শাশুড়ি মায়ের পাগলামি
আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। সুস্থ আছেন ।আজকে আমি একটা নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে ।আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।
আজকে সকাল থেকেই শরীরটা খুব একটা ভালো ছিল না। ভেবেছিলাম হয়তো পোস্ট লিখতেই পারব না। বিকেল বেলায় পড়ানোর শেষে ভাবলাম একটু বাইরে বেরোবো। কিন্তু বিকেল থেকে আকাশে প্রচন্ড মেঘ ছিল। মনে হচ্ছিল বিকেল বেলায় বৃষ্টি হবে। এই সপ্তাহে বর বাড়িতেই আছে। আর সকাল থেকেই শাশুড়ি মায়ের মনটা খারাপ। কারনটা আমরা বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
বিকেল বেলায় শাশুড়ি মাকে জিজ্ঞেস করাতে বলল টিভির রিমোট খারাপ হয়ে গেছে ।তাই সকাল থেকেই টিভিতে সিরিয়াল দেখতে পারছে না। সন্ধ্যাবেলায় দেখছি শ্বশুর মশাই যাচ্ছে টিভি রিমোট কিনতে। আমি বললাম এখান থেকে কিনলে দাম বেশি নেবে। আমি আমার বরকে বললাম। একটা টিভির রিমোট কিনে এনে দিতে। কিন্তু ও একা যেতে চাইছিল না। তখন রাত প্রায় আটটা বেজে গেছে। টোটো ওয়ালা একজনকে নিয়ে যেতে চাই না।আর আসবার সময় টোটো পাওয়া যায় না।তাই আমি আর বর দুজনেই বেরিয়ে পড়লাম রিমোট কেনার জন্য। শাশুড়ি মায়ের খুব টিভি দেখার নেশা।যত বয়স বাড়ছে ততই টিভি দেখার পাগলামি বেড়েই চলেছে। একবেলা ভাত না খেলে ও হবে।কিন্তু টিভি দেখতেই হবে। আমাদের বাড়িতে সকাল সাতটা থেকে শুরু হয় টিভি দেখা।আর রাত বারোটা পর্যন্ত চলে টিভি। মাঝে মাঝে একটু আধটু বন্ধ হয়। আমি টিভি দেখা একদম পছন্দ করি না।
যাইহোক আমি ভাবলাম বাইরে একটু ঘোরা ও হবে । ঘরে প্রচন্ড গরম ।অন্যদিকে হয়তো বৃষ্টি হয়েছে ।তাই বিকেলের আবহাওয়াটা ঠান্ডা ঠান্ডা ছিল। দুজনেই টোটো ধরে গেলাম রিমোটে দোকানে। এইসব কেনা আমাদের অভ্যাস নেই। তাই দোকান খুঁজে পাচ্ছিলাম না ।পাশের দোকানে জিজ্ঞেস করতে আমাদের দোকান দেখিয়ে দিল।
অনেকটাই রাত হয়েছে রাস্তায় তেমন লোকজন নেই। অন্য দিনের তুলনায় আজকে রাস্তা ফাঁকা ছিল। আর আমাদের বাড়ির দিকে রাস্তা টা একটু ফাঁকা থাকে। রাস্তায় শুধু কিছু টোটো যাতায়াত করছিল। মানুষ জন রাস্তায় কম ছিল।
রিমোট কেনা হয়ে গেলে ভাবলাম কিছু খাবো। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ল বেশ কিছু ফুলের দোকান। ফুলের দোকান গুলো তখনো খোলা রয়েছে। ফুল গুলো দেখতে ভীষণ সুন্দর লাগছিল। আমরা দুজনে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তেমন কোন খাবারের দোকান চোখে পড়ছিল না। আসলে বেশ কয়েকদিন হল কিছু দোকান ভেঙ্গে দিয়েছে। তাই খাবারের দোকান গুলো ছিল না।
অনেকটা দূর হেটে আসার পর চোখে পড়লো একটা মোমোর দোকান। সেখান থেকে আমরা এক প্লেট মোমো নিলাম বাড়িতে এসে খাবার জন্য ।আসলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে খেতে আমি অভ্যস্ত নয়। মোমো নিয়ে আবার দুজনে হাঁটতে শুরু করলাম ।
বেশ কিছুটা দূর আসার পর বরের চোখ পড়ল একটা মিষ্টির দোকানের দিকে। মিষ্টির দোকানে গজা বিক্রি হচ্ছিল। ও গজা খেতে চাইলো। তাই সেখান থেকে বাড়ির জন্য গজা কেনা হল।
আসলে কাজের জন্য সব সময় ব্যস্ত থাকে তাই এই সব খাওয়া হয়ে ওঠে না। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় শাশুড়ি মা বলেছিল আলুর চপ খাবো। সামনেই ছিল চপের দোকান ।সেখান থেকে শাশুড়ি মা আর আমার দিদার জন্য সব কিনলাম। তেলেভাজা জিনিস খেতে আমার দিদা ভীষণ পছন্দ করে। ডাক্তার খেতে বারণ করে দিয়েছে। তা ও দিদা শোনে না।
আসার সময় হাঁটতে হাঁটতে এইসব করতে করতেই বাড়ি ফিরেছি। বাড়ি ফিরে আবার ও বলল চলো দিদাকে চপ দিয়ে আসি। দিদা তো চপ পেয়ে খুব খুশি । দিদা বাড়ি থেকে আসবার সময় রাস্তাতে চোখে পড়ল ।একটা সাদা রঙের কাগজ ফুলের গাছ। রাতে সাদা রংটা বেশ ফুটছে। আসলে দিনের বেলায় যাওয়া-আসা করা হয়। কিন্তু সেভাবে চোখে পড়ে না। রাতের অন্ধকার তাই দূর থেকে চোখে পড়ল ।দেখতে বেশ ভালই লাগছিল।
আজকের সন্ধ্যাটা এভাবেই হাঁটতে হাঁটতেই কেটে গেল। শাশুড়ি মায়ের আবদার মেটাতে গিয়ে অনেক হাঁটাহাঁটি করে ফেলেছি। দোকানে শাশুড়ি মায়ের জন্য নতুন টিভি দেখে এসেছি। বাড়িতে এসে মাকে বললাম নতুন টিভি কিনে দেবো তোমাকে।মা তো শুনে ভীষণ খুশি।আজ এখানেই শেষ করছি। আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে । নতুন কোন গল্প নিয়ে আবার হাজির হব আপনাদের মাঝে।
আপনার লেখাপড়া বুঝতে পারলাম যে আপনার শাশুড়ি মায়ের টিভি দেখানো নেশূ অনেক পরিমাণ এত পরিমাণ যে এক বেলা ভাত না খেলেও চলবে কিন্তু টিভি দেখা মিস করা চলবে না বাবারে বাবা।
আমি ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি যে আমাদের বাড়ি কোন টিভি নাই আমার আম্মা টিভি দেখতে একেবারেই পছন্দ করেনা আমার আব্বু মাঝেমধ্য ে টিভি দেখে তাও আবার চায়ের দোকানে গিয়ে।
আপনার শাশুড়ি মায়ের টিভি দেখা নেশাটা গল্পের মধ্য দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলছেন।