গ্রাম্য বাজারে আমার কাটানো কিছু সময়
স্টিমিয়ান সকল ভাই বোনকে আমার সালাম এবং আদাব। সবাই কেমন আছেন। আশা করছি মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সকলেই অনেক ভালো আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভাল আছি। আজ আবারো নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম।
কিছুদিন আগে আমি গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী এলাকায়, সেই জায়গাটির নাম ভুরুঙ্গামারী। কুড়িগ্রাম থেকে বাসে করে ভুরুঙ্গামারী যেতে হয়। কুড়িগ্রাম থেকে ভুরুঙ্গামারীর রাস্তা খুব একটা বেশি না তবে রাস্তাঘাট খারাপ থাকায় যেতে অনেকটা সময় লাগে। ভুরুঙ্গামারী বাস স্ট্যান্ড থেকে টোটো তে চেপে আমার দাদু বাড়ি যেতে হয়। ভুরুঙ্গামারী সদর থেকে টোটো তে করে আমার দাদু বাড়ি যেতে সময় লাগে আরো ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট।
আমার দাদু বাড়ি একদম গ্রাম্য এলাকায় , এত বড় জার্নি করার পর যখন গ্রামে প্রবেশ করি তখন গ্রামের আবহাওয়া এবং দৃশ্য শরীরের সব ক্লান্তিকে যেন দূর করে দেয়। সন্ধ্যার দিকে বর্ডারের আলো জ্বালিয়ে দিলে এমন সীমান্তবর্তী এলাকা গুলোর রূপ একদমই পরিবর্তন হয়ে যায় সেই রূপটাও আমার কাছে অত্যন্ত প্রিয়, অনেকেই হয়তো সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়ে এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছেন।
আমি বাস থেকে নেমে ভুরুঙ্গামারী বাস স্ট্যান্ডে একটুও দেরি না করে সোজা দাদু বাড়িতে চলে যাই। আমি আগেভাগেই চিন্তা করে রেখেছিলাম দাদির সাথে দেখা করে একটু ফ্রেশ হয়েই চাচ্চুর মোটরসাইকেল নিয়ে আবার ভুরুঙ্গামারী সদর বাজারে যাব। যেই কথা সেই কাজ আমি বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। মোটরসাইকেল দিয়ে অবশ্য আমার বাজারে পৌঁছাতে খুব একটা সময় লাগেনি, খুব তাড়াতাড়িই পৌঁছেছিলাম বাজারে।
জায়গা: ভুরুঙ্গামারী বাজার
সময়: সন্ধ্যা ০৬:০৩
তারিখ: ১০/১২/২০২২
গ্রামের বাজারে গেলে বাঁশের তৈরি এই জিনিসগুলো চোখে পড়ে, আমার কাছে বাঁশের তৈরি এই জিনিসগুলো খুবই ভালো লাগে। বাঁশ দিয়ে এই ধরনের জিনিসগুলো তৈরি করাও শিল্প যা এখন শুধু গ্রামের দিকে গেলেই দেখা যায়। আর মাঝে মাঝে শহরের বাজারেও বাঁশের তৈরি এই জিনিসগুলো দেখা যায়, সেগুলোও কেউ না কেউ গ্রাম থেকেই নিয়ে আসে শহরে বিক্রি করার জন্য।
জায়গা: ভুরুঙ্গামারী বাজার
সময়: সন্ধ্যা ০৬:০৬
তারিখ: ১০/১২/২০২২
হাটের দিন গ্রামের বাজার গুলোতে স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি মানুষ এভাবে চৌকি নিয়ে অস্থায়ী দোকান ও দেয়। শুধু রাস্তা বাদে আর অন্য কোথাও পা রাখারও জায়গা থাকে না দোকানগুলোর জন্য। পাটি বিছিয়েও অনেকে দোকান দিয়ে বসে পড়ে।
জায়গা: ভুরুঙ্গামারী বাজার
সময়: সন্ধ্যা ০৬:০৯
তারিখ: ১০/১২/২০২২
হাটের দিন এভাবেই চৌকির উপর একগাদা কাপড় সহ কাপড়ের দোকানগুলো দেখা যায়। কাপড়ের দোকানগুলোর কাছে গিয়ে একটা কাপড় হাতে নিয়ে কৌতুহলবশত দামাদামি করলাম, দামাদামি করে মোটামুটি অবাক হয়ে গেলাম কারণ কাপড় গুলোর দাম খুবই কম ছিল আর কাপড়ের কোয়ালিটি ও খুব একটা খারাপ ছিল না।
জায়গা: ভুরুঙ্গামারী বাজার
সময়: সন্ধ্যা ০৬:১৩
তারিখ: ১০/১২/২০২২
তারপর আর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার পর এই চাচার কলার দোকান চোখে পড়ল। কলা গুলো তার নিজের গাছেরই ছিল একদম নির্ভেজাল ফরমালিন মুক্ত কলা। কলা গুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছিল এই কলা গুলো গাছেই পেকেছে যা আমরা শহরের বাজারগুলোতে একদমই পাইনা। গ্রামের বাজার গুলো ঠিক এমনই , গ্রামের বাজার গুলোতে সবকিছুই এরকম নির্ভেজাল ফরমালিন মুক্ত।
জায়গা: ভুরুঙ্গামারী বাজার
সময়: সন্ধ্যা ০৬:২০
তারিখ: ১০/১২/২০২২
গ্রাম্য ভাষায় এই দোকানগুলোকে শানদারের দোকান বলা হয়। এই দোকানগুলোতে কসমেটিক আইটেম থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছুই পাওয়া যায়। দূর থেকে দেখলাম এই দোকানে কিছু সানগ্লাস ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল সামনে গিয়ে সেই ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম এই সানগ্লাস গুলো কি বিক্রির জন্য রেখেছেন, সে আমাকে একটু বাঁকাভাবে উত্তর দিয়ে বলেছিল না ভাই পড়ার জন্য রেখেছি। আমি আর কিছু না বলে কয়েকটা সানগ্লাস হাতে নিয়ে দেখলাম সানগ্লাসগুলোর কোয়ালিটি খুব একটা ভালো ছিল না তবে চালিয়ে নেয়ার মত ছিল, এই দামে কত আর ভালো কোয়ালিটি আশা করা যায়।
তারপর বাজারের ভেতর আমার আরো অন্য কিছু কাজ ছিল সেই কাজগুলো সেরে আমি আর কিছুক্ষণ বাজারে সময় কাটাই। একা গিয়েছিলাম তাই কিছুক্ষণ থাকার পর বাজারে আর ভালো লাগছিল না। তাই আমি বেশি দেরি না করে আবার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই। এদিকে আবার রাত হয়ে আসছিল গ্রামের দিকে অল্প রাত হতেই মনে হয় কতই না রাত হয়ে গিয়েছে। তাই আর দেরি করলাম না।
এই ছিল আমার গ্রামের বাজারে কাটানো কিছু সময় । আশা করছি আপনারা আমার শেয়ার করা পুরো পোস্ট টি উপভোগ করেছেন। আপনাদের মতামত অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আজ তাহলে এ পর্যন্তই আপনাদের সাথে আবারো দেখা হবে আমার অন্য কোন এক পোস্টে সে অব্দি সবাই ভালো থাকবেন শুভকামনা রইল সকলের জন্য।
গ্রামের বাজারের খুব সুন্দর দৃশ্য আপনার পোস্টে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সাংসারিক প্রয়োজনীয় জিনিস গ্রামের বাজার গুলোতে গেলে আমিও মাঝে মাঝে কিনে নিয়ে আসি। আরেকটা বিষয় জেনে খুব ভালো লাগলো, গ্রামের বাজার গুলোতে এখনো ফরমালিনমুক্ত গাছ পাকা কলা পাওয়া যায়। দেখে কিন্তু খুব খাওয়ার লোভ হচ্ছে হা হা হা।
ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
We support quality posts and comment anywhere and with any tags.
Curated by : @sduttaskitchen
কলাগুলো দেখে আমারও ভীষণ লোভ যাচ্ছিল হাহাহা। ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভুরুঙ্গামারী বাজারকে আপনি এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, আমারো ভুরুঙ্গামারী বাজারে যাওয়ার ইচ্ছে জেগে গেলো। খুব সুন্দর লেগেছে আপনাদের গ্রামের বাজারটি।
বাজারে সব ফটোগুলো অসাধারণ ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। দেখতে সুন্দর লাগে।
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আসসালামু আলাইকুম
এদিকে কখনো আসলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন ভাই আপনাকে আমার গ্রামের বাড়ির বাজার ঘুরিয়ে নিয়ে আসবো। অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পুরো পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ধন্যবাদ
আসলে গ্রামের বাজারগুলোতে সব কিছুই সস্তায় পাওয়া যায়।যেমন আপনি বলেছেন কাপড় কম দাম হিসেবে তুলনামূলক অনেক ভালো আসলে গ্রামের বাজারগুলোতে প্রায় সব কিছু কম দাম এ কেনা যায় । তাই এত সুন্দর পোস্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুরো বাজার ঘুরে আমারও ঠিক এমনটাই মনে হয়েছে ভাই সবকিছুই অনেক সস্তা ছিল সেই বাজারে। ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Welcome brother
❤️🌹
গ্রামের মানুষের মানবিকাতর মতোই গ্রামের বাজারে বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ জিনিসপত্র নির্ভেজাল। ভালো লাগলো আপনার গ্রামের বাজারে শেয়ার করা দৃশ্য গুলো দেখে। আসলে ছোটোবেলায় আমার বাপের বাড়ির দিকে এমন বাজার চোখে পড়তো। তবে আজকাল সব জায়গায় শুধু বড়ো দোকান, শপিং মল চোখে পড়ে। ভালো থাকবেন। আপনার দিনটি শুভ হোক।
আসলেই দিদি আপনি একদম ঠিক বলেছেন গ্রামের বাজারে এখনো নির্ভেজাল অনেক কিছুই পাওয়া যায়। এই ব্যাপারটি আমার বেশ ভালো লাগে।
এখন চারিদিকে বড় দোকান শপিংমল চোখে পড়ে কিন্তু একটু গ্রামের দিকে গেলেই এরকম হাট বাজার চোখে পড়বে। ধন্যবাদ দিদি এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য, আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
We support quality posts anywhere and any tags.
Curated by : @sduttaskitchen
Thank you very much.