ক্রিকেট খেলার সাথে জড়িয়ে আছে কিছু স্মৃতি।

in Incredible India10 months ago

বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)।

আমাদের সবার জীবনে কিছু না কিছু পুরনো স্মৃতি রয়েছে যেগুলো আমাদের মনের ভিতরে গাধা। কথায় আছে শ্রুতি কে ভোলা যায় কিন্তু স্মৃতিকে ভোলা যায় না। এখান থেকে ১৩ বছর আগেকার কথা তবুও কেন যেন প্রত্যেকটা লাইন মনে পড়ছে কিভাবে সেই দিনগুলো পার করে আসছি।

FB_IMG_1692805428837.jpg
ছবিটি ফেসবুক থেকে নেওয়া নিজের প্রোফাইল থেকে।
আমার ফেসবুক প্রোফাইল লিংক,
https://www.facebook.com/mdshine.khan.5?mibextid=ZbWKwL

মালয়েশিয়ায় এসে একটি টুর্নামেন্ট জেতার ট্রফি।

গ্রামের ভিতরে প্রাইমারি স্কুল মাঠে যেভাবে সময়গুলো পার করছি তা কখনোই ভুলতে পারবো না, স্কুল ছুটির দিনে সকাল থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু হতো আর দুপুর পর্যন্ত এই খেলা চলত দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করেই বিকালে আবারও খেলার মাঠে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেলতাম। আসলে খেলার প্রতি অন্যরকম একটি নেশা ছিল।

pexels-patrick-case-3628912.jpgছবির উৎসব

আমরা দুই ভাই গ্রামের ভেতরে টপ খেলোয়াড় যেখানেই খেলা হতো না কেন আমাদেরকে ডেকে নিয়ে যেত। আমাদের গ্রামেরই একটি টিম ছিল বেত্রাবতী তরুণ সংঘ ক্রিকেট একাদশ আমাদের দলের নাম।

বোলিং এবং ব্যাটিং করতে খুবই পারদর্শী ছিলাম আমরা দুই ভাই মাঝেমধ্যে তো আমরা দুই ভাই ওপেনিং ব্যাট করতে নামতাম মাঠে। আমার চেয়ে আমার ছোট ভাই আরো বেশি ভালো খেলতো। এখন এগুলো সব স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার জীবনে।

pexels-yogendra-singh-4770720.jpgছবির উৎস

আমার আব্বু খেলাধুলা আবার বেশি পছন্দ করে না তাই আমাদেরকে সব সময় শাসন করতো খেলা না করতে যাওয়ার জন্য তবে,
আমাদের দুই ভাইয়ের খেলার নেশা এমন ছিল যে আপনারা শুনলে একটু হতভম্ব হয়ে যাবেন। একদিন আমাদের টিমের টুর্নামেন্টের খেলা ছিল পাশের একটি গ্রামে। ঐদিন আবার আমাদের বাড়িতে প্রচুর পরিমাণ কাজের চাপ যেটা না করলেই হবে না এবং অনেক বড় লোকশান হয়ে যাবে আমার আব্বুর। আমার আব্বু জানতে পেরেছে যে আমরা সকালে দুই ভাই খেলতে যাব তাই রাতে আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছে যে কালকে কিন্তু কোথাও যাস না, আমরা আবার আব্বুর উপরে কোন কথা বলতাম না তাই চুপচাপ ছিলাম। সকালে আব্বু যখন ফরজের নামাজ পড়তে গিয়েছে তখন আমরা দুই ভাই খেলার সমস্ত জিনিস গুছিয়ে বাড়ি থেকে চলে আসি। খেলা শুরু হবে আটটার সময় আমরা দুই ভাই মাঠে উপস্থিত হই ছয়টার সময় অনেকেরই ঘুম ভাঙ্গে নাই তখনো, স্কুলের বারান্দায় বসে আছি ঘন্টাখানেক পরে পাশে একটি দোকান খুললো দোকান থেকে দুই ভাই রুটি আর পানি খেয়ে নাস্তাটা সেরে নিলাম।

এদিকে আব্বু আমাদেরকে খুঁজছে এবং আম্মুর উপরে বকাবকি করছে। আমরা খেলাধুলা শেষ করে যখন বাড়িতে ফিরি ততক্ষণে আব্বুর মনে অনেকটাই রাগ জমে গেছে। আম্মুর সাথে বলে দিয়েছে যে বাড়িতে আসলে ওদের খাওয়া দাওয়া বন্ধ। আব্বুর উপরে কেউ কথা বলে না তাই আমরা দুই ভাই চুপচাপ বসে রইলাম। এদিকে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হল কিন্তু কিছুই খেতে দেয় না খোদায় পেট চেপসে গেছে। কিছুক্ষণ পরে আম্মু এসে বলছে যে তোর আব্বু ঘুমিয়ে পড়লে তারপর রান্নাঘরে ঢুকে আস্তে করে খেয়ে আসিস তোদের দুই ভাইয়ের জন্য ভাত বাড়া রয়েছে। আব্বুর মন যতই শক্ত হোক না কেন মায়ের মন তুলার মত নরম সন্তান যদি না খেয়ে ঘুমাই তাহলে মায়েরও ঘুম আসে না।

আব্বু আমাদেরকে খেলাধুলার জন্য যতই বাধা দিক না কেন । আম্মু আমাদেরকে তলে তলে সাপোর্ট দিতো খেলাধুলার জিনিসপত্র বেশি অংশ আমার আম্মু কিনে দিত।

যতদিন বেঁচে থাকব !
এই পৃথিবীতে ,
স্মৃতিগুলো জীবিত থাকবে
ততদিন নিজের সাথে।

তো বন্ধুরা পুরনো কিছু স্মৃতি আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি । আপনাদের জীবনে এমন স্মৃতি যদি মনে পড়ে তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশাই করি আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।

অসংখ্য ধন্যবাদ আমার ওই সকল বন্ধুদের যারা আমার আর্টিকেলটি পরিদর্শন করছেন।

Sort:  
Loading...

ভাই এখন মানুষের কাছে শুধু খেলা ধুলা স্মৃতি হয়ে থাকে কারণ আমাদের মাঝখান থেকে খেলাধুলা একদম উঠে গেছে। আপনাদের সময় হয়তো অনেক খেলাধুলা করেছেন কিন্তু আমাদের সময় এখন শুধু মোবাইল ফোন দিয়ে অনলাইন এর গেম খেলা হয়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার স্মৃতিময় মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভাই আপনি ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর পরিবার ও নিজের খেয়াল রাখবেন।

 10 months ago 

ভাই আপনি একদম ঠিক বলছেন আমরা যে পরিমাণ খেলাধুলা করেছি এখনকার ছেলেরা সে পরিমাণ খেলাধুলা করে না অনলাইন গেম খেলতে বেশি স্বাচ্ছন্ন বোধ করে। আসলে এতে করে এই প্রজন্মের ফিজিক্যাল অনেক সমস্যা হচ্ছে। ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোষ্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 66137.20
ETH 3543.37
USDT 1.00
SBD 2.56