শিব ভক্তদের শিব নিবাস যাত্রা
আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করছি ভালো আছেন। সুস্থ আছেন ।আমিও ভালো আছি। আজকে আমি একটা নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে। আশা করছি সকলেরই ভালো লাগবে।
আগামীকাল ছিল শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার। কৃষ্ণনগর বাসীরা মেতে উঠেছিল শিবনিবাস যাত্রায়। কাতারে কাতারে মানুষ ছুটেছে শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য। অনেকে তিন থেকে চার মাসের শিশুদের কাঁধে নিয়ে । আবার অনেকে চলছে কাঁধে বাঁধ নিয়ে মহাদেবের মাথায় জল ঢালতে । ছেলে, মেয়ে ,বয়স্করা প্রত্যেকেই খালি পায়ে হেঁটে চলেছে শিব নিবাসের পথে। এ যেন এক অপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী সারা কৃষ্ণনগর। যত দিন যাচ্ছে ততই শিব নিবাস যাওয়ার জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। দিন দিন ভক্তদের আরো উদ্যোগ বেড়ে যাচ্ছে। এক পাশে রয়েছে বড়মামা ।আর এক পাশে রয়েছে আমার এক মাসি।
শুধু শিব নিবাস বললে ভুল হবে ।শ্রাবণ মাস মহাদেবের মাস আপনারা সকলেই জানেন। শ্রাবণ মাসে প্রত্যেক সোমবার মহাদেবের সকল ভক্তরা কোথাও না কোথাও মহাদেবের মন্দিরে ভক্তদের ভিড় জমে উঠে। কিন্তু আমাদের কৃষ্ণনগরের বেশিরভাগ মানুষজন শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবারে সকলেই শিব নিবাস যায়।
আজ থেকে ১৫ বছর ধরে ।আমার বড় মামা প্রত্যেক বছর কাঁধে বাঁক নিয়ে যাই শিব নিবাসে শিবের মাথায় জল ঢালতে। সকাল বেলায় বাড়ি থেকে স্নান করে। নিরামিষ আতপ চালের ভাত খেয়ে। নতুন বস্ত্রে যায় গঙ্গা স্নান করতে। যাবার সময় বাসে করেই যায়। গঙ্গাস্নান করে আসবার সময় হেঁটে হেঁটে বাড়ি আসে। কাঁধে বাঁক নিয়ে বাঁকের দুই ধারে থাকে গঙ্গাজল ।আমাদের বাড়ি থেকে নবদ্বীপ প্রায় ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার।
বাড়িতে এসে খানিকক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর সন্ধ্যা বেলায় রওনা দেয় শিব নিবাসে উদ্দেশ্যে। শিবনিবাস আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১৯ থেকে ২০ কিলোমিটার। শিব নিবাসে ও কাঁধে বাঁক নিয়ে খালি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে যায় মহাদেবের মাথায় জল ঢালতে।শিব নিবাসে যেতে যেতে ভোর ভোর হয়ে যায়। তখন শিবের মাথায় জল ঢেলে গাড়িতে করে বাড়ি ফিরে আসে।
সমস্ত ভক্তরা এই ভাবেই যাই মহাদেবের মাথায় জল ঢালার জন্য। নবদ্বীপ থেকে শিব নিবাস রাস্তার ধারে ধারে মানুষ বসে থাকে। মহাদেবের ভক্তদের খাবার বিতরণ করার জন্য। কেউ হয়তো জলের বোতল। আবার কেউ লুচি ,মিষ্টি ,বোঁদে, যার যা সামর্থ্য সবকিছুই বিতরণ করে মহাদেবের ভক্তদের। তাই রাস্তায় খাবার কোন অসুবিধা হয় না। কেউ যদি হাঁটতে হাঁটতে হাঁপিয়ে যাই তাদের বিশ্রাম নেবারও জায়গা থাকে।
আবার কেউ যদি হাঁটতে না পারে তারা গাড়িতে করে যায়। মহাদেবের ভক্তরা ছাড়াও অনেকে গাড়িতে করে যায় শিবনিবাসে বেড়াতে। এক একজনের কাঁধে থাকে এক এক রকমের বাঁক। কেউ সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজায় ।আবার কেউ সুন্দর করে পিতলের ঘন্টা দিয়ে সাজায়। কেউ ছুটেছে বাঁকের সাথে ভারতের পতাকা নিয়ে ।আবার কেউ ছুটেছে জয় শ্রী রামের পতাকা নিয়ে।
আবার অনেকেই রাম মন্দির তৈরি করে কাঁধে করে নিয়ে শিব নিবাসের পথে রওনা দিয়েছে। আমাদের পাড়া থেকে যারা গিয়েছিল তারা একটা বিরাট শিবের মূর্তি নিয়ে গিয়েছিল। অনেকেই গাড়িতে গান বাজছে।সেই গানের সাথে নাচতে নাচতে যাচ্ছে মহাদেবের কাছে। এইসব দেখার জন্য রাস্তায় কত ভক্তদের ভিড়। একেক জন যাচ্ছে একেক রকমের স্লোগান দিতে দিতে। আমি রাম মন্দির টি ফেসবুক থেকে স্ক্রিনশট নিয়েছি। এছাড়াও একজন ভদ্রলোক বাঁকের একধারে একটি শিশুকে নিয়েছে ।আর একধারে গঙ্গাজল নিয়ে ছুটে চলেছে শিবনি বাসের দিকে।দৃশ্যটি চোখে পড়লেও আমি ছবি তুলতে পারিনি। তাই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ছবিটি জোগাড় করেছি। সেটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি।
আমার একটাই চাওয়া সমস্ত ভক্তদের অপূর্ণ ইচ্ছাগুলো পূর্ণ হোক। হর হর মহাদেব। আজ এইখানেই শেষ করছি ।আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তী কোন গল্প নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
We support quality posts and good comments Published in any community and any tag.
Curated by : @solaymann
Thank you 🙏