অতি অল্প সময়ের বিস্ময়কর কিছু ঘটনা
এই প্রথম আমাদেরকে কোন কোম্পানি থেকে কল করেছিল ইন্টারভিউ এর জন্য। মাধবপুর, হবিগঞ্জ, সিলেট। আমরা তো খুশিতে/আনন্দে আত্মহারা। একদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ট্রেনিং মিস হবে। শুক্রবারের দিন এমনিতেই বন্ধ আবার শনিবারের দিন আমরা ট্রেনিং এ উপস্থিত হব।
যেদিন এই খবরটি শুনতে পেলাম, সেই দিন রাত্রিবেলায় বাজারে গিয়েছি যাওয়ার পর ঘুরতে ঘুরতে একটি বাস কাউন্টার দেখতে পাই। হঠাৎ করেই বাস কাউন্টারে চোখ যাওয়ায়, খুঁজতে থাকলাম এইখান থেকে সিলেট যাওয়া যায় নাকি একটু দেখে নেই!
পরিশেষে মাসুম বাস যায়। তখন রাত বাজে ১১ এর বেশি। এমনিতেই আমাদের রুমে ফ্যান নেই এ কারণে প্রচুর পরিমাণে গরম। এজন্য ঘুরতে বেরিয়েছিলাম হাঁটাহাঁটি করার জন্য বাজারের মধ্যে।
এরপর সেই বাস কাউন্টারে নাম্বার ছিল তাদের ব্যানারের মধ্যে। আকাশকে বলা হলো আকাশ কল দিল এবং কথা বলল সেই কাউন্টারের ব্যক্তির সাথে। কথা বলতে না বলতেই সে বলল আপনারা কোথায় আছেন এখন? আকাশ বলল আমি আপনাদের অফিসের সামনেই।
তখন উনি বলতেছে তাহলে আপনারা দাঁড়ান আমি এখানেই আছি। পরে জানতে পারলাম তিনি এই জায়গাতেই থাকেন। যাইহোক পরিশেষে সিলেটের কোন জায়গায় নামবো, সেই বিষয় নিয়ে তাদের সাথে কথোপকথন হলো। এবং কত টাকা লাগবে সে সম্পর্কেও বিস্তারিত কথা হলো।
রাত্রিবেলায় অগ্রিম ৫০ টাকা দিয়ে তিনটি সিট নেই। কেননা তখন আমাদের কাছে কোন টাকা ছিল না। এ কারণে বেশি দিতে পারেনি, তবে তারা বলেছে যদি পারেন তো বেশি দিয়ে রাখুন, 50 টাকা তো নেওয়া যায় না।
ট্রেনিং করার জন্য তখন আর মন বসতেছে না। মনের মধ্যে একটি কথাই বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে তা হল কখন যাব সিলেট এবং ভাইবা দিব।
যেইদিন সিলেটে যাব সেদিন দুপুরবেলায় অর্থাৎ ট্রেনিং এর সময় খাওয়া-দাওয়ার শেষ করে বাহিরে আসলাম। বাহিরে এসে দেখি তাদের কাউন্টার খোলা আছে। পরিশেষে দুপুরে টিকিট এর বাকি টাকাগুলো পরিশোধ করে দেই।
এরপর আবারও ট্রেনিং এবং বিকেলে অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হচ্ছে না! রাত আটটার গাড়ি। কখন আমাদের যাওয়ার সময় হবে? সমস্ত কাগজপত্র এবং প্রয়োজনীয় ড্রেস ব্যাগের মধ্যে তুলে নেই। কেননা ভাইভা পরীক্ষায় যে ড্রেস পড়বো সেই ড্রেস ব্যাগের মধ্যে করে নিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে ভাইবা পরীক্ষা হবে ১৯ তারিখ দুপুর 11 টায়। অন্যদিকে আমরা বাহির হচ্ছি ১৮ তারিখ রাত আটটার দিকে। এমনিতেই যাইতে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টার মত লাগে। আমরা চাচ্ছি সেখানে যাওয়ার পর যেন একটু বিশ্রাম করতে পারে এবং ভালোভাবে প্রেজেন্টেশন করতে পারি নিজেদেরকে এজন্য একটু দ্রুত যাওয়া।
রাত তখন আটটা বাজে। কাউন্টারে বসে রয়েছি কিন্তু এখনো বাস আসছে না। আমরা তিনজন ফ্রেমবন্দি হই ক্যামেরার মাধ্যমে। খুবই এক্সাইটেড এবং হাসিখুশি মন নিয়ে যাচ্ছি।
আমাদের পরিচিত নেই ওইখানে এখন রাত্রিবেলায় কিভাবে ওই জায়গায় সময়টি অতিবাহিত করব জানা নেই। এদিকে আকাশকে বলতেছি, আকাশ বলে প্যারা নিস না, হয়ে যাবে একটি ব্যবস্থা কিন্তু কারো সাথে যোগাযোগ না করলে কিভাবে ব্যবস্থা হবে। প্রচেষ্টা তো থাকতে হবে তবেই তো ব্যবস্থা হবে কিন্তু আকাশ কোনভাবেই কিছুই বলে না শুধু বলতেছে প্যারা নিস না চুপচাপ থাক।
অন্যদিকে আমি খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। ফেসবুকে সকলের সাথে আমি খোঁজ খবর নিতেছি ওই জায়গায় কেউ ইন্টারর্নি করে কিনা বা আশেপাশে কোথাও ইন্টারর্নি করে কিনা!
আমাদের সাথে যারা BIGC = Bangladesh Institute Of Glass & Ceramic এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও ডিবিএল এবং বিসিএল ইন্ডাস্ট্রিতে ট্রেনিং করেছে আমরা তাদের সাথেও যোগাযোগ করতেছি। আসলে সেখানে পরিচিত কে আছে!
পরিশেষে এই ভাইকে পেলাম তার নাম হচ্ছে আল আমিন। এই আলামিন ভাই এর সাথে আমার বেশ কিছুদিন হলো কথোপকথন হয়। এই আলামিন ভাই আবার Star Porcelain Ceramic Industry Ltd কোম্পানিতে জব করত এখন সে Huwa Thai Ceramic Industry Ltd কোম্পানিতে জব করে।
ঘটনাক্রমে আমি তাকে বলি আজকে আমি ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি Start Porcelain Ceramic Industry Ltd কম্পানিতে। তখন ওই ভাই অবাক হয়ে বলতেছে, আরে ভাই তুমি আমাকে আগে বলো নাই! সেখানে তো আমার পরিচিত আছে! আরে ভাই বলেন কি তাহলে তো ভালোই হলো রাত্রিবেলায় কিভাবে থাকবো সেই টেনশন করতে করতে কখন কাকে এসএমএস করতেছি আমি নিজেও জানিনা।
তখন এই আল আমিন ভাই আমাকে ওই ইন্ডাস্ট্রিতে QC section এর এর নাম্বার দেয় এবং তাকে কল দিয়ে বলে দেয় আমাদের কথা। তখন আমি সেই নাম্বার থেকে কল করি এবং কথা বলি। তখন পাশে আকাশ এবং শরিফুল আছেই।
ঘটনাক্রমে আকাশ বলল, তুই যার সাথে কথা বলতেছিস তার সাথে আমার আগে থেকেই পরিচয়। তখন আমি খুবই অবাক হয়ে গেলাম, এত প্যারা দেওয়ার কি আছে! তুই আমারে তো আগেই বলতে পারতি আমার পরিচিত আছে। তাহলে তো আর এত টেনশনের মধ্যে থাকতাম না, অথচ তুই আমারে কঠিন প্যারার মধ্যে রাখছিলি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমাদেরকে খাবার খাওয়ার জন্য কিছু সময় ব্রেকটাই দেয়। যখনই আমার চোখে ঘুম এসে গেছে ঠিক তখনই বাস থামিয়ে দিল। যাই হোক আর বেশি সময় লাগবে না। আমরা অবশ্য সিলেট মেইন শহরে যাওয়ার পূর্বেই বাস থেকে নামবো।
হালকা-পাতলা নাস্তা করলাম। কিছুক্ষণ পর আবার বাস ছেড়ে দিল এভাবে চলতে থাকলাম দিগন্ত পথে।
বিভিন্ন জায়গা দেখলাম রাতের দৃশ্যময় সৌন্দর্য। বিশেষ করে যখন নদীগুলো দেখি বিশাল বড় বড় নৌকা, লঞ্চ দেখতে পাই এবং রংবেরঙের আলো হিমেল হাওয়া ঠান্ডা অনুভব করি।
গাড়ির মধ্যে অবশ্য প্রচুর পরিমাণে ঠান্ডা লাগতেছিল কেননা যতই সিলেটগামী হচ্ছি, ততই যেন ঠান্ডা বেড়ে যাচ্ছে শীতল অনুভব করছি আরো বেশি।
রাত তখন দুইটা। বাস আমাদেরকে নামিয়ে দিল আমাদের গন্তব্যস্থলে। এখানে আরো বিশাল বড় একটি ঘটনা রয়েছে আশ্চর্য কারবার। হঠাৎ আমরা যে জায়গায় নামবো ঠিক সেই জায়গায় এসে পিছনের চাকা ব্লাস্ট করে। যাই হোক আমি আর বড় করতেছি না লেখা। হয়তো কোন একদিন লেখা হবে আশ্চর্য কিছু ঘটনার মধ্যে এই একটি।
পরিশেষে যেই ভাইয়ের সাথে কথা হয়েছিল, রাত দুইটার সময় বাস থেকে নামার পর শরীর দেখতে পারতেছি শুরু কাপতেছে শীতের কারণে। পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতল বাতাস বইছে।
তখন ভাইকে কল দেওয়া হলো। কল দেওয়া হচ্ছে কিন্তু ধরতেছে না আমরা খুবই চিন্তায় পড়ে গেলাম। অনেক রাত হয়ে গেছে অবশ্য হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে। উপায় নেই তাকেই কল দিতে হবে বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়ার পরে রিসিভ করল এবং আমাদেরকে তার বাসায় নিয়ে গেল।
আসলে বলতে গেলে অনেক বিশাল বড় একটি ঘটনা এগুলো। জীবনের প্রত্যেকটি ধাপ যেন আশ্চর্যভাবে অনুভব করতেছি। ভাবতে হবে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে তবেই আশ্চর্য হওয়া যায়।
আজকের মত এ পর্যন্তই, ভালো থাকুন সকলেই, দেখা হবে পরবর্তী লেখায়।
@meraindia
account @null
account for price increase.
আপনারা সিলেটে ভেবে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য রওনা হয়েছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া যখন গাড়ি ব্রেক দেয় তখন আপনারা হালকা নাস্তা করে নিয়েছিলেন। এবং রাত ২ টার সময় আপনাদেরকে আপনাদের গন্তব্যস্থানে নামিয়ে দেয়।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে সেখানে আপনাদের গাড়ির চাকা ব্লাস্ট হয়ে যায়, আল্লাহর রহমতে আপনারা বেঁচে গেছেন যদি পথের মধ্যে ঘটনাটি ঘটতো তাহলে অনেক বড় দুর্ঘটনা হয়ে যেত।
আমি যখন সর্বপ্রথম আমার বাবার সাথে ঢাকায় যাই তখন আমাদের গাড়িতেও এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল, তখন আমাদের গাড়ি ধীর গতিতে চলন্ত অবস্থায় ছিল, তাই দুর্ঘটনা ঘটেনি।
পরিশেষে বলবো আপনারা ভালোভাবে পৌঁছাতে পেরেছিলেন এজন্য শুকরিয়া।
পরবর্তী লেখা পাওয়ার অপেক্ষায় রইলাম, ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
গাড়ির মধ্যে তখন কালো ধোঁয়া দিয়ে সে যায় মানুষ খুবই আতঙ্কের মধ্যে ছিল হয়তো বা আগুন ধরেছে ভেবে সামনের দিকে চলে আসে এবং চিল্লা পাল্লা করতে শুরু করে।
ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক, আমি নিজেও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক আল্লাহ তাআলা বড় একটি দুর্ঘটনা থেকে আমাদেরকে বাঁচিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। ধন্যবাদ জানাই আমার এই লেখাটি অধ্যায়ন করার জন্য এবং সুন্দরভাবে মন্তব্য উপস্থাপন করার জন্য।
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তাআলা আপনাদের উপর রহম করেছেন।
https://twitter.com/Md_Jakaria121/status/1716103347231678536?t=rAmutWFwrL6e7nO4eBzfkg&s=19
Your post has been successfully curated by @kouba01 at 35%.
Thanks for setting your post to 25% for @null.
We invite you to continue publishing quality content. In this way you could have the option of being selected in the weekly Top of our curation team.
@kouba01 Dear brother, thank you for supporting me.
আকাশ ভাই টেনশন দিতে ভালোবাসে।
হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ, মোটেও ঠিক নয় টেনশন দেয়া। তবে আমি তখন খুবই প্যারার মধ্যে ছিলাম।
আসলে কোন জায়গায় যাওয়ার পর বা যাওয়ার সময়, আমাদের একটা টেনশন থাকে। সেখানে যদি আমাকে পরিচিত কেউ না থাকে। আমরা কোথায় যাব কি করব। আপনার বন্ধু জানা সত্ত্বেও আপনাকে কিছুই বলেনি। কিন্তু উনি আপনাকে বলেছিল প্যারা নিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।
যাইহোক অবশেষে রাত ২ টার সময় আপনারা ওখানে গিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। আসলে শেষ রাতে শীতের পরিমাণটা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। যেটা হয়তোবা বলে বোঝানো সম্ভব না। যারা বাহিরে থাকে তারা অবশ্যই সেটা অনুভব করতে পারে। সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে আমাদের বাসের চাকা পাংচার হয়ে যায়।
ভালোভাবে পৌঁছাতে পেরেছেন এটাই হচ্ছে সবচাইতে বড় কথা। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ভালো থাকবেন।
ধীরে ধীরে শীতের সময় চলে আসতেছে। আমি এর আগেও সিলেটে গিয়েছিলাম তখন আমাদের উত্তরবঙ্গে প্রচন্ড গরম। কিন্তু সিলেটে যাওয়ার পর দেখি প্রচণ্ড শীত। ধন্যবাদ জানাই আমার এই লেখাটি সুন্দরভাবে অধ্যায়ন করার জন্য এবং সুন্দর একটি মন্তব্য উপস্থাপনের জন্য।