনাদেরকে স্বাগত জানার সময়টুকু পেরিয়ে এতদূর এসে পৌঁছেয়েছি ।

কেমন আছেন আপনারা?
ভালো থাকুন সবাই ।মহান আল্লাহর কাছে এতোটুকু কামনা করা ছাড়া আর কি বা আমার আছে। আমিন
আলহামদুলিল্লাহ
আমিও আমার জন্য আপনাদের কাছে বিনয়ের সাথে দোয়া কামনা করছি। মহান আল্লাহ যেন আপনাদের মত আমাকেও ভালো থাকার তৌফিক দান করেন। আমিন।

আমার আজকের ফটো কনটেস্ট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী পোস্ট টুকূ আমি আমার মনের মাধুরী দিয়ে আপনাদেরকে উপহার দিতে চেষ্টা করছি।

Incredible India এর এডমিন মেম @sduttaskitchen কর্তৃক আনিত মাসব্যাপী প্রতিযোগিতা- Incredible India monthly contest March#1|Share your all-time favorite photographs captured by you এর প্রতি সম্মান জানাইয়া অংশগ্রহণের জন্য আমি এই পোস্ট লিখছি।
সেই সাথে আশা করব, আসুন সবাই মিলে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে, উৎসব মুখর পরিবেশে ফলাফলের অপেক্ষায় যথাসাধ্য প্রহর গুনতে ব্যয় করি।

Invite my favourite Three Friends- @steem-for-future @pulook @avinashgoyal

প্রিয় সাথী বন্ধুরা আমার

এখন আমি আপনাদেরকে আমার সর্বকালের প্রিয় ফটো উপহার দিতে সেকালের জনপ্রিয় একটি খাবার মাধ্যমকে বেছে নিয়েছি। যাহা সময়েও স্বল্প ভাবে প্রচলন থাকলেও, আর কয়েকদিন পরে হয়তো একেবারেই দেখা যাবে না।

এ কারণেই এটি আমার কাছে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ফটো হিসাবে বিবেচিত হইতেছে। এমন বিবেচনা, থেকেই আমি আজ সেকালের ছবিগুলো, হাজার হাজার বছর ধরে রাখতে আপনাদেরকে উপহার দিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের চেষ্টা করছি।

কোন একদিন গ্রাম গঞ্জের বড় বড় অনুষ্ঠানে কলার গাছ কেটে তার ঢোলা দিয়ে খাবারের প্লেট তৈরি করা হতো। তাজা তাজা ও মোটা মোটা কলা গাছ কেটে এনে, প্রথমে এক হাত বা ১৮ ইঞ্চি পরিমাণ করে চাকা করে কেটে নেওয়া হতো। তা থেকে শক্ত শক্ত ঢোলা গুলো খুলে নিয়ে, পিছনের অংশ বিশেষ কায়দায় ছেঁচে নেওয়া হতো ।যাতে ঢোলাটি সহজে চ্যাপ্টা হয়ে বসতে পারে।

*কলার এ ঢোলা" গুলো কেটে ও ছেঁচে নেওয়ার পর, এর নাম সাথে সাথেই পাল্টে যেতো। তখন তাকে আর কলা গাছ বা ঢোলা বলা হত না। এমনভাবে তৈরি খাবারের প্লেট বা পাত্রটিকে আমাদের এলাকায় "পটে" বা "পটো" বলে বলা হত। কেহ কেহ এগুলোকে "পটুয়া" বলেও ডাকতো।

বাড়ির আঙ্গিনায় বা উঠানে খড় বা লম্বা লম্বা চট সারি সারি করে বিছিয়ে দেওয়া হতো। প্রতিটি সারিতে দুমুখো হয়ে আগত লোকজন খাবার জন্য বসিয়ে পড়তো। লোকজনের এভাবে সারিবদ্ধ হয়ে বসাকে আমাদের এলাকায় "কসি" বলে ডাকত। অর্থাৎ একই সারিতে বা একই চটে লোকজন দু "কসি" হয়ে খাবার খেতে বসত।

তারপর তাদের সামনে পরিষ্কার "পটে" এক এক করে রেখে দেওয়া হতো। খাবার পরিবেশন কারীরা তাদের সামনে , জগ ও গ্লাসে পানি দিয়া দিত। এতে খাবার দেওয়ার পূর্বেই আগন্তক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা গ্লাস বা জগ থেকে কয়েক ফোঁটা পানি পটে'য় এর মধ্যে ছিটিয়ে দিয়ে ,পরিবেশন খাবারের দিকে লক্ষ্য করতো।

অবস্থা ও অবস্থান ভেদে খাবার পরিবেশন এর বিষয়টি ছিল খুবই সুন্দর ও পরিপাটি। প্রথমে কশির ডান দিক থেকে খাবার দেওয়া শুরু করা হতো। সবার পাত্রে খাবার দেওয়া শেষ হলে তারপরে বিশেষ এক কায়দায় খাবার শুরু করা হতো। যতক্ষণ না সবার পাত্রে খাবার দেওয়া হয়েছে ,ততক্ষণ খাবার সবাই নাড়াচাড়া করলেও কেউ মুখে দিত না।

একসময় সবার পটে'য় খাবার দেওয়া হলে মুরুব্বিদের থেকে উচ্চস্বরে বলা হত "পৌঁছান". আর এই পৌঁছান কথাটি অর্থ ছিল সবাই খাওয়া শুরু করেন। সকল সারির লোকের কাছে পৌঁছান কথাটি পৌছলেই বা শুনতে পেলেই, সবাই স্ব স্ব ধর্মে স্রষ্টার নাম স্মরণ করে ,একসাথে খাওয়া শুরু করতো। এই সমন্বিত খাওয়ার সময় অনেকে ছোট ছোট কথায় একে অপরের সাথে কুশলাদি বিনিময় করতেও দেখা যেত।

এ পর্যায়ে কাহারো কাহারো খাওয়া আগে শেষ হলেও সে চুপটি করে সবার সঙ্গে ওঠার জন্য কসি'তেই বসে থাকতো।

গত 2022 সালের ৯ ই মার্চ বুধবার, আমার গ্রামের হিন্দু পল্লীতে যখন অষ্টপ্রহর বা হরিবাসর নামে যে অনুষ্ঠানটি চলতেছিল ।সেখানে আমি অনুষ্ঠানটি দেখতে গেলে ,আজকের এই দৃশ্যটি আমার চোখে পড়ে।

এদিনের সময়টা ছিল রাত সাড়ে এগারটার মত। আমি অন্যান্য জায়গার ছবি তুলে যখন বাড়ির দিকে আসার চেষ্টা করছিলাম, সে সময় আমাকে একজন এসে বলল দাদা আপনাকে "ভদোবাবু" ওখানে ডাকছে। আমি সেখানে থমকে দাঁড়িয়ে তার সাথে কুশল বিনিময় করে, দোকান থেকে একটি খিলি পান খাওয়ার চেষ্টা করলাম।

এবার আমি যথারীতি তার সাথে হরিবাসরের ভোগের খাওয়ার স্থানে পৌঁছে যাই। পৌঁছানোর পরেই ভদো বাবুর সাথে দেখা হওয়ার আগেই, আমার চোখে পড়লো কলার পটে'তে নারী-পুরুষ ,ছোট বড় ,সবাই মিলে খাওয়ার এই দৃশ্যটি।

মনে মনে ভাবলাম ,এমন দৃশ্যই আমাকে এখানে টেনে এনেছে। কেননা এমন দৃশ্যের ফটো তোলার জন্য আমি অনেক আগেই মনস্থির করে রেখেছিলাম। কিন্তু কোথাও দেখতে পাইনি ।এখানেও যে এভাবে খাওয়া দাওয়া হবে তাহাও আমি জানতে পারিনি বা জানার চেষ্টা করছিলাম না। কেননা আমি জানি আজকাল আর এসব চলে না। এখানে এসে এমন একটি বিরল ফটো এর উৎস পেয়ে যাব, তাহাও আমার ভাবনায় ছিল না।

ছবি তুলব একে তো আমার সে সময়কার কম দামি ওয়ালটন মোবাইল ফোন এবং তার উপর এখানে আলোর স্বল্পতা। সামনে পেয়েছি ছবি তুলতেই হবে ।হাজার হাজার বছরের জন্য ইন্টারনেটের পাতায় সংরক্ষণ করতে হবে ।সবকিছু ভেবে মোবাইলটা অন করে নিলাম। তারপর চতুর্দিকে ঘুরে ফিরে প্রায় ১২-১৪টি ছবি ধারণ করে ফেলি ।সাথে একটি ভিডিও ধারণ করেছিলাম ।যাহা প্রকাশের অযোগ্য বলে ডিলেট করে ফেলা হয়েছে। আজও ১২-১৪টির ছবি থেকে প্রকাশযোগ্য মাত্র তিন'টি ছবি নিয়ে এই পোস্টটি সাজানোর চেষ্টা করছি। বাকি ছবিগুলো প্রকাশের অযোগ্য বলে ,মোবাইল থেকে ডিলিট করে দেওয়া হলো।

বন্ধুরা

এই ছিল আমার আজকের ফটোগ্রাফ কনটেস্ট এর ফটোগ্রাফ ও ফটোগ্রাফি সম্পর্কিত কিছু কথা।সবাই ভাল থাকবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন ।আজকের মত এখানেই ।সাথেই থাকুন।

Writeen & Photography	@mrnazrul
Captured	Handset
Category	Photograph Contest
Location	Bangladesh

Best Regards