একুশ আমাদের চেতনা
হ্যালো বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর আমরা একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাই। সেদিন থেকে আসলে আমাদের আনন্দের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। আমরা অনেক গর্বের সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করি।
কিন্তু বাহান্নের এই দিনে মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে রাজপথ কেঁপে উঠেছিল। পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনীর গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ আরো নাম না জানা অনেক ভাই শহীদ হয়ে যায়। মূলত তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা অনেক ভাব গাম্ভীর্যের মাধ্যমে ২১ শে ফেব্রুয়ারি পালন করি।
আসলে আমাদের শ্রদ্ধা জানানো শুধু একদিনের জন্যই সীমাবদ্ধ নয়। বরং প্রতিদিন প্রতিটা মুহূর্ত আমাদের শহীদদের জন্য প্রার্থনা করা উচিত। যাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে আমরা বাংলা ভাষার সেই মর্যাদা রাখতে পারছি কোথায়।
আমরা অতি আধুনিক হয়ে বাংলা ভাষাকে বিকৃত করে তার মর্যাদা নষ্ট করছি। অথচ এই বাংলা ভাষাকে রক্ষা করার জন্য কত ভাই শহীদ হয়েছেন। বাংলা ভাষাকে রক্ষা করার জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে।
পাশ্চাত্যের মরীচিকাময় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দিয়ে আমরা যেন বাংলা ভাষার বিকৃত না করি। সেদিকে আমাদের সকলকে সচেষ্ট হতে হবে। ভাষার জন্য যুদ্ধ করে প্রাণ দিয়েছেন এমন ঘটনা বর্তমান বিশ্বে আর কখনো হয়নি। আসলে একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় চেতনা।
আমরা দেশীয় সংস্কৃতির সাথে পাশ্চাত্যের সংস্কৃতি মিলিয়ে ফেলেছি। আমি আমার ছেলে মেয়েদের আমাদের ইতিহাস সম্বন্ধে সঠিক ধারণা দেওয়ার জন্য শহীদ মিনারে নিয়ে গেছিলাম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের সংস্কৃতির সঠিক ধারণা তারা পাবে না।
শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটি দিনে শহীদদের স্মরণ করা আমি কখনোই এটাতে বিশ্বাসী ছিলাম না। তাই আমি একুশে ফেব্রুয়ারির দিনে শুধুমাত্র নিয়ম মানার জন্য কখনো যেতাম না। আর এখন ছেলে মেয়েদের নিয়ে যেতে হচ্ছে, তাদের মাঝে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য।
শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার পর ছেলে মেয়েদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে আমাকে। অবশ্য তাদের জানার আগ্রহ আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে। আমার খুব ভালো লেগেছে দেখে, শহীদ মিনারের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে যাওয়ার সময় তাদেরকে জুতা খুলতে বলতে হয়নি।
তবে তাদের প্রশ্ন ছিল জুতা পড়ে যাওয়া যাবে না কেন? আমরা যে শহীদদের সম্মানার্থে এই কাজটি করি এটা তাদের বুঝিয়ে বললাম। এই কথা শোনার পর আমার ছোট ছেলেটি পায়ের মোজা খুলে হাতে নিয়েছিল। জানিনা এটা সে বুঝে করলো নাকি না বুঝে, তবে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছিল দেখে।
সবশেষে এটা বলতেই হয় যে একুশ আমাদের চেতনা। এই চেতনায় আমরা বারবার উজ্জীবিত হয়ে সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পেরেছি। ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে বুকে লালন করে পরবর্তীতে আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামে বিজয় লাভ করেছি।
বাঙালি জাতি বাংলা ভাষার জন্য যেভাবে রক্ত দিয়েছে সেরকম দৃষ্টান্ত বর্তমান বিশ্বে বিরল। ভাষা আন্দোলন থেকেই আমদের গৌরবজ্জ্বল স্বাধীনতা সংগ্রামের রূপ নিয়েছিল। কিন্তু আফসোস আমরা স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে পারছি না।
ভাষা আন্দোলনের মাসে আমরা আবারো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই বাংলা ভাষাকে রক্ষা করার জন্য। আমরা যেন কখনোই বাংলা ভাষার বিকৃতি না করি। তাহলেই প্রকৃতপক্ষে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। আর এটাই আমার ভাষা শহীদের কাছে প্রতিজ্ঞা।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।
শহীদদের প্রতি সম্মান শুধু এই দিনেই নয়, প্রতি মোনাজাতে মোনাজাতে রাখি। সর্বদা শহীদদের প্রতি সম্মাননা ও দোয়া করা আমাদের জন্য উচিত৷ অন্তত তাদের আত্মার শান্তির জন্য।
আপনি আপনার পোস্টে শহীদদের প্রতি সম্মান দেখে খুবই ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি এই দিনে আমাদের বাংলা ভাষায় রক্ষা করার জন্য। সালাম জব্বার রফিক বরকত তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে। আমাদের এই বাংলা ভাষাকে ছিনিয়ে নিয়েছে।
আমার শুধু একদিন নয় প্রত্যেকটা দিন প্রত্যেকটা নামাজের প্রত্যেকটা মোনাজাতে আমাদের এই শহীদ ভাই-বোনদের জন্য দোয়া করব। ইনশাআল্লাহ আমিও দোয়া করি। কারণ তারা অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা মাধ্যমে আমাদের এই বাংলা ভাষাকে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে।যার কারণেই আমরা স্বাধীন দেশে বসবাস করতে পারছি।
খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অবিরাম।
একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে বেশি কিছু মন্তব্য করবো না আমরা জানি আজকে আমাদের খুশির দিন যারা দেশের জন্য রক্ত দিয়েছে তাদের জন্য আমার মনের গভীর অন্তরস্থল থেকে ভালোবাসা এবং দোয়া জানাই।
আমার অনেক ইচ্ছা ছিল সকালে আমিও ঘুম থেকে উঠবো ভালোবাসার মানুষদেরকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাবো কিন্তু করতে পারেনি এটাই আমার কষ্ট ছিল হসপিটালে ছয় তলায় বসে শ্রদ্ধাঞ্জলি জাওয়া দেখছিলাম আর মিছিল দেখছিলাম।
সবশেষে বলতে চাই কি সুন্দর লেখা আমাদের মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন ভাই পড়ে অনেক ভালো লাগলো। প্রার্থনা করি আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর সুন্দর লেখা ভাগ করে নিবেন এবং ভালো থাকবেন।
আসসলামু আলাইকুম