পিসির কাছে থেকে শোনা গল্প

in Incredible India3 months ago

কেমন আছো বন্ধুরা? আশা করি সবাই ভালো আছো। আমি ও ভালো আছি। এই পোস্টটি আমি শ্বশুর বাড়ি থাকাকালী পিসির কাছে থেকে গল্প শুনেছিলাম। সেই গল্পই আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

গ্রামের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে যখন সবাই একত্রিত হয়। কি ভালোই না লাগে। সবার মুখে বিভিন্ন ধরনের গল্প শুনতে বেশ ভালোই লাগে। জেঠুর শ্রাদ্ধ-শান্তির অনুষ্ঠানের দিন আমার পিসি শাশুড়ি এসেছিল।পিসি শাশুড়ি থাকেন কলকাতা। পিসেমশাই অসুস্থ তাই পিসি খুব একটা আস্তে পারে না। পিসির ছেলে মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। তাই পিসি, পিসেমশাই একাই থাকে। পিসি হয়তো বাপের বাড়ি আসলে দিদি এসে থাকে।আর দাদা বাইরে চাকরির সূত্রে থাকে।

পিসি যেদিন আসলো সেই ছিল আমাদের এখানে প্রচন্ড ঝড় ,বৃষ্টি হচ্ছিল। পিসি খুব ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তখন ওই দিককার ভোরের আবহাওয়া বেশ ভালোই ছিল। পিসি একা একাই যাতায়াত করে। এই দিন পিসির বাসে ট্রেনে, আস্তে গিয়ে যে ঘটনা গুলো ঘটেছে সে গুলোই গল্প করছিল।সে গুলোই তোমাদের সাথে শেয়ার করব।

IMG20240520110559.jpg

পিসি ট্রেনে করে আসবার সময় দেখে যে একটা বৃদ্ধা মহিলা ট্রেনে ফুল বিক্রি করছে। পিসি বলল তার বয়স আনুমানিক ৭৫ মতো হবে। পিসি বলল ট্রেনে সাধারণত একটু বয়স্ক লোকজন ভিক্ষে করে। আমি ও ট্রেনে বাসে সাধারণত এইরকমই দেখে থাকি। কিন্তু এই বলে আমি কাউকে ছোট করছিনা। কারণ যারা ভিক্ষে করে তারা সৎপথে টাকা ইনকাম করে। অসৎ পথে তো ইনকাম করে না। পিসির মুখে গল্প টা শুনে আমার ভালো লাগলো তাই তোমাদের সাথে শেয়ার করছি।

IMG20240520110420.jpg

যাইহোক পিসি বৃদ্ধা মহিলাটি কে কাজ করতে দেখে খুব খুশি হয়েছিল। বাড়িতে এসে আমাদের সবাইকে বলছিল। এই বয়সে এসে উনি ফুল বিক্রি করছে। শুনে আমরাও খুব খুশি হলাম। পিসি তো খুশি হয়ে ওনার কাছে থেকে বেশ কিছু ফুল ও কিনে এনেছিল। কিছু রজনীগন্ধা ফুলের মালা আর কিছু গোলাপ ফুল। গোলাপ ফুলটা পিসি খুশি হয়ে নিয়েছিল। ফুল গুলো বেশ ভালোই ছিল। এই বয়সে এসে বৃদ্ধা মহিলাটির চেষ্টা দেখে আমি সত্যি অবাক হয়েছি। আমি উনার প্রতি কৃতজ্ঞতা বোধ করি। কারণ দেশে বা বিদেশে এরকম মানুষ খুবই কম দেখা যায়।

ট্রেন থেকে নেমে আবার বাসে করে আসতে হয়। আমরা যে রাস্তা দিয়ে আসি সেই রাস্তা দিয়ে আসতে হয়। যেহেতু সেদিন ঝড়, বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই পিসির বাড়ি আসতে গিয়ে ঝড়, বৃষ্টির মধ্যে পড়েছিল। রাস্তায় নাকি ঝড়ে বড়ো বড়ো তিনটে গাছ পড়েছিল।যতখন না গাছ সরাবে বাস চলাচল করবে না। পিসি তো চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। পিসি ভাবছিল কিভাবে বাড়ি পৌঁছাবে। কিন্তু খানিকক্ষণ পর দেখতে পেল কৃষ্ণনগর থেকে একটা দাদা আমাদের গ্ৰামের বাড়িতে আসছে। বাইকে করে।

IMG20240520205224.jpg

দাদা ও জেঠুর কাজে আসছিল। তখন পিসি দাদার বাইকে করে বাড়ি ফেরে। বাড়িতে এসে পিসি যখন দুটো ঘটনা বলে। একটা শুনে অবাক হয়েছিলাম।আর একটা শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কারণ দাদা যদি তখন না আসতো। তাহলে পিসির বাড়ি আসতে অনেক দেরি হতো। আবার ভাবছিলাম গাছ গুলো যদি বাসের মাথায় পড়তো ।তাহলে কত মানুষের দুর্ঘটনায় পড়তো। এইভাবেই ঝড় ,বৃষ্টি মাথায় বাইরে বেরোতে নেই। কিন্তু মানুষ কি করবে যদি রাস্তায় বেরোনোর পর ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়।

IMG-20240520-WA0001.jpg

যাইহোক পিসি বাড়িতে এসে ফুলগুলো ঠাকুমাকে দেওয়া মাত্র ঠাকুমা বেশ খুশি হল। আমার জন্য আর কাকুর মেয়ের জন্য গিফট এনেছিল সেগুলো পেয়ে আমরা খুশি হয়েছিলাম। জিনিস দুটো তো আমাদের দুজনেরই খুব পছন্দ। পিসি খুব একটা আসতে না পারলেও আমাদের জন্য জিনিস কিনে পাঠায়।

আজ এই পর্যন্তই থাক। দুটো অভিঞ্জতা ছিল আলাদা আলাদা। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

Sort:  
Loading...
 3 months ago 

যারা সৎ পথে ইনকাম করার চিন্তাভাবনা করে তাদের বয়স যতই হোক না কেন? তারা চেষ্টা করে সৎ পথে চলার জন্য! আপনি যে বৃদ্ধ মহিলার কথা আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন। তার হয়তো বা টাকা ইনকাম করার প্রয়োজন হয়েছে। তাই তিনি চিন্তা করেছেন তিনি ফুল বিক্রি করে টাকা ইনকাম করবেন।

আমাদের ধর্মে একটা কথা আছে যতই কষ্ট হোক না কেন? কখনো যেন অন্যের কাছে হাত পাতা না হয়! অন্তত পক্ষে নিজের পরিশ্রম দিয়ে উপার্জন করার চিন্তাভাবনা করা উচিত। আপনার পিসি আপনাদের জন্য দারুন সব গিফট নিয়ে এসেছে। যেটা সত্যিই অসাধারণ। ধন্যবাদ পিসির সাথে গল্প করার মুহূর্ত আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য, ভালো থাকবেন।

 3 months ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন এখনকার দিনে সৎ মানুষ খুবই কম দেখা যায়। আমি পিসির কাছ থেকে গল্পটা শোনা মাত্রই সত্যিই খুব ভালো লেগেছিল ।তাই আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। পিসি আমাদের জন্য সত্যিই গিফট গুলো সুন্দর এনেছিল। আমার পোস্টটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 3 months ago 

আপনার পিসির কাছ থেকে আপনি যে গল্পটি শুনেছেন বা ঘটনাটি এটা সত্যিই শিক্ষনীয় আমাদের জন্য। কারণ প্রকৃতপক্ষে শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা কম হলেও ভিক্ষুক সেজে অনেককেই প্রতিবন্ধী হতে দেখা যায়।

তবে এই বয়সে ওই বৃদ্ধার যে কাজ করার ইচ্ছে এটা থেকে আমাদের শেখার আছে। বয়স মানুষের জন্য প্রতিবন্ধকতা নয় বরং আমাদের ইচ্ছে বা প্রচেষ্টা না করাটাই আমাদের প্রতিবন্ধকতা।

 3 months ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন এই ঘটনাটি থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। কারণ এইরকম মানুষ আমাদের সমাজে খুবই কম দেখা যায়। এই বয়সে উনার কাজ করার কথা শুনে আমারও উনার প্রতি শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গিয়েছিল। বৃদ্ধা মহিলাটিকে দেখে অনেকে শেখা উচিত। বিশেষ করে যারা অসৎ কাজ করে ।কিংবা অসৎ পথে টাকা রোজগার করে।

 3 months ago 

আপনার পিসির কাছ থেকে শোনা যে গল্পটা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এটা আসলেই শিক্ষনীয়। মাঝে মাঝে আমারও এমন কিছু মানুষ চোখে পরে যাদের অনেক বয়স হয়ে গেছে কিন্তু এখনো তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

আবার বিপরীতে এমন অনেক মানুষ সামনে আসে যারা শারীরিক ভাবে সুস্থ সাথে বয়সও কম অথচ কাজ বাদ দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিয়েছেন। এদের সংখ্যাই বেশি।
ভালো লাগলো আপনার লেখা পড়ে।
ভালো থাকবেন সবসময়।

 3 months ago 

আমার পোস্টটি পড়ে এত ভালো কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি ঠিকই বলেছেন রাস্তায় বেরোলে কত রকমের মানুষ চোখে পড়ে। পিসির কাছ থেকে শোনা গল্প আপনাদের ভালো লেগেছে শুনে খুব ভালো লাগলো।

 3 months ago 

সর্বপ্রথম কথা হলো আমাদেরকে রাস্তা চলাচল করার সময়, বিভিন্ন রকমের জিনিসের সাথে সম্মুখীন হতে হয়। এরকমটাই আপনার পিসির গল্প পরে বুঝতে পারলাম। আমার কাছেও তাই মনে হয়, অসৎ পথে ইনকাম করার থেকে সৎ পথে দুই টাকা ইনকাম করার মাঝে তৃপ্তি আছে।আপনার পিসির গল্পে সেই বৃদ্ধ মহিলাটি সৎ ইচ্ছায় এবং সৎ পথে টাকা উপার্জন করার চেষ্টা করছে।
সত্যিই আপনার গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ

 3 months ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন অসৎ পথে টাকা রোজগার থেকে সৎ পথে টাকা রোজগার করা অনেক ভালো। সবার কাছ থেকে সম্মান পাওয়া যায়। আমার পোস্টটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 months ago 

আসলে যারা কর্ম করে খেতে জানে তাদের কাছে বার্ধক্য বাধা হয়ে দাড়াতে পারে না।ভিক্ষা প্রবিত্তি তো সকলেই পছন্দ করেন না।এই ধরনের মানুষদের আমি সেলিউট জানাই।মানুষ রাস্তায় বিপদে পড়লে সাহায্য করা এটা মনুষ্যত্বের বহিঃপ্রকাশ।

 3 months ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন রাস্তায় বিপদে পড়লে মানুষকে সাহায্য করা উচিত ।আমার পোস্টটিতে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ।

 3 months ago 

আপনার পিসির কাছ থেকে শোনা প্রথম গল্পটি অনেক অনুপ্রেরণামূলক। এই বয়সেও একটি মহিলা ফুল বিক্রি করেন। মানে হচ্ছে তিনি জীবনযুদ্ধে হেরে না যাওয়া সৈনিক। মনের জোর , আর ইচ্ছে থাকলে যে কাজ করা যায় এটিই তার অন্যতম প্রমাণ। উনি কিন্তু চাইলেই ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিতে পারতেন। কিন্তু সে মানুষের কাছে হাত পাততে রাজী নয়। দ্বিতীয় ঘটনাটিতে আপনার পিসির ভাগ্য ভালো বলতে হবে। বড় একটা সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে গিয়েছিলেন। ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 3 months ago 

সত্যি মনের জোর থাকলে জীবনে সবকিছু করা যায়। উনি যদি চাইতেন অন্যান্য মানুষের মতো ভিক্ষার পথ বেছে নিতে সত্যিই পারতেন। পোস্টটিতে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ।

 3 months ago 

পিসির কাছ থেকে শোনা দুটি গল্প আপনি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। গল্পে ফুল বিক্রি করা বৃদ্ধার কথা বললেন। সত্যি তিনি প্রশংসার দাবিদার। এই বয়সে এসেও কর্ম করে চলছেন। নিজের আত্মসম্মান বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন।

পিসি আপনার জন্য যে উপহারটি এনেছে তা সত্যি খুবই চমৎকার। ছবিতেই এত ভালো লাগছে না জানি সামনাসামনি কতটা সুন্দর।

সব মিলিয়ে আপনার পোস্ট পড়ে বেশ ভালো লাগলো।

 3 months ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন এই বয়সে কর্ম করে চলেছেন। নিজের আত্মসম্মান বজায় রেখে চলেছেন। এইরকম মানুষ খুবই কম দেখা যায়। পিসির আনা উপহারটি আমারও খুব পছন্দ হয়েছে। আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60249.61
ETH 2321.35
USDT 1.00
SBD 2.51