উলিপুর পুকুরপাড় পার্কে পড়ন্ত বিকালে
হ্যালো বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।
দ্বিতীয়ত আজকে সকালে প্রচন্ড ঠান্ডা অনুভূত হয়। যদিও কয়েকদিন থেকেই ঠান্ডা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আজ সারাদিন সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি একদম। সকালবেলা মনে হচ্ছিল কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে চারপাশ। অল্প কিছু দূরেও ঠিকমতো দেখা যাচ্ছে না। এমনিতেই ঠান্ডা সহ্য হয় কিন্তু যখন শিরশির বাতাস শুরু হয় তখন কোনভাবেই সহ্য করা যায় না।
যাইহোক কুয়াশার চাদর ভেদ করে আমাকে যেতেই হত। কারণ আমার এখনো ক্লোজিং বাকি আছে বছর শেষ হতে চললো। আজকে বাসা থেকে বের হয়ে আশেপাশে কোথাও রিক্সা চোখে পড়ল না আর পাওয়া গেলেও হয়তো আমি উঠতাম না। ঠান্ডার সঙ্গে বাতাস রিকশায় উঠলে টিকতেই পারবো না। হাঁটতে হাঁটতে স্ট্যান্ডে চলে গেলাম রিক্সা না নিয়েই। গাড়িতে উঠার কিছুক্ষণ পরেই গাড়ি ছেড়ে দিল।
খুব অল্প সময়ের মধ্যে উলিপুর পৌছে গেলাম। আজকে প্রথম এবং প্রধান কাজ এখানেই। কারণ আমার উলিপুরের কলিগকে নিয়েই ঘটনা সূত্রপাত। ঘটনা বলতে ক্লোজিং নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। আজকে ছিল উলিপুরের হাটের দিন স্বাভাবিকভাবেই প্রচন্ড ভিড় থাকে সপ্তাহের হাট গুলিতে। আজকেও তার ব্যতিক্রম নয়।
আমার কলিগ আশরাফুল নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে অনেক দেরিতে আসলো। প্রচন্ড ভিড়ের মধ্যে বাজারে কোন ভাবেই অপেক্ষা করা যাচ্ছিল না। তাই বাজারের পাশে একটি নিরিবিলি জায়গা দেখে বসে পড়লাম। মনে প্রচন্ড অস্থিরতা থাকলেও আজকে এই পুকুর পাড়ে বসে আমার কেন জানি না খুব ভালো লাগছিল। আবহাওয়া সঙ্গে পরিবেশের খুব মিল খুঁজে পেলাম। সেটাই হয়তো ভালোলাগার অন্যতম কারণ।
পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে রেলিং ধরে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম। আজকের আবহাওয়াটা মোটেও চঞ্চল নয় কেমন যেন মুখ গোমড়া করে আছে। এমন পরিবেশে আসলে কোনোভাবেই মন ভালো থাকে না। আমার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজকে পুকুর পাড়েও কোন চাঞ্চল্য নেই। সবাই যেন কেমন ঝিমিয়ে আছে। তাছাড়া লোকজন আজকে খুব কম লক্ষ্য করলাম।
প্রচন্ড ঠান্ডা ও শিরশির বাতাসে কেউ হয়তো বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাহস পায়নি। আমার মত দু একজন খেটে খাওয়া মানুষ ছাড়া সবাই বাড়িতে লেপের ভিতর ঢুকে আছে হয়তো। প্রয়োজনের তাগিদে আমাদের বাইরে আসতেই হয়। যে কাজ করে আমাদের জীবিকা নির্বাহ চলে সেই কাজের শ্রদ্ধা রেখেই বলছি।
শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষা কোন সময়ে আমরা ঘরে বসে থাকি না। এমনকি করোনা কালীন লকডাউনের সময় যখন সবকিছু বন্ধ ছিল তখনও আমরা যারা ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে জব করি তারা বসে থাকার সুযোগ পাইনি। ইচ্ছা করলে কাজে ফাঁকি দিয়ে ঘরে বসে থাকতে পারতাম। কিন্তু আমাদের প্রত্যেককেই নিজ নিজ কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তবেই সফলতার মুখ দেখা যাবে।
পুকুরের চারদিকে ঢালাই করা সুন্দর বাঁধানো রাস্তা। একদম পরিষ্কার ঝকঝকে সম্পূর্ণ রাস্তা। পুকুরের চারদিকে হাঁটাহাঁটি করার অনেক ভালো সুযোগ আছে। বিশেষ করে বিকেলবেলা ও সকালে অনেকেই হাঁটার জন্য এখানে চলে আসে। যারা উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিকসে আক্রান্ত তারা এখানে প্রায়ই ব্যায়াম করার জন্য আসে। যানজট বিহীন খোলামেলা উন্মুক্ত জায়গায় হাঁটতে সবাই পছন্দ করে।
পুকুরের পশ্চিম পাশে সরকারি বালিকা বিদ্যালয় এবং শহীদ মিনার অবস্থিত। বাজার খুব কাছে হওয়ায় দিনের বেলা এই জায়গাটা জমজমাট থাকে। ঘোরাফেরা করার পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়া ও বসার ব্যবস্থা আছে। ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন এখানে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য কোন কমতি করা হয়নি।
উলিপুর পৌরসভার মেয়র সাহেব নিজ উদ্যোগে এই পুকুরটি সংস্কার করেছিলেন। সংস্কারের আগে পুকুরটি অনেক নোংরা ছিল ঠিকমত বসে থাকা যেতনা দুর্গন্ধের কারণে। আসলে ছোটখাটো এই কাজগুলো শহরের সৌন্দর্য অনেক বাড়িয়ে দেয়। যেটা হয়তো অনেকেই সমর্থ থাকলেও এড়িয়ে যায়। অথবা করার সুযোগ আছে কিন্তু কিছু খেতে না পারার কারণে সে কাজে হাত পড়ে না।
এই হচ্ছে সেই চটপটি, ফুচকা ও আচারের দোকান। এখানে এরকম মোট পাঁচটি দোকান আছে। এই দোকানগুলোতে সকাল-বিকাল, দুপুর সব সময় প্রচুর ভিড় থাকে। কিন্তু আজকে তেমন ভিড় লক্ষ্য করা গেল না। সম্ভবত অতিরিক্ত ঠান্ডা থাকার কারণে লোকজন বাইরে কম বের হয়েছে। শুধু দেখলাম কয়েকটা মেয়ে স্কুল ফাঁকি দিয়ে চেয়ারে বসে ফুচকা খাচ্ছে হা হা হা।
যাইহোক আমার অপেক্ষার প্রহরগুলো খারাপ কাটল না। চারদিকে হাঁটাহাঁটি করতে কিছুক্ষণ পর আমার কলিগ এসে কল দিল দেখা করার জন্য। অনেকটা সময় যে কখন পেরিয়ে গেল বুঝতে পারিনি। যে আসতে দেরি করছে জন্য আমি ছটফট করছিলাম এখন তার ফোন পেয়ে বিরক্ত লাগলো। মনে হচ্ছিল আরও একটু দেরি করে আসলে সম্ভবত ভালো হতো। আসলে ভালো সময় গুলো খুব দ্রুত অতিবাহিত হয়ে যায়।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি A-10 |
---|---|
ফটো | @mayedul |
লোকেশন | w3w location |
জ্বি ভাই, কর্ম জীবনে যেকোন বাধাই আসুক না কেন সেটা ভেদ করেই কর্মে যেতে হয়। বলছি শীতের কথা, চারিদিকে ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন ভেজা ভেজা দুবলা ঘাস। তবুও আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ অতুলনীয়।
ইদানীং অনেক শূত পড়েছে। প্রচুর হারে কুয়াশা আমাদের এদিকেও।
আপনার লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো।
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আসসালামু আলাইকুম
ওয়ালাইকুম আসসালাম।
আমার পোস্টটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।