আম্মার হঠাৎ অসুস্থতা
আসসালামু আলাইকুম। আশাকরছি সবাই ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ইন্ডিয়ান বাসী, বাংলাদেশ বাসী,ও ইনক্রিডিবল ইন্ডিয়া কমিউনিটির সবাইকে জানাই, আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সবার প্রতি আমার ভালবাসা রইল।
আজকের দিনটা ছিল কিছুটা অস্বাভাবিক, হঠাৎই আম্মার অসুস্থতার কারণে সব কিছু বদলে গেল। সকাল ৯টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠলাম। সব কিছুই ভালো ছিল, কিন্তু এরপরই আম্মু বললেন, আম্মুকে নিয়ে একজন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। কিছুক্ষণ পরেই ফোন দিলাম এবং ফোনে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিলাম, আর জানতে পারলাম ডাক্তার আসবেন দুপুর তিনটার দিকে।
ডাক্তার এক নজরে আম্মাকে দেখে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর জন্য দুটি টেস্ট দিলেন। যদিও আম্মার আগে অনেক টেস্ট করা হয়েছে, তারপরও এই দুইটা টেস্ট করাতেই হবে।
ডাক্তার দেখিয়ে আম্মাকে নিয়ে আবার বাসায় নিয়ে এলাম, বাসায় ফিরে কিছু বিশ্রাম নিলাম। কিছুটা শান্ত হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু মনটা তেমন ভালো লাগছিল না। বিকালে একটু ছাদে গিয়েছিলাম। ছাদে গিয়ে আমার ভাগ্নি আর ভাতিজির সাথে কিছুটা দুষ্টামি করলাম, তাদের সঙ্গে একটু হাসিঠাট্টা করে মনটা কিছুটা ভালো করার চেষ্টা করলাম।
ছাদ থেকে নিচে নেমে আরো একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম, যা আমার মনকে প্রশান্তি দিল। ভালোবাসার কবুতরের খাঁচার সামনে গিয়ে দেখলাম, কবুতরের বাচ্চাগুলো বেশ বড় হয়ে গেছে। বেশ কয়েকদিন পরেই হয়তো এই বাচ্চাগুলো আকাশে উড়তে শুরু করবে। এই বাচ্চাগুলোর উড়ন্ত সময়টা আমি খুবই উপভোগ করবো, যদি আল্লাহ চান, ইনশাল্লাহ।
এভাবেই বিকেলটা কিছুটা কাটানোর পর, মাগরিবের আজান পড়লো। তখন আমি ও আম্মু ইফতার করলাম। ইফতারি করে কিছু সময় বিশ্রাম নিলাম। এরপর আবার মনে পড়লো, যে টেস্টগুলো করাতে দিয়েছি, সেগুলোর রিপোর্ট করাতে আমাদের ড্রাগনস্টিক সেন্টারে যেতে হবে। সুতরাং, আমরা সেখানকার উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলাম। আমাদের বাসা থেকে ওই সেন্টারটি প্রায় ২০ মিনিটের দূরত্বে ছিল।
সেন্টারে গিয়ে টেস্ট করানোর পর প্রায় সাড়ে ৫০০ টাকার মতো খরচ হলো। টেস্টের রিপোর্ট ৪ ঘণ্টার মধ্যে দেওয়া হবে বলে জানানো হলো, অর্থাৎ রাত ১১টা নাগাদ। আমি ভাবলাম, যেহেতু সেন্টারটি বাসার কাছেই, তাই রাত ১১টায় রিপোর্টটি নিয়ে আসব। এর মধ্যে গত কয়েকদিনে প্রচণ্ড গরম পড়ছিল, বৃষ্টি হলে মশার উৎপাত কিছুটা কমে যাবে। তবে এর পাশাপাশি, মনে মনে ভাবছিলাম, আজকে রাতে কি যাব, রিপোর্ট কি আনতে।
তাই আর কোন কিছু না ভেবেই, আমি দ্রুত খাবার খেয়ে কিছুটা সময় বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা দিয়ে যখন দেখলাম ঘড়ির কাটায় রাত ১১টা বাজে, তখনই আমি হাঁটতে-হাঁটতে ড্রাগনস্টিক সেন্টারের দিকে রওনা হলাম। রাস্তায় মানুষ কম ছিল, আমি পৌঁছালাম মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে সেন্টারের সামনে । তবে সেন্টারের সামনে এসে দেখলাম, এত রাতে এখানে মানুষের ভিড়। রিপোর্ট কাউন্টারে গিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করার পর, রিপোর্টটি হাতে পেয়ে আমি তৎক্ষণাৎ সেন্টার থেকে বের হয়ে বাসায় ফিরে এলাম। ঘড়িতে রাত সাড়ে ১১টা বাজে।
আমি মনে-মনে ভাবছি, আল্লাহই জানেন কি হবে। কিন্তু আল্লাহ যা করবে আমাদের মঙ্গলের জন্যই করবে এইটুকু বিশ্বাস আল্লাহর প্রতি আমার রয়েছে কারণ, দীর্ঘ দিন ধরে আম্মা কিছুটা অসুস্থতা অনুভব করছেন, কিন্তু কোথাও সঠিক রোগের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি আগে বিভিন্ন হাসপাতালেও রিপোর্ট করে অনেক কিছুই জানা যায়নি।
আম্মা বেশ কিছুদিন ধরেই বলছেন, তার আবার ইউরিন ইনফেকশন হয়েছে, যা বেশ জ্বলে। এর আগে এই সমস্যার কারণে অনেক হাসপাতালেও গিয়েছি, অনেক রিপোর্ট করিয়েছি, কিন্তু কিছুদিন ভালো থাকার পর আবার এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। আম্মাকে আমি বললাম, হয়তো রোজা রাখার কারণে পানি শূন্যতা হয়েছে। সারাদিন পানিশূন্যতায় শরীর দুর্বল হয়ে গেছে, আর তাই তোমার এই সমস্যা আবার ফিরে এসেছে।
আপনারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমার আম্মাকে দ্রুত সুস্থ করে দেন। আজকের দিনটা কাটানো সত্যিই এক ধরনের বাস্তব অভিজ্ঞতা ছিল, যেখানে চিন্তা, উদ্বেগ এবং কিছুটা হতাশা ছিলাম, তবে আমি বিশ্বাস করি, ইনশাল্লাহ, সব কিছু ভালো হবে।
আজকের এই পোস্টে আমি আমার জীবনের কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি, আর আপনাদের সঙ্গে আমার কিছু অনুভূতি ও চিন্তা ভাগ করেছি। পরবর্তী সময়ে অন্য কোন পোস্ট নিয়ে আবার হাজির হবো। সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আসলে সবকিছুই এলোমেলো হয়ে যাই যদি পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে পরে । আর সেই মানুষটা যদি মা হয় তাহলে আরো বেশি প্রভাব পরে মনের উপর। তবে দ্রুত তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিইয়েছেন যা খুব ভালো খবর। কারণ চিকিৎসা পেতে দেরি হলে অনেক সময় রোগ সারতে সময় লাগে।
আপনি ঠিকই বলেছেন ,যে রোজার কারণেও সমস্যা দেখা দিয়তে পারে। আমি আমার জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতাই দেখেছি যে ,আমার অসুস্থ কিংবা একটু বয়স্ক মানুষেরা রোজা রেখে আরো অসুস্থ হয়ে পরে। তাদের শরীরে প্রতিবছর যে ক্ষতিটা হয় সেটা তারা পরবর্তীতে খুব একটা কাটাতে পারেন না। পরের বছর আবার রোজা রাখেন। অথচ এটার সহজ একটা সমাধান আছে ,কেউ রোজা না রাখতে পারলে অন্য একজন মানুষকে তার রোজার খাবারের খরচ দেয়া। যেটাকে কাফ্ফারা বলা হয়।
আপনার আমম্মু দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এই দোয়া করি। আপনার কবুতরগুলি মাশাল্লাহ সুন্দর হয়েছে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যটি পড়ে। এবং আপনার মন্তব্যের মাঝে অনেক কিছুই রোজার সম্পর্কে জানতে পারলাম।
মা হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে শ্রেষ্ঠ সম্পদ আপনার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছে জানতে পেরে খুব খারাপ লাগলো আপনার মায়ের অবস্থা এখন কেমন আমি জানিনা তবে দোয়া করি আল্লাহ তা'আলা তাকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দিক। আপনার কবুতরগুলো নিচে নেমে এসেছে যেটা দেখে আপনি অনেক বেশি খুশি হয়েছেন এবং আপনার কবুতরের বাচ্চাগুলো কিছুদিন পরেই আকাশে উড়তে পারবে এটাই হচ্ছে সবচাইতে ভালো লাগার একটা বিষয় অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তু গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।
@mdsuhagmia মন্তব্য করতে অঙ্কে দেরি করে ফেললাম, কিছু মনে করবেন না।
একসাথে সবদিক দেখতে গিয়ে এখন আপনাদের লেখা পড়লেও সেভাবে মন্তব্য করবার সময় পাই না। বোঝেন তো আপনার মাকে আপনি যেমন দেখছেন, আবার আপনার মা যেমন আপনার পাশে আছেন, আমার ক্ষেত্রে সবটাই একা করতে হয়।
আশা করি আপনার মা এখন সুস্থ্য আছেন?
জল পান করতে হবে বেশি করে, এমনিতেই মেয়েদের অনেক শারীরিক ধকল পোহাতে হয়। তাই যত্নের প্রয়োজন আছে।