মর্মান্তিক মৃত্যু

in Incredible India2 months ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন ।গত কিছুদিন আগে আমি আপনাদের সকলের সাথে জন্মাষ্টমীর বাজার করা নিয়ে পোস্ট শেয়ার করেছিলাম ।আজকে তারপর থেকেই লেখা শুরু করছি।

1000303692.jpg

লিংক

সন্ধ্যা বেলায় বাড়ি আসার পর খুব বাজে একটা ঘটনা কানে আসাতে মন মেজাজ সাংঘাতিক পরিমাণে খারাপ হয়ে গিয়েছিল ।আসলে আমাদের পাড়ারই একটা ছেলে আমার থেকেও বয়সে ছোট ,আমি দুদিন আগে শুনেছিলাম ওর অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। মৌসুমী বৌদি বাড়িতে এসে বলছিল। আমি বাড়িতে আসার পরে সেদিন খবর পাই যে, ওই অ্যাক্সিডেন্টের কারণে ও মারা গেছে। খুব বাজে ভাবে অ্যাক্সিডেন্ট হওয়াতে ওকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

যেহেতু পাড়ারই ছেলে, ছোটবেলা থেকে বহুবার ওকে দেখেছি রাস্তাঘাটে ।চলতে ,ফিরতে সবসময় মাঝেমধ্যেই দেখা হয়। তাই সেদিনকে এই ঘটনা শুনে আমি রীতিমতো চুপ হয়ে গিয়েছিলাম। গায়ে কোন শক্তি পাচ্ছিলাম না কাজ করার বা কারো সাথে কথা বলার। আজ থেকে প্রায় দু বছর আগে ওর বাবাও মারা যায়।

1000303693.jpg

লিংক

বাড়িতে শুধুমাত্র ও ,ওর মা আর ছোট বোন থাকতো। ওর বাবার ইলেকট্রিক এর দোকান ছিল এবং সবরকম ইলেকট্রিকের কাজ ওরা জানতো। বাবার কাছ থেকে ছেলেও সমস্ত শেখে এবং বাবা চলে যাওয়ার পর ছেলেই সমস্ত কিছু ব্যবসা হাতে নেয়। কিন্তু আজকে সেই মানুষটাও থাকলো না। আমার এটা ভেবেই মাথা শেষ হয়ে যাচ্ছিল যে, এবার ওর মা আর ছোট বোনটার কি হবে।

শুনেছি বোনের জন্মদিনের দিন এই ঘটনা ঘটেছে ।ওর বোনের জন্মদিনের দিন রাতের বেলায় ও মিষ্টি নিতে মিষ্টির দোকানে গিয়েছিল। রাস্তা পার হতে গিয়ে একটা গরু রাস্তায় এসে পড়ে এবং গরুটাকে বাঁচাতে গিয়ে ও নিজে পড়ে যায় রাস্তাতেই। পরে থাকা অবস্থায় ,একটা অ্যাম্বুলেন্স এসে ওকে মেরে দিয়ে চলে যায়, আর যেভাবে মেরে দিয়ে চলে গেছে তারপরে বেঁচে থাকা হয়তো সম্ভব হতো না।

এতটা বাজেভাবে অ্যাক্সিডেন্টটা হয়েছে শুনে আমি নিজেকে কোন ভাবেই কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না ,এতটা পরিমাণে ইমোশনাল হয়ে গেছিলাম সেদিন।

আমরা জানি ভগবান যা করে ভালোর জন্যই করে। কিন্তু এই মর্মান্তিক মৃত্যুগুলোকে নিয়ে আমি যে কি ডেফিনেশন দেব বা এই সময় আমি ভগবানকে উদ্দেশ্য করে কি বলব আমি নিজেই বুঝতে পারি না। আমি হয়তো পুরোপুরি ঠিকভাবে আপনাদের সামনে গুছিয়ে কথা বলতে পারলাম না এই বিষয়ে। তবে সেদিন যেভাবে আমি সমস্তটা দেখেছি শুনেছি, তাতে আমার তারপর কোনরকম শরীরে শক্তি বা জোর ছিল না।

আমরা সকলে ওর আত্মার শান্তি কামনা করছিলাম সেই মুহূর্তে।

মায়ের সাথে এসব নিয়ে আলোচনা করতে করতে চুপচাপ বসে ছিলাম অনেকক্ষণ। মন মেজাজ এতই খারাপ লাগছিল যে মৌসুমী বৌদিকে ফোন করলাম। মৌসুমী বৌদি ওর মামার বাড়ি গিয়েছিল, ওর মামার বাড়ির কাছেই আমাদের শিবতলা বারোয়ারির মন্দির। ছেলেটির শেষ যাত্রার সময় আমাদের মন্দিরের প্রাঙ্গণে একবার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওই মুহূর্তে মৌসুমী বৌদিও দেখতে পেয়েছিল। তারপর ও যখন আমাদের বাড়িতে আসে, ও নিজেও আমার মতন চুপ করে খানিকক্ষণ বসে ছিল।

বৌদির সাথে খানিকক্ষণ এসব নিয়ে আলোচনা করতে করতে, কেমন যেন দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তারপর বৌদিকে বললাম ,চলো আমরা কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকি। দুজন মিলে দোতলার ঘরে গিয়ে জন্মাষ্টমীর জন্য ডেকোরেশন করি সামান্য কিছু।। দুজনেরই শরীর পুরো ছেড়ে দিয়েছিল দেখেই বোঝা যাচ্ছিল ।তারপরেও এই সমস্ত থেকে বার হতে হবে, মাথার মধ্যে থেকে না ঝেড়ে ফেললে ,রাতের ঘুম থেকে শুরু করে সবকিছুই অসুবিধা হয়ে যাবে।।

এত বড় একটা মর্মান্তিক খবর সবাইকেই ভেঙে দিতে পারে। সেদিনকে আমাদের সাথে তাই হয়েছিল।

Sort:  
Loading...
Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.08
TRX 0.29
JST 0.036
BTC 103343.17
ETH 3393.38
USDT 1.00
SBD 0.52