Betterlife with steem ||The diary game|| 24 July, 2024
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সকলেই জানেন বাংলাদেশি চলছে কোটা আন্দোলন ।আমাদের দেশের ছাত্ররা তাদের দাবি আদায়ের আন্দোলন করছে ।দীর্ঘ ছয়টি দিন বাংলাদেশের সমগ্র মানুষ কিভাবে কাটিয়েছে তা আপনারা নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন।
আজ পোস্ট লিখতে বসে আমার মনে হচ্ছে যেন ,যুদ্ধের পর স্বাধীনতা অর্জন করলাম।আমি যুদ্ধ দেখিনি ।যুদ্ধের পর স্বাধীনতার অনুভূতি কি সেই সম্পর্কে আমি অবগত নই ।কিন্তু দীর্ঘ ছয় দিন পর ইন্টারনেটের সংযোগ পেয়ে মনে হচ্ছে যেন যুদ্ধের পর স্বাধীনতা পেলাম ।তাই আজ স্বাধীনতার অনুভূতি উপলব্ধি করতে পারলাম ।দীর্ঘ ছয় দিন বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের আমরা সবাই গৃহবন্দী ছিলাম ।এই কটা দিন বাসা থেকে বের হতে পারিনি। কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি ।দেশের কোথায় কি হচ্ছে ,দেশের কি অবস্থা কোন সঠিক খবরা খবর জানতে পারিনি ।
মনে হচ্ছিল এখন থেকে ২৫ বছর আগের দিনগুলোতে আমি ফিরে গেছি।আজ থেকে ২২ বছর আগে আমার কাছে কোন স্মার্ট ফোন ছিল না। ইন্টারনেট কি জিনিস আমি জানতাম না।একবিংশ শতাব্দীতে এসে ইন্টারনেট ছাড়া দিন কাটানো আমরা কেউই কল্পনাও করতে পারি না ।কিন্তু আমাদের দেশে এই ঘটনাটি ঘটে গেল ।ঘটনাটি ঘটে গেল বললে ভুল হবে ।ঘটনাটি ঘটতে বাধ্য করা হয়েছে।
যাইহোক ,গতকাল ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার পরে ভেবেছিলাম পোস্ট লিখতে বসবো কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ সঠিকভাবে হচ্ছিল ।তাই গতকাল পোস্ট লিখতে পারিনি। এ কটা দিন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম গৃহবন্দী দিনগুলো কিভাবে কাটিয়েছে তা আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। অবশেষে অপেক্ষার দিন শেষ হলো ।তো চলুন ,আমার গতকালকের দিনটি কিভাবে অতিবাহিত করেছি তা আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
প্রতিদিনের মতো আজও ঘুম থেকে উঠে ছাদে চলে গেলাম পূজার ফুল তুলতে ।পূজার ফুল তুলা দিয়েই আমার প্রতিটা দিন শুরু হয় ।ছাদে গিয়ে দেখি বাইরে মিষ্টি বাতাস বইছে আর চারদিকের পরিবেশ নিরব নিস্তব্ধ।ফুলতলা শেষ করে কিছুটা সময় ছাদে কাটালাম। ছাদে কিছুটা সময় কাটানোর পর বাসায় চলে এলাম। বাসায় এসে ফুলগুলো রেখেই সবার প্রথমে ল্যাপটপ ওপেন করলাম।ল্যাপটপ ওপেন করে চেক করি নেট এসেছে কিনা এই কটা দিন কয়েক ঘন্টা পর পরই ল্যাপটপ ওপেন করে চেক করেছি নেট এলো কিনা তা দেখার জন্য।আমার স্মার্টফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে, তাই ল্যাপটপ ওপেন করেই আমাকে দেখতে হয়েছে নেট এসেছে কিনা।এ কটা দিন নেট না থাকায় কি যে অস্বস্তিকর দিন অতিবাহিত করেছি ,তা আর বলে বুঝানোর মত নয়।
নেট না থাকার কারণে আমার ছেলে আমাকে বেশি জ্বালাতন করেছে। ওকে ঘরে রাখাটাই মুশকিল হয়ে পড়েছিল ।কেননা ও লেখাপড়া শেষ করার পর অনেকটা সময় ল্যাপটপ নিয়েই কাটায়।যাইহোক ,সকালবেলা সবাই মিলে সকালের নাস্তা খেয়ে নিলাম।
আজ দুপুরের জন্য রান্না করেছি ওস্তে আর আলু দিয়ে তরকারি এবং ডাটা ও কাঁঠালের বিচি দিয়ে সরষে পাতুরি ।আমার শাশুড়ি মা ও ছেলে এই সরষে পাতুরি খেতে ভীষণ পছন্দ করে।এই সর্ষে পাতুড়ির রেসিপিটা অন্য আরেকদিন আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আজ বিকেলেও ছাদে গিয়েছিলাম। আজ বিকেলে কিছু সময়ের জন্য বৃষ্টি হয়েছিল। বৃষ্টি হওয়ার পর মাঝেমাঝে মেঘলা আকাশ দেখতে ভীষণ ভালো লাগে।আজকে মেঘলা আকাশটা দেখতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগছিল তাই একটি ফটোগ্রাফ তুলে নিলাম।সন্ধ্যা আযান দেওয়ার একটু আগে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে সন্ধ্যা পূজা দিলাম। সন্ধ্যা পূজা দেওয়ার পরপরই বাড়ির সবার মধ্যে এক হইহুল্লোড় শুরু হল ।সবাই বলাবলি করছিল নেট চলে এসেছে ।এ কথা শুনে আমার ছেলে তারা হুড়ো করে গিয়ে ল্যাপটপ ওপেন করে ।ল্যাপটপ ওপেন করে দেখল যে সত্যিই নেট চলে এসেছে। নেট চলে এসেছে দেখে তো আমার ছেলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ল!