মধ্যবিত্ত পরিবারের বাস্তব জীবনের গল্প
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
হ্যালো আমার প্রিয় বন্ধুরা,
শুভ বিকাল,
সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা, আশা করি সবাই ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অশেষ রহমতে আমিও ভাল আছি এবং সুস্থ আছি, আজ শনিবার নতুন আরো একটি আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থাপনা করতে এসেছি। আজকের বিষয়বস্তু হলো মধ্যবিত্ত পরিবারের বাস্তব জীবনের গল্প।
Edited by Canva
তাদের কোন নিজস্ব মাঠের জমি জায়গা ছিল না শুধুমাত্র বসত ভিটা ছাড়া, প্রতিদিন রহিম মিয়া অন্যের জমিতে মজুরি দিয়ে উপার্জন করত এক কথায় বলতে গেলে চলে যে অন্যের বাড়িতে কাজ করে তার জীবিকা অর্জন হয়।
বাড়িতে রহিম মিয়ার স্ত্রী গৃহিনী হিসাবে সাংসারিক কাজকর্ম করত তার পাশাপাশি গরু ছাগল ও হাঁস মুরগি লালন পালন করতো,
রহিমের ছেলের বয়স ছিল ৬ বছর এবং মেয়ের বয়স ছিল ১০ বছর তাই ছেলে ও মেয়েরা খুব একটা বাড়ির কাজে সহযোগিতা করতে পারত না কেননা তারা এখনই ছোট। মেয়েটি সবেমাত্র তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে আমাদের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে প্রাইমারিতে সরকারি হওয়ার কারণে কোন ফি নিত না। ফ্রী পড়াশোনা পাশাপাশি সরকার থেকে স্কুলের বই দিত।
রহিম মিয়ার পরিবারের সবাই খুশি যে তার মেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করছে। তার মেয়ে চতুর্থ শ্রেণি ওঠার পর স্কুলে প্রতিনিয়ত হেঁটে যেত আর হেঁটে আসতো হাফ কিলোমিটার দূর তার এই স্কুল। একদিন স্কুল ছুটির পর বাড়ি আসার পথে মোটরসাইকেলের নিচে পড়ে গুরুতর আঘাত পায়।
পাশ থেকে অনেক মানুষ ছুটে আসে গ্রামের ডাক্তার ডাক্তারকে খবর দিতে বলে কিছুক্ষণ পর ডাক্তার আসে এবং পরীক্ষা করে দেখে যে তার একটি পায়ে অনেক বেশি আঘাত পেয়েছে। পরবর্তীতে এক্সে করে দেখে যে তার একটি পা ভেঙ্গে গিয়েছে।
বাড়ির সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং রহিম মিয়া আরও বেশি চিন্তায় পড়ে যায় যে তার এই মেয়ের চিকিৎসা কিভাবে করবে কেননা তার একদিন কাজ না করলে ভালোভাবে খাওয়া হতো না দিন আনা দিন খাওয়া ছিল এমন পরিস্থিতিতে। কিভাবে তার মেয়ের চিকিৎসা করবে এই চিন্তায় আরো ভেঙ্গে পড়ে।
কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ার কারণে রহিম মিয়ার কোন কাজ ছিল না, একটি প্রবাদে আসে যে মরার ওপরে খাড়ার ঘা, মধ্যবিত্ত পরিবারের সাথে ঠিক এমন অবস্থায় হয় যেটা কল্পনার বাইরে।
মধ্যবিত্ত পরিবারের কোন ব্যক্তিরা মানুষের কাছে হাত বাড়তে চাইতে ও পারে না তাদের বিবেকের বাঁধে মধ্যবিত্ত পরিবারের কেউ যদি না খেয়ে থাকে তবুও কারো কাছে হাত পাতবেনা এটাই যেন তাদের নীতি।
এমত অবস্থায় রহিম মিয়া কি করবে ভেবে পাচ্ছে না তাই একজন তাকে বুদ্ধি দিল সমিতি থেকে কিছু টাকা উঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। তাই রহিম মিয়া দশ হাজার টাকা কিস্তি উঠালো। তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য এবং সংসার চালানোর জন্য।
এভাবে কিছুদিন কেটে যায় মেয়েটা পুনরায় সুস্থ হয়ে ওঠে আবারো স্কুলে যাই আগের মত। কিন্তু রহিম মিয়ার মাথায় দুশ্চিন্তা আরো বাড়তে থাকে কেননা প্রত্যেক সপ্তাহে সমিতির কিস্তি দিতে হয় রহিমা মিয়ার চিন্তা করল যে রাতেও কাজ করে সমিতিটা শোধ করব।
কিছুদিন পর রাতের কাজ হিসেবে বেছে নিল রহিম মিয়া অটো রাইস মিলের। দিনে শে মাঠে আধঘন্টা কাজ করবে এবং রাতে আরও সাত ঘন্টা কাজ করবে এভাবেই ৬ মাস পেরিয়ে যায় একদিন হঠাৎ করে রহিম মিয়া রাতের কাজের অবস্থায় একটু ঘুমের ঝিমটে আসে পরক্ষণে তার হাতটি রাইস মিলের বেল্টের সাথে জড়িয়ে এবং সে হঠাৎ জোরে চিৎকার দিয়ে ওঠে আশেপাশের যারা কাজ করে তারা ছুটে আসলো এবং ঘটনাস্থলে দেখল যে তার হাতের কব্জি কেটে ঝুলে আছে খুবই মর্মান্তিক ঘটনা ছিল এটা।
বাস্তব জীবনে এমন কিছু মর্মান্তিক ঘটনা রয়েছে যে কেউ যদি শোনে তাহলে তার গায়ের লোম হাড়িয়ে যাবে। রহিমের পরিবারের মত হাজারো পরিবার রয়েছে এমন। রহিমের চিকিৎসার জন্য অটো রাইস মিলের মালিক কিছু টাকা সাহায্য করল এবং আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে কিছু টাকা সাহায্য পেল। কিন্তু কি হবে এই টাকা পয়সার তার একটি হাত তো চলে গেছে।
এখনো পর্যন্ত ওই পরিবারের অবস্থা তেমনি আছে সবাই তাদের জন্য দোয়া করবেন। লেখাটি কেমন হয়েছে অবশ্য কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।
আমি একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আপনার লেখার সাথে অনেক মিল আছে আমার জীবনের। সত্যি মধ্যবিত্তরা এমনভাবে জীবন পরিচালনা করে না কারো কাছে চাইতে পারে না নিজের ইচ্ছা ঠিকমতো পূর্ণ করতে পারে। তারপর আমি মনে করি আমি নিজে অনেক সুখী বেশি টাকা থাকলে যে সুখ আসবে তা সব সময় সঠিক নয়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।
আসলে মধ্যবিত্ত পরিবারের অবস্থা এমনই হয়! পরিবারের মাথার যদি কোন সমস্যা হয়ে যায়! তাহলে পুরো পরিবারটাই ভেঙে পড়ে।
আপনার লেখাটি পড়তে গিয়ে বেশ খারাপ লাগলো! সৃষ্টিকর্তার কাছে একটা কথাই বলব! সৃষ্টিকর্তা যেন তাদের পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যকে,,, এই দুঃখ সইবার তৌফিক দান করেন।
আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সব সময় ভাল রাখুক সুস্থ রাখুক এবং পরিবারটা ঠিকমতো চলতে পারে এমন একটা ব্যবস্থার করা হোক। এটাই কামনা করছি আপনার লেখাটি বেশ ভালো হয়েছে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।