জামাই ষষ্ঠীর বাজার
আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। সুস্থ আছেন। আমিও ভালো ।আছি সুস্থ আছি। আমি জামাইষষ্ঠীর বাজারের গল্প আপনাদের কাছে শেয়ার করব।
জামাইষষ্ঠীর সকাল বেলায় কি কি করলাম আগের পোস্টে শেয়ার করেছি। এছাড়া মা ষষ্ঠীর পুজোতে আমরা কি ব্যবহার করি সেটা আগের পোস্টে জানিয়েছি ।জামাই ষষ্ঠী দিন সকালবেলায় আম ,কাঁঠাল, মিষ্টি, দই সবকিছু নিয়েই হাজির হয়েছিলাম মামার বাড়িতে।যেহেতু জামাইষষ্ঠীর দিন বাপের বাড়ির প্রত্যেককে নতুন জামা, কাপড় দিতে হয়। অনেকে বাড়ির প্রত্যেককে দিতে না পারলে শুধু মাকে দেয় । শাশুড়িরা ও জামাই,মেয়ে কে নতুন কাপড়, জামা দেয় ।তাই সেদিন আমি আর দুই বোন মিলে বেরিয়ে পড়েছিলাম জামা ,কাপড় কিনতে। জামা ,কাপড় কিনতে তো আমার বেশ ভালোই লাগে। জামাইষষ্ঠীর দিন ছিল প্রচন্ড গরম। কিন্তু কি করব বেরোতে তো হবেই। বোনেরা সবাই এক জায়গায় হলে বেশ ভালোই লাগে ।কিন্তু আমার মেজো বোন ঠিক করে উঠতেই পারছিল না। যে আগে কোন দোকানে যাবে। কারণ দিদা সব জামাইদের জন্য কেনাকাটা করতে বলেছিল।
মেজ বোন অন্য বোনেদের মত সব সময় মামার বাড়ি আসতে পারে না ।ওর খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। তাই আমাদের মতো কোনদিনই একা একা যাতায়াত করা বা কেনাকাটা করা ।এইসব করতে অভ্যস্ত নয়। ষষ্ঠী তে মেজো বোন, বোনের বর, মেয়ে তিন জন এসে ছিল। বাজার করতে গিয়ে সেদিন কৃষ্ণনগরের প্রায় অধিকাংশ দোকান থেকেই আমরা কিছু না কিছু কেনাকাটা করেছি ।এই প্রথমবার হয়তো সব দোকান ঘুরে ঘুরে তিনজন মিলে কেনাকাটা করেছি। বেরিয়েছিলাম তখন বিকেল বেলা ছিল। আর ফিরেছিলাম রাত দশটা নাগাদ । আসলে প্রত্যেকটা দোকান ঘুরে ঘুরে দেখে কেনাকাটা করা ।তাই এতটা সময় লেগেছিল।
আসলে কিনতে হয়েছিল অনেক কিছু ।তাতে আবার ছিল আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। মামার বাড়ির অনেকজন সদস্য ।তাই প্রত্যেকের জন্যই কেনাকাটা করা হয়েছিল। আমার তিন মামা, মামি আর দুই বোন এছাড়া দিদার জন্য, মায়ের জন্য কেনাকাটা করেছিলাম। আমি আমার শাশুড়ির জন্য শাড়ি কিনেছিলাম। এছাড়া শাশুড়ি মা আমাকে আলতা কিনে আনতে বলেছিল ।কারণ আমাদের বাড়িতে আলতা শেষ হয়ে গিয়েছিল ।আর আমি আলতা করতে ভীষণ ভালোবাসি।সেদিন ষষ্ঠী ছিল। তাই যারা যারা ষষ্ঠী খেতে এসেছে অনেকেই কেনাকাটা করতে গিয়েছিল। প্রত্যেকটা দোকানেই ভালোই ভিড় ছিল। রাস্তায় খুব ভিড় ছিল ।তাই যাতায়াত করতেও একটু অসুবিধা হচ্ছিল ।যেহেতু আমরা হেঁটে হেঁটেই বাজার করতে গিয়েছিলাম। তাই রাস্তা পার হতে অসুবিধা হচ্ছিল।
বাড়ি ফেরার সময় আমরা টোটো করে বাড়ি ফিরেছিলাম। কারণ হেটে হেঁটে আসলে আরো অনেকটা দেরি হয়ে যাবে ।বাড়িতে মেজো বোনের একটা ছোট মেয়ে ছিল। সেও যাওয়ার সময় বায়না করছিল। বাড়ি ফিরে এসে যে যার মত জিনিসপত্র দেখে খুব খুশি হয়েছিল। আমাদের কিনে নিয়ে আসা জিনিসগুলো সবার খুব পছন্দ করেছিল। আসলে মেজো বোন সব সময় মামার বাড়ি আসতে পারেনা। তাই মেজ বোন বেশি কেনাকাটা করেছিল। বাপের বাড়ির লোকেরা জামাইয়ের দেওয়া জিনিস পেয়ে খুব খুশি হয়েছিল। আসলে কোন অনুষ্ঠানে সবাই মিলে এক জায়গায় হলে সত্যি ই খুব ভালো লাগে। আসলে মেয়েরা বিয়ের পর থেকে সবাই এক জায়গায় হতে পারে না ।কারণ সবারই সংসার আছে। মেজ বোনের একটা মেয়ে থাকায় মেজ বোন তো আসতেই পারেনা। আমাদের জামাই ষষ্ঠী বেশ ভালোভাবেই কেটেছিল।সব জামা, কাপড় বা দোকানের ছবি তোলা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।আজ এই পর্যন্তই থাক আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে আবার নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব।
আমাদের ঘরে প্রথম যখন জামাইষষ্ঠীর আয়োজন করা হয়েছিল তখনও এই ধারনা ছিল না। কিন্তু যখন বোনের হাজবেন্ড এসেছিল তখনই বুঝতে পেরেছিলাম।
আমার মনে আছে সর্বমোট পনেরোটা শাড়ি নিয়ে এসেছিল। সাথে অন্যান্য সরঞ্জাম তো ছিলই। দিদি, আপনি যদি কেনাকাটার বাজার মূল্য স্টিম মূল্যের সাথে তালিকা করে তুলে ধরতেন আপনার লেখাটা আরো ভালো হতো।
আসলে দিদি আমি তো একা কেনাকাটা করিনি। সাথে বোনরাও কেনাকাটা করেছিল। তাই মূল্যটা তুলে ধরতে পারিনি। আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
জামাইষষ্ঠীর কেনাকাটা আপনারা তিন বোন মিলে বেশ ভালোই করেছেন। আর বাড়িতে যতজন সদস্য সবার জন্য কেনাকাটা হয়েছে। আসলে প্রত্যেকটা জিনিস অনেক সুন্দর। বিশেষ করে ছোটদের জামাকাপড় আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তাই হয়তো বা আপনাদের এখানেও ছোটদের জামা গুলো আমার অনেক বেশি পছন্দ হয়েছে। ধন্যবাদ নিজের বোনেদের সাথে কাটানো জামাইষষ্ঠীর কেনাকাটার মুহূর্তগুলো, আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।