চিরকালের বন্ধুত্ব
চিরকালের বন্ধুত্ব
নদীর ধারে সবুজ ধানক্ষেত আর বাঁশঝাড়ে ঘেরা ছোট্ট একটা গ্রামে থাকত দুই বন্ধু- আকাশ ও রানা। ছোটবেলা থেকেই তারা একসাথে বড় হয়েছেন। স্কুলে যাওয়া, নদীতে সাঁতার কাটা, গাছ থেকে কাঁঠাল খাওয়া তারা একে অপরের সঙ্গী ছিল।
source
আকাশ খুব শান্ত এবং বুদ্ধিমান ছিল। তিনি পড়াশোনা করতে ভালোবাসতেন এবং গ্রামের স্কুলে সর্বদা প্রথম হতেন। অন্যদিকে রানা ছিলেন একজন বিদগ্ধ এবং মজার মানুষ। পড়ালেখা খুব একটা পছন্দ করতেন না, তবে আকাশকে গ্রামের বিভিন্ন মজার কাজে যুক্ত করতে চাইতো। কিন্তু তাদের বন্ধুত্ব ছিল গভীর ও অটুট।
একদিন রানা স্কুল থেকে ফিরে এসে আকাশকে ডাকলো, আকাশ, আজ আমরা নদীর ওপারে যাচ্ছি। শুনলাম ওখানে একটা পুরনো বাড়ি আছে, যেটা একটা ভূতের বাড়ি!
আকাশ প্রথমে রাজি হয়নি। না, রানা, ভুতুড়ে কিছু নেই। আর আমি আজ বই পড়ব, কাল পরীক্ষা আছে। কিন্তু আকাশ শেষ পর্যন্ত রানার পীড়াপীড়িতে রাজি হয়।
দুজনেই নদীর ধারে গিয়ে নৌকায় করে ওপারে পৌঁছলাম। সেই পুরানো বাড়িটি সত্যিই একা দাঁড়িয়ে ছিল। চারিদিক গাছপালা আর নিস্তব্ধতা। একটু ভয় পেলেও, রানা তো রানা! সে সাহস করে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করল।
আকাশ দূর থেকে বলল, রানা, সাবধান! কিছু হলে!" কিন্তু রানার কোনো ভয় ছিল না। তিনি হাসিমুখে বললেন, "ভয় পেও না আকাশ, আমি আছি!
হঠাৎ রানার পায়ের তলায় মাটির চাদর ভেঙ্গে পড়ে যায়। আকাশ দৌড়ে এসে দেখে রানা একটা গর্তে আটকে আছে। সে আতঙ্কিত হয়ে পড়ল, কিন্তু তার মধ্যে থেকে একটা সাহস বেরিয়ে এল। আকাশ রানাকে কাছের কিছু লম্বা লতা ও গাছের ডাল দিয়ে টেনে নিয়ে গেল।
রানা সামান্য আহত হলেও আকাশের সহায়তায় সে উঠতে সক্ষম হয়। তার চোখে কৃতজ্ঞতা এবং প্রশংসার ঝলক। রানা হাসতে হাসতে বলল, তুমি না থাকলে আজ এখানেই আটকে যেতাম”।
আকাশ হেসে বলল, বন্ধু তো বন্ধু, বিপদে পাশে থাকাই আমাদের কাজ।
source
সেদিনের অভিজ্ঞতার পর রানা আর আকাশের বন্ধুত্ব আরো দৃঢ় হয়। তারা বুঝতে পেরেছিল যে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও একে অপরের জন্য থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই বন্ধুত্ব তাদের সারাজীবন স্থায়ী ছিল, এবং গ্রামের সবাই তাদের বন্ধুত্বের গল্প বলে বড় হয়েছে।
দিন যেতেই আকাশ আর রানা একসাথে থাকতে লাগলো। তারা একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে একে অপরকে উত্সাহিত করেছে এবং একসাথে জীবনের সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে।
বন্ধুত্বের এই গল্পটি ছিল তাদের গ্রামের গর্বের গল্প, যেখানে বন্ধুত্ব শুধু মজা এবং আনন্দের নয়, বরং একে অপরের বিপদে পাশে দাঁড়ানো এবং জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে একে অপরের হাত ধরার কথা।
রানার সাহস আর আকাশের বুদ্ধিমত্তা এই গল্পে একসাথে মিলে এক বন্ধুত্বের নিদর্শন হয়ে উঠেছে। এই গল্পটা পড়ে মনে হয়, সত্যিকারের বন্ধুত্ব মানে বিপদে-আপদে পাশে থাকা, আর তা শুধু মজার জন্য নয়, বরং জীবনের প্রতিটি কঠিন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যও প্রয়োজন। আকাশের মতো বন্ধু পেয়ে রানা যেমন ভাগ্যবান, তেমনি রানার সাহস আকাশের জন্যও অনুপ্রেরণা।
অনেকদিন পর আপনার পোস্ট দেখে খুব ভালো লাগলো, আপনি বন্ধুত্ব নিয়ে আকাশ এবং রানার খুব সুন্দর গল্প শেয়ার করেছেন, আমাদের জীবনে প্রকৃত বন্ধু সেই যে বিপদের সময় আমাদের পাশে থাকে, সময় পাশে থাকে না সে কখনো প্রকৃত বন্ধু হতে পারে না, ধন্যবাদ বন্ধুত্ব নিয়ে সুন্দর পোস্টে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।