ছোট্ট বাড়ির গল্প
![]() |
---|
আমাদের গ্রামে আছে একটা ছোট্ট বাড়ি। আমাদের আর্থিক অবস্থা প্রথম থেকেই ভালো ছিল না। আমি ছোটবেলায় দেখেছি আমাদের গ্রামে ছোট্ট একটা ঝাপের ঘর ছিল। সেখান থেকেই মা-বাবা কষ্ট করে একটা পাকা বাড়ি বানিয়েছে। আমার তো বেশ ভালই লাগে বাড়িটা। ছোট্ট ঘর হলে হবে কি ,মা বোন খুব সুন্দর করে বাড়িটাকে সাজিয়ে রাখে। বাড়ির সামনে আছে খোলা উঠান । গ্রামের যেমন হয় বাড়িঘর। গ্রামের বাড়ি গুলো তো চারদিকে ঘেরা হয় না। চারিদিক খোলামেলা হয়।
বাড়ির অনেকটা উঠান আর মা ওই উঠানগুলো গোবর দিয়ে ন্যাপে প্রতিদিন। আমাদের ঘরের ভিতরটা মেঝে করা। কিন্তু বাইরে বারান্দাটা মেঝে করা নেই। ওটা মাটির তাই মা বারান্দাটাও ন্যাপে। আমার তো এরকম বাড়িঘর দেখতে খুবই ভালো লাগে। আমাদের বাড়ির পিছনটা ফাঁকা মাঠ।
সেই মাঠে কেউ ঝিঙে চাষ করেছে, কেউবা গরুর খাবারের জন্য চাষ করেছে গেমা গাছ। আবার কেউ পাট চাষ করেছে। কিন্তু এখন তো বৃষ্টির অভাব। তাই পাট গাছগুলো বেশি বেড়ে উঠতে পারেনি। আরো অনেক মাঠ আছে কিন্তু অততো যাওয়া সম্ভব না। তাই বাড়ির পিছনে যেটুকু আছে আমি সেইটুকু ঘুরে দেখেছিলাম ।আমার গ্রামে মাঠ দিয়ে ঘুরে দেখতে বেশ ভালোই লাগে ।জমির পাশে যে আল থাকে সে আল দিয়ে হেটে বেড়াতে খুব ভালো লাগে।
আমাদের বাড়ির সামনে রয়েছে আমগাছ ,কাঁঠাল গাছ ,পেয়ারা গাছ, কিছু ফুলের গাছ। বোন শখ করে পাশে লাগিয়েছে কিছু বেগুন গাছ। দেখলাম বেশ ভালই বেগুন হচ্ছে। গাছেও বেশ ভালোই কাঁঠাল হয়েছে। আবার অনেক পেয়ারাও ধরেছে পেয়ারা গাছে। পিছনে রয়েছে কয়েকটা কলাগাছ।
গ্রামে বেশ এ ওর বাড়ির উপর দিয়ে হেঁটে যায় ভালোই লাগে। কেউ কিছু বলে না। আমাদের বাড়ির আশেপাশে বাড়িগুলোতে কয়েকজনের আছে গরু, ছাগল, হাঁস ,মুরগি ইত্যাদি। বাড়ি মহিলারা কেউ বসে থাকে না। সবাই কাজ করে। ওরা গরুর খাবারগুলো নিজে হাতে কাটে। আবার নিজেরাই গরুকে খেতে দেয়। বাড়ির পুরুষ মানুষরা মাঠে কাজ করে। বিকেল বেলায় গরুর দুধ দোয়াতে আসে তখন মহিলারাই সাহায্য করে। বাছুরগুলো ওরাই ধরে রাখে।
আবার কোন বাড়িতে দেখি মহিলারা নিজেই দুধ দুয়াচ্ছে। বাড়ির মহিলারা গোবর ফেলা থেকে শুরু করে সব কাজই করে। গ্রামে যেহেতু কাঠের অভাব নেই ।তাই সবাই কাঠের রান্না করে। পাট লাগালেই পাটকাঠি গুলো জ্বালানির কাজে লাগে ।আমার মা ও কাঠে রান্না করে। মা বলেন কাঠের রান্না করলে রান্নার স্বাদ নাকি খুব ভালো হয়।
আমি যেহেতু ছোট থেকেই মামার বাড়িতে মানুষ ।তাই গ্রামের বাড়িতে থাকা হতো না। দু-তিন দিনের জন্য বেড়াতে যেতাম ।মা-বাবাকে দেখার জন্য আর বোনেদের সাথে সময় কাটাবার জন্য ।আমার গ্রামের বাড়ি বেশ ভালই লাগতো। পড়াশোনা ক্ষতি হবে বলে আমি ওখানে গিয়ে বেশি দিন কাটাতে পারতাম না। আমার শ্বশুরের আদি বাড়ি গ্রামে। কিন্তু আমরা এখন শহরে থাকি। আমার জীবনে গ্রাম শহর দুটোরই ছোয়া রয়েছে।
আজকে এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা। আরো অনেক কথা আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করার আছে। সেগুলো না হয় পরের পোস্টে বলবো।
গ্রাম এবং শহর দুটোরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। গ্রামের মানুষজন খুবই কর্মঠ হয়। গ্রামের গৃহস্থ বাড়ির কাজও অনেক। আমার ছোট বেলা থেকেই শহরে বেড়ে ওঠা। তাই গ্রামে থাকার অভ্যাসটা খুবই কম। তবুও গ্রামের বাড়ি গেলে যে আনন্দটা তো সেটি ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।
আপনার আম্মু ঠিকই বলেন যে, কাঠ দিয়ে রান্না করা খাবারের স্বাদটা অন্যরকম হয়। মাটির চুলার খাবারে রয়েছে আলাদা একটি টেস্ট।
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার পরবর্তী লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
গ্রাম ও শহরের বৈশিষ্ট্য যেমন আলাদা আলাদা। তেমনি কিছু মানুষ আছে তাদের মন মানসিকতা ও আলাদা হয়। আমার মা তো আমার বাড়ি এসে গ্যাসে রান্না খেতেই পারে না। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টটা এত ভালোভাবে পড়ার জন্য।
কি সুন্দর একটি পোস্ট পড়লাম। শুধু পড়লাম নয়, বরং বলা ভালো কি সুন্দর একটি গ্রাম্য ছবি দেখলাম। ফিরে গেলাম ফেলে আসা সেই ছোটোবেলার নিজেদের মাটির বাড়ি, গোয়াল ঘর, বড়ো উঠোন, পূর্ব দিকের তুলসী মঞ্চ, আর সেখানে মাথায় কাপড় দিয়ে মায়ের সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালানোর দিনগুলোতে। চোখটা ঝাপসা হয়ে এলো, কারনটা অব্যক্তই থাক। খুব সুন্দর ভাবে আপনার বাড়ির প্রতিটি আনাচ কানাচের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এমনভাবেই চলতে থাকুক আপনার সাথে আমাদের পরিচিতি। এমন আরও অনেক পোস্ট পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকবেন।
এতো ভালোভাবে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি। এই ভাবেই আমার পাশে থাকবেন।
This post has been upvoted through Steemcurator09
<a href=">https://steemit.com/hive-166405/@suboohi/newcomer-team-curation-guidelines-for-march-2024
আমরা যারা গ্রামে বাস করি তারা অবশ্যই গ্রামীন পরিবেশ গ্রামের বাড়ি ঘর সম্পর্কে অবগত। বিশেষ করে আজকে যখন আপনার পোস্ট পরিদর্শন করছিলাম। তখন মনে হচ্ছিল আমার গ্রাম আমার চোখের সামনে ভাসতে শুরু করেছে। গ্রামের প্রত্যেকটা বাড়িতেই এই ধরনের ঘর বাড়ি উঠুন, গাছপালা রয়েছে। যেমনটা আপনাদের বাড়িতে রয়েছে।
আপনি যেহেতু শহরে বড় হয়েছেন তাই গ্রামে খুব কম যাওয়া হতো। বর্তমান সময়ে আপনি নিজের শ্বশুর বাড়িতে শহরেই রয়েছেন। কিন্তু আপনাকে অনুরোধ করব যখনই সময় পাবেন, গ্রামে কিছুটা সময় ব্যয় করবেন। অন্ততপক্ষে জীবনে শান্তি পাবেন। ধন্যবাদ আপনাদের ছোট বাড়ির গল্প আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আপনি ঠিকই বলেছেন যখন সময় পাবো গ্রামে গিয়ে সময় কাটাবো। নিজের বাড়িতে নিজের মানুষ জনের সাথে থাকলে জীবনে শান্তি পাওয়া যায়।
আমার কাছে তো গ্রামের বাড়ি মানে একটু অন্যরকম শান্তি লাগে।
আপনার নিজের বাবার বাড়ীর ছোট্ট ঘর এবং আশপাশের পরিবেশ দেখতে খুব সুন্দর ছিল।
বাড়ি যেমনি হোক না কেন সবকিছু গুছিয়ে রাখাটাই সব থেকে বড় কথা। আপনার মা এবং বোন সবকিছু সবসময় গুছিয়ে রাখে।
সত্যিই গ্রামে গেলে একদম মন শান্তি হয়ে যায়।
আপনার ছোট বাড়ির গল্প নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বাপের বাড়ি হয়তো ছোট্ট ঘর কিন্তু অনেক শান্তি আছে। বাড়ি যেমন হোক না নিজের বাড়ি বলে কথা। নিজের কাছে স্বর্গ মনে হয়।