অসমাপ্ত ফেসবুক প্রেমের গল্প শেষ পর্ব 💔💔💔
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
শুভ সকাল,
সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা।
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন । আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অশেষ রহমত এবং বাবা মায়ের দোয়ায় আমিও ভাল আছি এবং সুস্থ আছি আজ আপনাদের মাঝে উপস্থাপনা করব অসমাপ্ত ফেসবুক প্রেমের শেষ পর্ব।
আসলে তনু অনেক ভয় পাচ্ছিল কেননা তনু রাকিবকে ভালবাসতে চলছিল যদি এই কথাটি শোনার পর রাকিব আর তার সাথে যদি যোগাযোগ না করে, কথা না বলে, মূলত এই ভয়ে বলতে চাচ্ছিল না। আবার তনু মনে মনে ভাবছিল যে কোন সম্পর্কের ভিতরে যদি গোপন কোন কথা থাকে সেটা যদি প্রকাশ না হয় তাহলে সম্পর্ক বেশিদিন টেকে না।
তাই তনু মনে সাহস নিয়ে রাকিব কে বলল আমি একটি কথা বলতে চাই দয়া করে আপনি ক্ষমা করবেন আমি আপনাকে এতদিন প্রকাশ করি নাই। রাকিব বলল কোন সমস্যা নাই আপনি বলতে পারেন।
তারপর তনু বলল যে আমি বিবাহিতা কয়েক বছর আগে আমার বয়স যখন ১৬ বছর ছিল তখন পরিবার থেকে আমাকে বিয়ে দেয় । আমি রাজি ছিলাম না। আমার বয়সে অনেক কম ছিল জোরপূর্বক ভাবে আমাকে বিয়ে দেয় ছেলের ফ্যামিলিরা অনেক টাকা পয়সার মালিক এইজন্য। সেখানে আমি তিন মাস সংসার করি । তারপর এক পর্যায়ে ছেলেটির সম্পর্কে আমি আস্তে আস্তে জানতে পারি যে সে নেশা দ্রব্য পান করে এবং যতদিন যাই আমার উপর অত্যাচার বাড়তে থাকে তারপর সবকিছু আমার ফ্যামিলিকে বলার পর। আমি তাকে ডিভোর্স দেই আমার পরিবারের সহযোগিতায়।
সবকিছু শোনার পর রাকিব একটু থমকে
গেল। কেননা রাকিবের এই প্রথম ভালবাসা সেটা আবার একজন ডিভোর্সি মেয়ের সাথে। রাকিব মেয়েটির কোন কথার উত্তর দিচ্ছে না। মেয়েটি বলল যে আমি সব কিছু সত্য বলছি। রাকিবের সবকিছু এলোমেলো লাগছিল। রাকিব তনু কে বলল যে আমি আপনার সাথে কাল কথা বলছি। আমাকে একদিন সময় দিন ভাবার । কথায় আছে ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না।
এবার রাকিব তার একটি কাছের বন্ধুকে সবকিছু খুলে বলবো তার কাছের বন্ধু বলল যে বন্ধু যদি মেয়েটার মন-মানসিকতা ভালো থাকে তাহলে কোন সমস্যা নাই, রাকিব আরেকটা দিখথেকে ভাবতে লাগলো যে তার নিজের বোনের সাথেও এমনটা হয়েছিল। অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার কারণে তার নিজের বোনের ডিভোর্স হয় এবং তারপর অন্য আরেকটি জায়গায় দিয়ে দেয়। এমনটা ভেবে রাকিব সিদ্ধান্ত নিল যে মানুষের জীবনে ভুল হতেই পারে।
পরের দিন রাকিব আবার মেয়েটিকে ফোন দিল এবং বলল যে আমার পক্ষ থেকে কোন সমস্যা নাই আমি সব মানতে রাজি আছি। কিন্তু একটি কথা দিতে হবে কখনো তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না। তারপর মেয়েটি উত্তরে বলল ঠিক আছে আমি কথা দিলাম আমার জান থাকতে আমি তোমাকে ছাড়বো না।
সম্পর্ক দীর্ঘ সাত মাস অতিবাহিত হল হঠাৎ একদিন সকালে রাকিবের ফোনে মেসেজ। (তনুর) লিখছে আমার বাড়ি থেকে বিয়ের চাপ দিচ্ছে এবং আজকে আমাকে দেখতে আসবে। রাকিব বলছে তোমার আম্মা কে সব বলে দাও আমার সম্পর্কে তুমি আমাকে ভালোবাসো আমিও তোমাকে ভালোবাসি সবকিছুই তোমার আম্মর সাথে বল তাহলে তিনি বিবেচনা করবেন। এবং তোমার আব্বুকে জানাবে।
রাকিব তনুকে অনেক ভালোবাসতো কেননা এটা তার প্রথম ভালবাসা তাই তাকে জীবনের চাইতে বেশি ভালোবাসতো। তনু সেই দিন তার মাকে সবকিছু বলে। এবং তার মা রাকিবের সাথে কথা বলবে তনুকে এ কথা বলে। পরের দিন রাকিবের সাথে তনুর মা কথা বলে এবং তনুর মা ও পছন্দ করে ফেলে রাকিবের।
এদিকে তনুর বাবা কোন কিছুই জানেনা তনুর জন্য যে ছেলে ঠিক করছে তারা খুলনা শহরের সবচাইতে ধনী ব্যক্তি এবং অনেক প্রভাবশালী। তনুর বাবা ছেলে পক্ষদের কথা দিয়েছে যদি তাদের মেয়ে দেখে পছন্দ হয় তাহলে তারা পরের দিনই অনুষ্ঠিত হবে তনুর বিয়ে।
তনুকে দেখতে আসলো চারজন ছেলে সহ ,ছেলের বাবা, ছেলের মামা, এবং চাচা, তনু কে দেখে তাদের অনেক পছন্দ হয়ে গেল এবং তারা ওই দিনেই তনুর কে শোনার একটি আংটি দিয়ে ইনগেজমেন্ট করে গিয়েছে।
এদিকে রাকিবের কাছে ফোন দিয়ে অনেক কান্নাকাটি করছে তনু রাকিব বলল তোমার বাবাকে গিয়ে বল। তনু তার বাবা কেউও গিয়ে বলল কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে তনুর বাবা ছেলেপক্ষদের কথা দিয়ে দিয়েছে যে তারা দুইদিন পর তনুকে বিয়ে করতে আসবে।
এদিকে রাকিবের প্রথম ভালোবাসা হারাতে বসছে সে কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে একা একা ঘরে কান্না করছে। ছেলেরা কখন কান্না করে হয়তোবা মেয়েরা জানে না একটি ছেলে সহজে কান্না করে না। অতিরিক্ত ভালোবাসাই রাকিবের দু নয়ন বয়ে অঝোরে ঝরছে চোখের জল।
তনুর বিয়ে হয়ে গেল একপর্যায়ে জোরপূর্বক ভাবে ওই বিয়েতে তনুর মতামত ছিল না, একান্তই তার বাবা তাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছে তার বাবার পছন্দের ছেলের সাথে। রাকিবের কাছে তনুর মায়ের নাম্বার ছিল এবং এক সপ্তাহ পর তার মায়ের ফোনে ফোন দিয়ে ভালো বন্ধু জিজ্ঞাসা করল। তনুর মা বলল যে বাবা তুমি আমাকে আর ফোন দিও । আমাকে ক্ষমা করো তোমার ভাগ্যে আমার মেয়ে লেখা ছিল না।
এক বুক কষ্ট নিয়ে রাকিব আবারও তার কর্মস্থলে ফিরে আসলো কিন্তু রাকিবের কোন কাজে মন বসে না। ঠিক এক মাস পর রাকিবের ফোনে তনু ফোন দিল এবং বলল আমি আর পারছি না, আমি তোমাকে ভালোবাসি তোমার কাছেই থাকতে চাই। তুমি যদি আমাকে গ্রহণ না করো তাহলে আমি আত্মহত্যা করব। রাকিব বলল পাগলামো করো না আমি আছি।
রাকিব আরো বলল আমার দরজা তোমার জন্য সব সময় খোলা রয়েছে ।
রাকিবের মনে একটু সন্দেহ আসলো
তবে একটি সত্ত্বে যদি তুমি আমাকে পেতে চাও তাহলে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না আমি যতদিন না বাড়িতে আসবো। আমি তোমার সাথে আর আগের মতো কথা বলবো না। মাঝেমধ্যে তোমার মায়ের সাথে যোগাযোগ রাখব।
রাকিবের সব কথা মেনে নিয়ে মেয়েটি আবার ডিভোর্স নিল তার স্বামীর কাছ থেকে। এখনো পর্যন্ত এই সম্পর্ক এমনই আছে রাকিব মাঝেমধ্য তনুর মায়ের সাথে কথা বলে। রাকিব তনুর ধৈর্য দেখতে চাই এবং তার ভালোবাসা কতটুকু এটাও দেখতে চাই।
তো বন্ধুরা অসমাপ্ত ফেসবুক প্রেমের গল্প এখানেই শেষ হয়েছে সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন
এই প্রত্যাশাই করি ( আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন)।
অসমাপ্ত ফেসবুক প্রেমের গল্প খুবই অনুভব করলাম আপনার গল্পটি, ভালো লাগলো আপনার গল্পের শেষ পর্ব ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।