কর্পূর
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলের সুস্থ আছেন। ভালো আছেন। সত্যি বলতে আমার মন ভালো নেই। গতকাল দুপুর থেকে মনটা এতটাই খারাপ করছিল বলে বোঝানো নয়। আমাদের সবার মনই খারাপ হয়। মন আছে যখন খারাপ ভালো লেগেই থাকবে।
কিন্তু যন্ত্রনা যখন প্রবল হয় তখন আর আমরা আটকে রাখতে পারি না। কেউ যন্ত্রণা চোটে হাউমাউ করে কাঁদে। কেউ যন্ত্রণায় হিংস্র হয়ে যায়। কেউ চিৎকার চেঁচামেচি করে। কেউ হাতের কাছে যা পায় ভেঙে ফেলে। কেউ চুপচাপ হয়ে যায়। কেউ প্রবল যন্ত্রণায় গান গায়। হাটাহাটি করে। কবিতা লেখে। একেকজন একেক রকম ভাবে নিজের যন্ত্রনা প্রকাশ করে।
যারা প্রকাশ করতে পারেনা চুপ হয়ে যায়। তাদের যন্ত্রণা তীরের মত । কতটা যন্ত্রণা হচ্ছে তা মানুষের প্রকাশ কিংবা প্রকাশ না করার মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে বোঝা যায়। আমার ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এবং একেবারে বিষয়ের উপর নির্ভর করে। আমি বেশিরভাগ সময় কান্নাকাটিই বেশি করি। আবার কখনো কখনো যখন যন্ত্রণাটা নিবারণ করার কোন উপায় থাকে না, তখন চুপ হয়ে যাই।
তবে সবথেকে ভালো যন্ত্রণা নিরাময় করার উপায় হলো প্রকাশ করা। সেই প্রকাশ কাউকে ক্ষতি করে নয়। আমি যখন লেখালেখি করি। বিশেষ করে যন্ত্রণা হলে যখন লিখি। তখন সত্যিই খুব তাড়াতাড়ি আমার মন স্থির হয়ে যায়।
আপনারা জানেন কিনা জানিনা। গতকাল টিভি চ্যানেল থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া, ছেয়ে গেছে একটি ঘটনায়। আমাদের কলকাতার আরজিকর হাসপাতালের একটি ডাক্তারের নারকীয় ভাবে মৃত্যু। এই মৃত্যু যে এতটাই ভয়াবহ তা হয়তো আমরা যারা এ খবরের সম্পর্কে জানি। তারাই বুঝবো।
আমি একেবারেই চাই না সমস্ত ডিটেলস আপনাদের সাথে এইভাবে শেয়ার করতে এখানে। তবে একজন ডাক্তার যিনি কিনা আমাদের কাছে ভগবান, যিনি আমাদের সারিয়ে তোলেন। সেই যখন তার অন ডিউটিতে ধর্ষিত,তবে নিরাপত্তা কোথায়। এই অমানবিক মৃত্যুর পরে চরম শাস্তির পর্যায় কতটা থাকতে পারে।
আমি বেশি কিছু বলার পরিস্থিতিতে নেই। গতকাল থেকে শুধু কষ্ট পেয়েছি। ভয় পেয়েছি। যন্ত্রণা পেয়েছি। আমরা কাকে বিশ্বাস করবো। অনেকেই বাড়িতে থাকতে খুব পছন্দ করে। বেশিরভাগ মেয়েরাই বাড়িতেই থাকে। কিন্তু আমাদের মতো অনেক মেয়েরা আছে, যাদের প্রতিদিন কাজের জন্য বাইরে যেতে হয়। যারা ঘুরতে ভালোবাসে। তারা কোন ভরসায় এখন রাস্তায় বেরোবে বলুন তো।
চুপ চুপ ধরে মেয়েদের ওপর অত্যাচার হয়ে আসছে। বিচারের পর বিচার পেয়ে এসেছে প্রত্যেকটা মেয়ে। এ সমাজেও তা ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। তবে মানুষ এখন আরও হয়ে গেছে পশু সমতুল্য। যে সমাজে নারীর মর্যাদা নেই। সে সমাজ কি করে উন্নত হবে। কি জঘন্য ! কী নোংরা!
আমার মনের ভেতরের কোন কথাই পরিষ্কারভাবে আমি তুলে ধরতে পারছিনা। সমস্ত কিছু তাল গোল পাকিয়ে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি ভগবান আছেন। সমস্ত কিছুর বিচার উনি করবেন। সবকিছু সুদ আসলে ফেরত হবে।
গতকাল সন্ধ্যাবেলায় ভগবানের কাছে পুজো দেবার পরে আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না ভগবানকে কি বলবো। আমি শুধু নিস্তব্ধ ছিলাম। আমার শরীর এতটাই হালকা লাগছিল, একটা প্রবল যন্ত্রণা অনুভব করতে পারছিলাম। হাতের কাছে ফোন। ফোনের নোটস এ লিখে ফেললাম মন থেকে যেটুকু লিখতে চাইলো।
কর্পূর
ধুনোর গন্ধ আজ ভারী লাগে।
ভারী লাগে প্রদীপের আলো।
চোখের দৃষ্টিতে কাঁপে সন্ধ্যা।
হাহাকার করে কর্পূরের দানা।
হাহাকার করেছিল যেমন করে
প্রত্যেকটা প্রাণ ।
আমি ছেড়ে দিই নিজেকে।
ছেড়ে দিই সব ধরে রাখা ।
ছেড়ে দিই আমার সব চাওয়া।
কেউ এই শরীরের ভার
নিতে চায় না।
কেউ চায়না ভার নিতে
মনের।
আমি শেষ করিনি কথা।
শুরুই করিনা বলা।
তবু সে শুনতে থাকে।
তবু সে বুঝে যায় ।
অব্যক্ততায়
অদৃষ্টে ।
সত্যি বলতে কবিতাটা লেখার পর শরীর অনেক ঠিক লাগছিল। ভগবান ছাড়া আমাদের কোনো ভরসা নেই । আমি শুধু তার ওপরই আস্থা রেখে আছি। প্রভু সবার মঙ্গল করুক।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় খুবই কম ঢোকা হচ্ছে আমার তবে আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম কলকাতায় একটি ডাক্তার মারা গিয়েছেন এবং খুবই ভয়ানক ভাবে মারা গিয়েছেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা রাখি তার আত্মার শান্তি কামনা করি।
আপনি তার ভিত্তি করে সুন্দর একটি কবিতা ও লিখেছেন কবিতাটি অনেক বোঝার আছে এবং এখানে অনেক আবেগ তুলে ধরেছেন। এবং খারাপ লাগা খারাপ লাগা প্রত্যেকটা মানুষের মধ্য আছে আপনারও যেমন খারাপ লাগে ঠিক আমারও তেমনটাই খারাপ লাগে এবং মানুষ হয়ে জন্মেছি যখন খারাপ লাগা অবশ্যই আমাদের মধ্যে আছে। যাই হোক মন খারাপের পরেও সুন্দর একটি লেখা উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।