গঙ্গা স্নান
আপনারা সকলে কেমন আছেন ?আশা করি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজকে আমি গঙ্গা স্নানের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
গঙ্গা হল আমাদের বৃহত্তম নদী। গঙ্গার উৎপত্তি হয়েছে গঙ্গোত্রী হিমা বাহের গোমুখ গুহা থেকে। এছাড়াও গঙ্গা নদী বিভিন্ন শহরের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। তেমনই আমাদের কৃষ্ণনগরে নবদ্বীপের উপর দিয়ে গঙ্গা নদী বয়ে গেছে । আমাদের গঙ্গাস্নান করতে গেলে নবদ্বীপে যেতে হয়। মাসির বাড়ি পুজো ছিল । পুজোর জোগাড় করতে হবে ।তাই মাসি গঙ্গা স্নান করতে নিয়ে গিয়েছিল। মাসি,মেসো, আমি ,দুই বৌদি,আর বৌদির ছেলে, মেয়ে মিলে গিয়েছিলাম গঙ্গাস্নান করতে । আমাদের বাড়ি থেকে অনেকটাই যেতে হয় ।আমরা টোটো করে গিয়েছিলাম প্রায় দেড় ঘন্টা সময় লেগেছিল। সবাই মিলে অনেক আনন্দ করে গিয়েছিলাম।
আসলে সকালের দিকে বেরিয়েছিলাম। তখন স্কুলের সময় রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম। তাই আরো যেতে দেরি হয়েছিল। সেদিন সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা মেঘলা ছিল। ঠিকভাবে রোদ ওঠেনি। আমি নদীতে স্নান করতে খুব ভয় পাই। প্রথমে যেতে চাইছিলাম না।কিন্তু আমরা আগে যেখানে গঙ্গা স্নান করতে যেতাম। সেখানে লঞ্চে করে নদী পার হতে হত। মাসি যে নদীতে নিয়ে গিয়েছিল ।সেখানে লঞ্চে করে পার হতে হয়নি। নদীর ঘাট টা ছিল খুব সুন্দর করে বাঁধানো।
নবদ্বীপ হলো শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মস্থান। এছাড়াও আরো অনেক কিছু রয়েছে নবদ্বীপে। সেগুলো অন্য একদিন শেয়ার করব। আমরা নবদ্বীপের পৌঁছানো মাত্রই শুরু হয়ে গেল বৃষ্টি। বৃষ্টি কমার পরে আমরা স্নান করতে নামব ।কিন্তু নদীতে কুমির এসেছে বলে নবদ্বীপে ঘাটে কাউকে নামতে দিচ্ছে না। জলঙ্গী নদী আর গঙ্গা নদী একসাথেই মিলিত হয়েছে। আমরা বাড়ি থেকে মগ নিয়ে গিয়েছিলাম। সেটা করেই সবাই স্নান করে নিলাম। নদীর বেশি লোকজন ছিল না।অল্প কয়েকজন ছিলাম।
তাড়াতাড়ি স্নান করে আবার রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। আমরা যে নদীতে স্নান করতে গিয়েছিলাম সেখানে ছিল বিরাট সব বটগাছ। গাছ গাছের নিচে রাখা ছিল অনেক ধরনের ঠাকুর। যে ঠাকুর গুলো জলে দিতে নেই ।সেগুলো ওইভাবে গাছ তলায় রাখে দিয়েছে।
বাড়ি আসবার সময় আমরা গঙ্গা নদী ব্রিজের উপর থেকেই নদীতে তাকিয়ে দেখছিলাম। নদীর মাঝখানে বেশ ভালোই চড় পড়ে গিয়েছে। সেখানে অনেক মানুষ চাষবাস করছে ।আবার কুকুর , ছাগল, মুরগি চড়ে বেড়াচ্ছে। গঙ্গা নদীটা বেশ চওড়া।
কিছুদূর এগিয়ে এসে আমরা একটা ছোট মিষ্টির দোকানে কিছু খাওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলাম। সবাই মিলে দোকান থেকে কিছু খাওয়া দাওয়া করলাম। দোকানের কোনো খাবার আমার পছন্দ হয়নি।মাসি জোর করলো তাই একটু খেতে হয়েছিল। গরমের মধ্যে দোকানে একটা পাখা পর্যন্ত নেই।নবদ্বীপে লাল দই বিখ্যাত। আমরা দোকানে কচুরি ,ল্যাংচা আর লাল দই খেলাম। আর বাড়ির জন্য নবদ্বীপের লাল দই নিয়ে আসলাম। বাড়ির প্রত্যেকে লাল দই খেতে খুব পছন্দ করে।
বাড়ি আসবার সময় দেখলাম রাস্তার ধারে কাঁঠালের হাট বসেছে। প্রচুর কাঁঠাল সাজিয়ে রাখা আছে। এবছর কাঁঠালের ফলন টা একটু বেশি।
তবে যেতে যেতে অনেক প্রাকৃতিক দৃশ্যই চোখে পড়ে। আমি ছবিগুলি টোটো থেকে তুলেছি। নবদ্বীপে রয়েছে অনেক বড় বড় মন্দির। এবার ঘুরে দেখার সুযোগ হয়ে ওঠেনি।
যাই হোক তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়েছিলাম। নবদ্বীপে আমার একটু ঘোরার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ঘুরতে পারলাম না।মাসি বলল অন্য সময় নিয়ে আসবো। মাসির একটু তাড়া ছিল। বাড়ি এসে পুজোর বাজার করতে যাবে।আজ এই পর্যন্তই থাক আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আবার পরবর্তী কোন গল্প নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
নিজেকে খুব অভাগা মনে হয় কারন এখনও গঙ্গায় স্নান করার সৌভাগ্য হয় নি। খুব ইচ্ছা আছে আমিও একদিন গঙ্গায় স্নান করবো। প্রচলিত আছে গঙ্গায় স্নান করলে নাকি মনের সব মনিলতা, পাপ দুর হয়ে যায়। তাই আমি গঙ্গায় স্নান করে শুদ্ধ হওয়ার বাসনা রাখি। গঙ্গা মাতা তো সব জায়গায় অবস্থান করেন তাই নিজের পুকুরে গঙ্গা মায়ের নাম স্মরণ করেই স্নান করি। ভালো থাকবেন।
কোন ব্যাপার না কোন একদিন গঙ্গায় গিয়ে স্নান করে নিলেই হবে। আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
গঙ্গা নদী আপনাদের পবিত্র একটি নদী। এটিই আমাদের দেশে পদ্মা নামে পরিচিত। গঙ্গা স্নানের মাধ্যমে আত্মাশুদ্ধি হয়। মগ নিয়ে গিয়েছিলেন স্নান করার জন্য। ফেরার পথে অনেক মজার মজার খাবার খেয়েছেন। আর কাঁঠাল দেখে তো মনে হচ্ছে যেন কাঁঠালের রাজ্য। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ, গঙ্গা আমাদের পবিত্র একটা নদী ।তবে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। গঙ্গা স্নান করলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ।আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি গঙ্গা নদী সম্পর্কে গান শুনেছিলাম এছাড়াও শুনেছিলাম এই নদীতে হিন্দু ধর্মের যারা আছে গোসল করলে তাদের নাকি পাপ মুক্ত হয় জানিনা কতটা সত্য।। মাসির সাথে অনেকটা সময় পার করেছে আর হ্যাঁ কাঁঠাল গুলো দেখতে ভালই লাগতেছিল।।
হ্যাঁ, গঙ্গা নদীতে স্নান করলে পাপ মুক্ত হয়। আমার পোস্টটি কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
তীর্থস্থানে গেলে মন ভালো হয়ে যায় । নবদ্বীপ একটি পবিত্র স্থান । আপনাদের গঙ্গা স্নানের সেই সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। কলকাতায় ২বার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল কিন্তু নবদ্বীপ যাওয়ার সুযোগ পাইনি। ঈশ্বরের কাছে প্রাথর্না করি সামনের আমাকে যেন নবদ্বীপ যাওয়ার সুযোগ করে দেয় ।
আমার পোস্টে এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।