মালয়েশিয়ান প্রবাসীর বিয়ের গল্প।

in Incredible India7 days ago

পরম করুণাময়! অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
হ্যালো আমার প্রিয় বন্ধুরা,

শুভ সকাল

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমার নাম মোঃ শাহিন আপনাদের সাথে যুক্ত রয়েছি মালয়েশিয়া থেকে। আজকে আপনাদের মাঝে আমি শেয়ার করতে যাচ্ছি নতুন একটি গল্প যেটা ২০১৯ সালে আমার সামনেই ঘটেছিল। আমি মালয়েশিয়ায় তখন নতুন এসেছি, আনুমানিক প্রায় দুই বছর হবে।

heart-529607_1280.jpgsource

তখন আমি মালেশিয়ান ভাষা খুব একটা ভালো জানতাম না আমার রুমের সামনেই থাকতো মালয়েশিয়ান একটি পরিবার তার দুইটি মেয়ে সব সময় বারান্দায় এসে গল্প করত । আমাদের রুমের বারান্দা থেকে তা ভালোভাবেই দেখা যেত। আমি যেহেতু মালয়েশিয়ান ভাষা খুব একটা পারদর্শী ছিলাম না। তাই তাদের সাথে বেশি কথা বলতাম না । তবে তারা কথা বলতে চাইতো তবে আমি খুব একটা আগ্রহী দেখাতাম না । মনের ভিতরে ভয় কাজ করতো কেননা তখন আমার ভিসা ছিল না।

যাক এভাবে কয়েকদিন কেটে যায় তারপর হঠাৎ করে আমার রুমমেট এর একটি বন্ধু আসে। সে মালয়েশিয়াতে আবার দীর্ঘদিন রয়েছে তার মুখে শোনা সে নাকি ১০ বছর যাবত মালয়েশিয়াতে একবারও ছুটিতে যাই নাই। আমার রুমমেট আবার ঘর মেরামতের কাজ করে আমি কোম্পানিতে জব করি । আর আমার রুমমেটের যে বন্ধু এসেছে সে আমার রুমমেট এর সাথেই কাজ করতে শুরু করে।

marriage-7201450_1280.jpgsource

আমার রুমমেটের বন্ধুর সাথে আমারও ভালো সম্পর্ক হয়ে যায় । আমার রুমমেট এর বন্ধুর নাম হল জলিল, আমি নামটি উল্লেখ করছি এজন্যই গল্পটি বলতে সুবিধা হবে । জলিল বেশ কিছুদিন আমার বন্ধুর সাথে কাজ করছে তারা প্রতিদিন পাঁচটার সময় ডিউটি থেকে বাসায় আসতো। তারপর বিকালবেলা বারান্দায় বসে বসে সামনের বাসার মেয়েদের সাথে বিভিন্ন রকম গল্প করত। তার বাড়িতে বাপ, মাও কিছু মনে করত না। এভাবে কিছুদিন কেটে যায় তারপর জলিলের সাথে একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেয়েটার ও জলিলকে বিশ্বাস করতে শুরু করে এবং ভালোবাসার সম্পর্ক হয়ে ওঠে।

couple-8019370_1280.jpgsource

এক পর্যায়ে মেয়েটা তার ফ্যামিলিকে সমস্ত কথা বলে প্রথম পর্যায়ে বাবা ও তার ফ্যামিলির লোকজন নাকচ করে দেয় কেননা বাংলা দেশির সাথে তার মেয়ের বিয়ে দেবে না । এভাবে আরো কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে যায় মেয়েটা ধীরে ধীরে তার ফ্যামিলিকে বোঝাতে থাকে মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ছেলেকে বলল যে আমরা রাজি তবে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে হলে নগদ ২০ হাজার ইঙ্গিত দিতে হবে।

মালয়েশিয়া সাধারণত কাবিনের টাকা পরিশোধ করার পর বিয়ে সম্পন্ন হয়। ছেলেকে অবশ্যই ক্যাশ টাকা দিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসতে হবে। যাইহোক জলিল সব কথা শোনার পর তার বাড়িতে কথা বলে বাংলাদেশে তার বাপ মা রাজি ছিল না এক বাপের এক ছেলে মালয়েশিয়াতে বিয়ে করবে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিল না।

wedding-6873668_1280.jpgsource

জলিল ও তার ফ্যামিলিকে ভালোভাবে বোঝালো কয়েক মাস পরে দুই ফ্যামিলির সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন হল। আমরাও সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম এবং অনেক মজাও করছি অনেকদিন পরে এই গল্পটি আপনাদের কাছে শেয়ার করতে পেরে আমার অনেক ভালো লাগছে।

এর আগেও আমি এই গল্পটি শেয়ার করতে চেয়েছিলাম কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত জলিলের সাথে আমার তেমন কোন যোগাযোগ ছিল না তার অনুমতি নিয়েই এই গল্পটি আমি আমার মতো করে সাজিয়ে লিখেছি । লেখার পরে আমি তাকে সেন্ড করেছি। সে পড়ে তো অবাক কিভাবে এত কথা আমি মনে রেখেছি এতদিন পর্যন্ত। যেহেতু আমার চোখের সামনে এই ঘটনাটি ঘটছে । তাই ঠান্ডা মাথায় আস্তে আস্তে করে গল্পের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সাজাতে পেরেছি।

বন্ধুরা এটাই ছিল মালয়েশিয়ান প্রবাসী বিয়ের গল্প ।গল্পটি কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আজকের মত আমি এখানে বিদায় নিচ্ছি সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশাই করি আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।

Sort:  
 7 days ago 

আসলে কোন বাবা মা চাইবে না তার সন্তানকে বাইরে কোন জায়গায় বিয়ে এর কারণে হয়তো সকল বাবা-মায়ের প্রথম দিক থেকে রাজি না হলেও সন্তানের মুখের দিকে অবশ্যই রাজি হয়, যাইহোক আপনি আপনার বন্ধু জলিলের বিয়ের সম্পর্কে সকল কথা আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন এটা আসলে অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছেন যেটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে আমি দোয়া করি আপনার বন্ধু জলিল সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 7 days ago 

একদম তাই বাবা-মায়ের অনেক স্বপ্ন থাকে তার ছেলেকে দেখে শুনে বিয়ে দেবে। আসলে ভাই প্রেমে পড়লে আর পেছনের কোন কথা মনেই থাকে না শুধু মনে হয় ভালোবাসার মানুষটা পেলেই আমি সফল।

ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যর জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।

 7 days ago 

আপনাকে অসংখ্যভাবে ধন্যবাদ জানাই আমার এই কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়ার জন্য আসলে প্রবাসীদের বিয়ের কথা না বললেই নয় কারণ তারা অনেক কষ্টই করে এবং আপনি যে বিয়ের গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছিলেন সেটা আসলে অনেক সুন্দর ছিল।

Loading...
 7 days ago 

বিয়ে একটি পারিবারিক বন্ধন। জীবনের বাকী সময়টা একসাথে সুখে দুঃখে কাটানোর জন্য একজন সঙ্গী নির্বাচন করা হয়। তাই হুট করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া সব সময় মঙ্গল বয়ে আনেনা। জলিল ভাইয়ের কাহিনীটি শুনে ভালো লাগলো। একটা কথা আছে প্রেম মানেনা কোন বাঁধন। তাই তো সে ভিন দেশে গিয়েও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী কাবিনের টাকা আগে থেকেই পরিশোধ করতে হয়। এটা একটা ভালো নিয়ম আমি মনে করি। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 7 days ago 

আপনি একদম ঠিক বলেছেন আসলেই ভালোবাসা কোন বাঁধাই মানে না। দুটি মনের মিল থাকলে যে কোন অবস্থাতে যে কোন পরিস্থিতিতে ভালোবাসা ফুটিয়ে রাখা যায়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ভাই ভালো থাকবেন।

 7 days ago 

প্রতিটি বাবা মা চায় তার মেয়ে বা ছেলে সুখে থাক আর এই কথা চিন্তা করি অনেক সময় অনেক কিছু মেনে নিতে পারে না আবার ছেলে মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সেটা মেনে নেয়।।

জলিল ভাইয়ের গল্পটা বেশ ভালই লেগেছে। চাইতে বেশি ভালো লেগেছে যে মালয়েশিয়াতে বিয়ের আগে মেয়ের কাবিন বুঝে দিতে হয়।।

 4 days ago (edited)

সত্যিই তাই কাবিনের টাকা বুঝিয়ে দেওয়া প্রত্যেক পুরুষের দায়িত্ব। তবে এটা বিয়ের আগেই পরিশোধ করে দেওয়াই উত্তম।

ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টে পড়ে খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 3 days ago 

একদম ভাই কাবিনের টাকা প্রতিটি পুরুষের দেওয়া উচিত উচিত কিন্তু অনেকেই এটা পরিশোধ করে না বলতে গেলে বেশিরভাগ মানুষই করে না।।

 2 days ago 

ভাই আপনি শুরু করেন তাহলে আপনার দেখা দেখি সবাই কাবিনের টাকা পরিশোধ করবে আমারও তো ইচ্ছা আছে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করে তারপর বিয়ে করবো।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়ার জন্য ভালো থাকবেন।

 2 days ago 

আপনার ইচ্ছা আছে জেনে ভালো লাগলো ভাই কিন্তু বর্তমান সময়ে মেয়ের বাবারা কাবিন অতিরিক্ত তোলার চেষ্টা করে এটাই সমস্যা। আমি যতটুকু দিতে পারব ততটুকুই যদি উঠায় অবশ্যই দেব।

 5 days ago 

খুবই মনোযোগ দিয়ে পড় ছিলাম, খুব ভালো লেগেছে। তবে আপনার বন্ধু কিন্তু ভালো করেছে। ইসলামের শরীয়ত মেনে বিয়ের কাজ সম্পূন্ন করেছেন। আমাদের ধর্মে কিন্তু আছে বিয়ের আগে দেন মোহরের টাকা শোধ করার।
তাদের জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।

 4 days ago 

আমি এই লেখার মধ্যে দুটি দিক তুলে ধরছি আপনি খুব ভালোভাবেই সেটি অনুধাবন করতে পেরেছেন যেটা আমি অন্য কারোর কমেন্টে দেখি নাই। আমাদের প্রত্যেক মুসলিমের উচিত দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া।

আর এখন এর উল্টোটাই চলছে শ্বশুরবাড়ি থেকে নগদ টাকা গাড়ি না হলে ছেলেরা বিয়ে করতে চায় না এটা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 4 days ago 

হ্যাঁ এটা কিন্তু একদম ঠিক বলছেন, বর্তমান সময়ে এমনটাই হচ্ছে বেশি শাশুড়িদের তো চাওয়া থাকে মেয়ে কে কয় ভরি স্বর্ণ দিবে, বাইক দেওয়া হবে কিনা, যদিও বর্তমান সময়ে এসে একটা মেয়ে একটা বাবা-মা কত কষ্ট করে , আদর ভালোবাসা দিয়ে বড় করে।

বলতে গেলে তাদের বড় সম্পত্তি তো দিয়ে দেয়। এরপরেও কিন্তু বাবা মা গরিব , হোক না কেন তাদের মেয়ে কে মাথা থেকে পা পর্যন্তই সাজিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে,কিন্তু তবুও সমাজে কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের কে হাজার হাজার দিয়ে খুশি করানো যায় না।

 2 days ago 

বেশ কয়েকবার আগে আগে একটা নিউজ বেশ ঘুরাঘুরি করেছে চোখ এর সামনে দিয়ে আর সেটা হলো, মালয়েশিয়ায়র সরকার বাংলাদেশ থেকে আর মানুষ নিবে না কারন বাংলাদেশের ছেলেদের প্রতি নাকি মালয়েশিয়ান মেয়েরা খুব আকৃষ্ট হয়ে পরে।
আজকে আপনার লেখা পড়ে মনে পরে গেল। তবে মালয়েশিয়াতে কাবিনের টাকা পরিশোধ করে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয় এটা জানা ছিলো না। আপনার লেখা পড়েই জানতে পারলাম।
এমন একটা ব্যাতিক্রমি লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 2 days ago 

আপনি যে নিউজটা দেখেছেন এটা কিন্তু একেবারে মিথ্যা নয়। বাংলাদেশের ছেলেদের প্রতি মালয়েশিয়ার অনেক মেয়েরাই আকৃষ্ট হয় শুধু একটাই কারণে বাংলাদেশের ছেলেরা নিজের স্ত্রীর অনেক বেশি যত্ন নেয়।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টে পড়ে খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 58068.07
ETH 3133.85
USDT 1.00
SBD 2.44