লোকনাথ পূজা

in Incredible India13 days ago (edited)

আপনারা সকলে কেমন আছেন ?আশা করি ভালো আছেন ।আমিও ভালো আছি ।আজকে আমি লোকনাথ পুজোর গল্প আপনাদের কাছে শেয়ার করব।

লোকনাথ মানুষের রূপ ধারণ করে মাতৃগর্ভ থেকে পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছিলেন। তখনকার সময়ে তাকে অবতার বলা হতো।লোকনাথ বাবা ছিলেন একজন ব্রহ্মাচারী। তিনি ছিলেন উনবিংশ শতকের শ্রেষ্ঠ যোগী মহাপুরুষ। লোকনাথ ছোট থেকেই খেলার ছলে ধ্যানে নিমগ্ন থাকতেন। তিনি ছোট থেকেই সন্ন্যাস ধর্ম গ্ৰহন করেছিলেন। বাবা লোকনাথ শিষ্যদের বোঝাতেন মানুষ যেরকম ব্যবহার করে ঠিক সেই রকম ব্যবহার পেতে হয়। অন্যকে দুঃখ দিলে দুঃখ আর সুখ দিলে বিনিময়ে সুখ পাওয়া যাবে। লোকনাথ ছিলেন মহাদেবের অংশ। লোকনাথ বাবার বানী হলো রনে বনে জঙ্গলে যেখানেই বিপদে পড়বে আমাকে স্মরণ করবে।

IMG20240602170350.jpg

প্রত্যেক বছর জৈষ্ঠ মাসের ১৯ তারিখে লোকনাথ পুজো হয়। প্রত্যেক বছর এই পূজার দিন আমার শাশুড়ি মা মন্দিরে পূজো দিতে যান। যেহেতু এবার আমার শাশুড়ি বাড়ি ছিল না। তাই আমার ঘুম থেকে ওঠার আগে আমার শ্বশুরমশাই গিয়েছেন পুজো দিতে। আমার ও যাবার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু বাইরে রোদ দেখে আর যেতে ইচ্ছে করলো না।আমার বাড়ির পাশেই একটা মন্দির আছে ।সেই মন্দিরেই অনেক লোকজনকে খিচুড়ি খাওয়ানো হয়। আমার শ্বশুরমশাই বরাবরই মানুষকে খাওয়াতে বেশি ভালোবাসে। এবছর যেহেতু জেঠু মারা গেছে তাই পুজো দেওয়া যাবেনা । তাই শ্বশুরমশাই কিছু টাকা দিয়ে এসেছে খিচুড়ি খাওয়ানোর জন্য।

IMG20240602170404.jpg

আমরা ছোটবেলায় ওখানে খিচুড়ি খেতে যেতাম। ছোটবেলায় আমরা যখন খিচুড়ি খেতে যেতাম তখন মাটিতে বসে খিচুড়ি খাওয়ানো হত। কিন্তু এখন চেয়ার টেবিলে বসে খিচুড়ি খাওয়ানো হয়। খুব ভালো করে পরিবেশন করা হয়। কিন্তু বড় হওয়ার পর থেকে আর যাওয়া হয়ে ওঠে না। ওখানে বেশ খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা ভালোই করে। অনেক মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে খেতে আসে। প্রত্যেক বছর লোকনাথ পুজোর দিন আমার একটা ননদ আসে ।মন্দিরে পূজা দিতে। এ বছর ননদ আসতে পারেনি। তাই ননদের ছেলে এসেছিল মন্দিরে পূজা দিতে। মন্দিরে পুজো দিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে খাওয়া দাওয়া করে তারপর বাড়ি যাই।

আমি বিকেল বেলায় গিয়েছিলাম মন্দিরে ঠাকুর দেখার জন্য। গিয়ে দেখলাম লোকনাথ ঠাকুর কে এত পরিমাণে মালা পরিয়েছে। যে ঠাকুরটা পুরো ঢেকে গেছে। পাশেই অনেক লোকজন খিচুড়ি খাচ্ছে। বিকেল থেকেই খিচুড়ি দেওয়া শুরু করে দিয়েছিল। লোকনাথ পুজোর দিন ছিল প্রচন্ড গরম। লোকনাথ মন্দিরটি অনেক বছর আগে থেকেই ওখানে প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে ।বহু বছর ধরে ওখানে লোকনাথ পুজো হয়ে আসছে। আমরা ছোট থেকে বরাবরই ওই মন্দিরেই যাই পুজো দিতে। মন্দিরটি আমাদের বাড়ি থেকে পাঁচ থেকে সাত মিনিট লাগে যেতে।

এছাড়া এখন পাশে আরেকটি লোকনাথ মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। লোকনাথ পুজোর দিন আমাদের পাশের কয়েকটি বাড়িতে নেমন্তন্ন থাকে। কিন্তু এবার কোথাও যাওয়া হয়ে ওঠেনি। বিকেলবেলায় আমি যখন ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলাম তখন পুজো শেষ হয়ে গিয়েছিল। আসলে সকালবেলা থেকেই পুজো শুরু হয় তাই বিকেলের আগেই পুজো শেষ হয়ে যায়। আবার সন্ধ্যার সময় সন্ধ্যা আরতি হয়। লোকনাথ ঠাকুরের প্রসাদ বিশেষ করে মিছরি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া অন্যান্য ফল প্রসাদের ব্যবস্থাও থাকে।


আজ এই পর্যন্তই থাক। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে ।আবার কোন গল্প নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

Sort:  
 13 days ago 

আপনার লোকনাথ পূজার গল্পটি আপনি অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, যেটা পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপনার পূজা সম্পর্কে আমাদেরকে জানানোর জন্য।

 11 days ago 

পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 13 days ago 

আজকে আপনি চমৎকার ভাবে লোকনাথ ব্রহ্মচারী পূজার গল্প শেয়ার করেছেন।লোকনাথ ব্রহ্মচারীর পূজা আমাদের দেশেও খুব সম্মানের সাথে হয়ে থাকে।
মন্দির এর দূরত্ব আপনাদের বাড়ি থেকে ৫/৭ মিনিট এর হওয়ায় আপনাদের সুবিধা হয়েছিল। নাহলে এই গরমে মাঝে কস্ট হয়ে যেত।
আপনি বিকেলে গিয়েছিলেন মন্দিরে।

 11 days ago 

ঠিকই বলেছেন এই গরমে কোথাও যাওয়া খুবই কষ্টের ব্যাপার। আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Loading...
 9 days ago 

আপনি বিভিন্ন পূজা নিয়ে খুবই চমৎকার ভাবে পোস্ট লেখেন যেখান থেকে আমি অনেক কিছুই জানতে পারছি।। আসলে আপনাদের ধর্মের সম্পর্কে আমার খুব বেশি ধারণা নেই।। আপনি এত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেন যে সেখান থেকে খুব সহজেই বোঝা যায়।। আর হ্যাঁ আগের সময় খাওয়া-দাওয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাটিতে বসে খাওয়াতো আর এখন চেয়ার টেবিলে খাওয়াই।।

 9 days ago 

আমার পোস্টটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 67271.13
ETH 3515.41
USDT 1.00
SBD 2.70