মাসির বাড়ি পুজো
আপনারা সকলে কেমন আছেন ?আশা করি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি । আজকে একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
এর আগের পোস্টে শুনেছিলেন মাসির বাড়ি পুজো হবে বলে গঙ্গাস্নান করতে গিয়েছিলাম। রথযাত্রার দিন ছিল মাসির বাড়ি নারায়ণ পূজো। মাসী আগের দিনই ফোন করে বলেছিল ।সকাল সকাল মাসির বাড়ি যাওয়ার জন্য। কিন্তু আমার তো সকালে ঘুম ভাঙ্গে না। তাও তাড়াতাড়ি উঠবার চেষ্টা করেছিলাম। ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে গিয়েছিলাম মাসির বাড়ি। গিয়ে দেখলাম দাদারা প্যান্ডেলের ব্যবস্থা করছে। কারণ রাতে লোকজন খাওয়াবে। প্রত্যেক বছর রথে বৃষ্টি হয়। তাই সবাই ভয় পাচ্ছিলাম।আর বৌদি খুব সুন্দর করে সারা বাড়ি আলপনা দিয়েছে। আমি আলপনা দিতে একদমই পারি না । আমি কোনদিন আলপনা দিয়নি। দিতে ও পারিনা। আমাদের বাড়িতে আমার শাশুড়ি মা আলপনা দেন। আমি চেষ্টা করলে হয়তো পারবো।
ঠাকুর মশাই তাড়াতাড়ি আসবার কথা ছিল। তাই বৌদি আমি দুজনে মিলেই শুরু করে দিলাম পুজোর জোগাড় ।কিন্তু পুজোর জোগাড় শেষ হবার আগেই ঠাকুর মশাই এসে হাজির। ঠাকুর মশাই বলেছিল সকাল দশটায় আসবে। কিন্তু ঠাকুর মশাই সাড়ে নটার মধ্যে এসে হাজির। যাই হোক ঠাকুর মশাইও আমাদের হাতে হাতে পুজোর জোগাড় করে নিয়েছিল। ঠাকুর মশাই টা খুব ভালো ছিল। অন্য ঠাকুর মশাই হলে হয়তো রেগে যেত। যেহেতু সেদিন রথযাত্রা ছিল তাই অনেক জায়গায় পুজো করতে হবে ।তাই ঠাকুর মশাই তাড়াতাড়ি পুজো শেষ করে দিল। পুজোর শেষে দাদা শিন্নি প্রসাদ টা মেখে ফেলল। মেয়েদের নাকি শিন্নি প্রসাদ মাখতে নেই। এটা আমার জানা ছিল না। কারণ আমি শিন্নি মাখতে যাচ্ছিলাম। তখন বৌদি বারন করলো।
এর আগে নারায়ণ পূজার গল্প আপনারা শুনেছেন। কিন্তু মাসির বাড়ি নারায়ণ পূজো দেখলাম একটু অন্যরকম। প্রত্যেক বাড়িতেই ঠাকুর মশাই সাথে করে নারায়ণ শিলা নিয়ে আসে ।কিন্তু মাসির বাড়ি নারায়ণের ছবি পুজো করা হলো। এছাড়া ঠাকুর মশাই সাথে করে নারায়ণ শিলা নিয়ে এসেছিল।আর পাঁচটা পান,সুপারি যা যা লাগে সব কিছুই দিয়েছিল। প্রত্যেক ঠাকুর মশাই পূজো একটু আলাদা আলাদা হয়। পূজা শেষে হোম হবে। আমি এতদিন জেনে এসেছি হোম করতে গেলে বেল পাতা লাগে। কিন্তু এই ঠাকুর মশাই দেখলাম হোম করতে দূর্বা ঘাস ব্যবহার করল।
যাই হোক এটা আমার অজানা ছিল। হোম করতে গিয়ে দূর্বা ঘাস ব্যবহার করে আমার জানা ছিল না। খুব সুন্দর ভাবে পুজো সম্পন্ন হয়েছিল। আমরা প্রত্যেকেই অজ্ঞলি দিয়েছি।মাসি পূজা করতে খুবই ভালোবাসে ।কিন্তু মাসি দের আর্থিক অবস্থা একদমই ভালো নয়। কিন্তু সামর্থ্য মতো পূজার আয়োজন করেছিল। কোন কিছুতেই ত্রুটি রাখেনি। পূজা শেষে প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছিল। শুধু সকাল বেলায় নয় ।রাতের বেলায় আবার খাবার ব্যবস্থাও করেছিল। খিচুড়ি , আলুর দম, চাটনি, মিষ্টি সবকিছুই করে ছিল।
দুপুর থেকে দাদারা রান্নার ব্যবস্থা করছিল। নিজেরাই সবকিছুর জোগাড় করেছিল। পাড়ার অনেক লোককেই নেমন্তন্ন করেছিল ।আমি দুপুরবেলায় প্রসাদ খেয়ে চলে এসেছিলাম ।আবার রাতের বেলায় রথের মেলা দেখার পর গিয়েছিলাম মাসির বাড়ি খেতে। আমি মাসির বাড়ি খিচুড়ি খেয়ে বাড়িতে বরের জন্য আর শ্বশুর মশাইয়ের জন্য নিয়ে এসেছিলাম। আমার শ্বশুর কারো বাড়িতে খেতে যেতে চাই না। পুজোর দিন মাসির বাড়ি বেশ মজা করে কাটিয়েছিলাম। আমি গিয়েছিলাম তাই মাসি ভালোই লেগেছিল।
আজ এখানেই শেষ করছি ।আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে ।আবার নতুন কোনো গল্প নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
আপনি পূজা সম্পর্কে আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর কিছু বর্ণনা দিয়েছেন যেটা আসলে অনেক সুন্দর হয়েছে, এবং আপনার আলপনা আঁকা গুলো সত্যিই অনেক সুন্দর ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর আলপনা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনার মাসির বাড়িতে রথযাত্রার দিন মাসির বাড়ি নারায়ণ পূজোর আয়োজন করা হয়েছে আর আপনি সেই পুজোতে অংশগ্রহণ করতে গিয়েছেন। রথের দিন বৃষ্টি হয় এটা আমাদের এলাকাতেও প্রচলিত আছে।
আপনার মাসির তেমন সামর্থ না থাকলেও অনেক আয়োজনই করেছেন। আসলে মনটাই আসল। রাতের খবর বাড়ির সবার জন্যও নিয়ে এসেছিলেন।