নিরামিষ আলুর দম তৈরির রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। বৃষ্টির দিন আপনাদের কেমন কাটছে? আমার বৃষ্টির দিন মানে অনেক মজা। কারণ এর আগের পোস্টগুলো তো আমি জানিয়েছি, বৃষ্টি আমার কতটা ভালো লাগে। বৃষ্টি হলে সমস্ত কাজ করেই আরাম।
আজকে সকাল থেকে প্রচন্ড কাজে ব্যস্ত ছিলাম। সন্ধ্যা থেকে ভাবনা শুরু করেছি যে আজকে কি পোস্ট করব। বেশ অনেকদিন আগে বাড়িতে নিরামিষ আলুর দম তৈরি করেছিলাম একা একাই।
আমার মা যদিও আমার মতন করে আলুর দম তৈরি করে না কিন্তু আমি যখন আলুর দম তৈরি করি তখন ঠিক এই ভাবেই তৈরি করি। আমাদের বাড়িতে আমিষ এর চেয়ে নিরামিষ রান্নাই বেশি হয়। সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এবং শনিবার নিরামিষ খাওয়া হয়।। এর সাথে একাদশী, পূর্ণিমা, অমাবস্যা, এটা সেটার ব্রত লেগে থাকে।
তাই সত্যি বলতে আমিষ মাসে ৩-৪ দিন খুব জোর হয়ে থাকে। মাছ-মাংস বাড়িতে ওই তিন চার দিনই রান্না হয়। তবে আমার নিরামিষ খেতে খুব ভালো লাগে। আর যেখানে প্রশ্ন আসছে নিরামিষ আলুর দমে। তাহলে তো কোন কথাই নেই।
আজকে আমি ভাবলাম আপনাদের সাথে সেই নিরামিষ আলুর দম রেসিপি টা শেয়ার করে ফেলি। এই রেসিপিটা এতটাই ভালো ,আপনারা এই অনুযায়ী রান্না করলে সত্যিই আলুর দম এর একটা আলাদাই স্বাদ পাবেন। এই আলুর দাম আপনি খিচুড়ি, পোলাও কিংবা লুচির সাথে খেতে পারবেন। আমার তো এতো ভালো লাগে আমি শুধু শুধু খেয়ে ফেলি।
বাড়িতে পুজো পার্বণ থাকলে আমি এই ভাবেই আলুর দম বানাই। আর এই আলুরদম বানাতে যা যা লাগে মোটামুটি আমাদের বাড়িতে সবকিছুই উপস্থিত থাকে। এই বৃষ্টির দিনে আপনারাও বাড়িতে চেষ্টা করুন এরকমভাবে আলুর দম তৈরি করার অবশ্যই খেতে ভালো লাগবে।
তাহলে চলুন বেশি দেরি না করে আপনাদের শেয়ার করে ফেলি কিভাবে এই আলুর দম তৈরি করতে হয়। প্রথমে আমি আপনাদের সাথে উপকরণগুলো শেয়ার করছি। এ আলুর দম তৈরি করতে একটা স্পেশাল ভাজা মশলা দিতে হয়।। সেই ভাজা মশলার রেসিপি টাও আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করে নিচ্ছি।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | আলু | তিনটে বড় মাপের আলু |
২ | নুন | পরিমাণ মতো |
৩ | হলুদ | পরিমাণ মত |
৪ | ভাজা মসলা | দুই চামচ |
৫ | টমেটো | ২ টো |
৬ | কাঁচা লঙ্কা | চারটে |
৭ | আদা | পরিমাণ মত |
৮ | দই | চার চামচ বড় |
৯ | চিনি | পরিমাণ মত |
১০ | ঘি | এক চামচ |
১১ | তেজপাতা | দুটো |
১. শুকনো লঙ্কা দুটো
২. পোস্ত এক চামচ
৩. ধনে এক চামচ
৪. জিরে এক চামচ
৫. এলাচ পাঁচটা
৬. গোলমরিচ দশটা
৭. লবঙ্গ ছটা
৮. একটা দারচিনি
প্রথম ধাপ
বড়ো সাইজের তিনটে আলু কেটে নিয়েছি। ভালো করে ধুয়ে নিচ্ছি।
দ্বিতীয় ধাপ
আলুগুলো একটু মাঝারি করে কেটে নিয়েছি। তাতে এক চামচ করে নুন ,হলুদ দিয়ে মাখিয়ে নিয়েছি।
তৃতীয় ধাপ
ওভেন ওন করে কড়াই বসালাম। কড়াই গরম হলে দিয়ে দিলাম তেল। কারণ এখন আলুগুলো ভাজতে হবে।আলুগুলো দিয়ে দিলাম। একটু নাড়া চাড়া করে ঢাকা দিয়ে রাখলাম।
চতুর্থ ধাপ
কিছুক্ষণ পর ঢাকনা করে চেক করব , লাল লাল করে ভেজে নিতে হবে মোট কথা।তারপর আলুগুলো মানিয়ে রাখবো
পঞ্চম ধাপ
ষষ্ঠ ধাপ
এবার ভাজা মসলার উপকরণ গুলো একজায়গায় নিয়ে নিলাম। আমি উপকরণ আলাদা করে ওপরে লিখে দিয়েছি।
সপ্তম ধাপ
এবার কয়েক সেকেন্ড ভেজে নেব ।
অষ্টম ধাপ
এবার মশলাগুলোকে মিক্সার এ দিয়ে ভালো করে পিসে নেব।আলাদা করে মশলা রেখে দেব।
নবম ধাপ
এবার ওই মিক্সার এর পাত্রে আদা,টমেটো,কাঁচা লঙ্কা,কাজু একটু জল দিয়ে পেস্ট করে নেব।সেটাও আলাদা করে রেখে দেব।
দশম ধাপ
কড়াইতে এবার দিয়ে দেব আরেকটু তেল, তাতে দেব দুটো তেজ পাতা।
একাদশ ধাপ
কড়াইতে তেজপাতা একটু ভেজে নিয়ে দিয়ে দেব টমেটোর পেস্ট, তারপর নুন আর হলুদ।সেটা কিছুক্ষণ নাড়া চাড়া করে নেব।
দ্বাদশ ধাপ
পরের ধাপে দিয়ে দিচ্ছি ভেজে রাখা মসলা দু চামচ। মিশিয়ে নিচ্ছি ভালো ভাবে।
ত্রয়োদশ ধাপ
এবার ভেজে রাখা আলুগুলো দিয়ে দেব। ভালো করে মিশিয়ে নেব।
চতুর্দশ ধাপ
পঞ্চদশ ধাপ
১৫ মিনিট কুক করার পর নামানোর আগে দিয়ে দিলাম দই।
ষষ্ঠদশ ধাপ
তারপর দিয়ে দিচ্ছি অল্প করে চিনি।
সপ্তদশ ধাপ
এবার ওভেন বন্ধ করে এতে দিয়ে দেব এক চামচ ঘি। ঘি দিলে তরকারি স্বাদটা আরো সুন্দর লাগবে।
অষ্টাদশ ধাপ
ভালো করে ঘিটা তরকারির সাথে মিশিয়ে নিলাম।
তৈরি
আর এভাবেই তৈরি হয়ে গেল দুর্দান্ত সাধের নিরামিষ আলুর দম।
এত বড় পোস্ট আপনাদের পড়তে আশা করছি অসুবিধা হয়নি। স্টেপ বাই স্টেপ এইভাবে ফলো করলে কিছুটা নিজের ট্রিক্স এপ্লাই করলে দেখবেন আলুর দম দুর্দান্ত হয়েছে। জলদি জলদি এইভাবে রান্না করে ফেলুন আর বাড়ির সকলের সাথে শেয়ার করুন। অবশ্যই আমাকে কমেন্ট করে জানাবেন আমার এই রেসিপি আপনাদের সকলের কেমন লাগলো। আজকের মত এখানেই শেষ করছি ।সকলে সুস্থ থাকুন। ভালো থাকুন।
আলুর দম গরম পরোটার সাথে খেতে ভীষণ পছন্দ করি আমি। অসম্ভব মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করছেন সুন্দর উপকরণ সহ বুঝিয়ে দিয়েছেন।
আমার মত যারা কাঁচা রাধুনিক আছে তারা খুব সহজেই বাসায় তৈরি করে নিতে পারবে ধন্যবাদ আপনাকে।
নিরামিষ আলুর দমের সুন্দর রেসিপি শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। নিরামিষ আলুর দম খেতে সত্যি খুব ভালো লাগে। আর আলুর দম রুটি ,পরোটা ,ভাত সবকিছু সাথেই খেতে ভালো লাগে। রেসিপিটি সুন্দরভাবে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
খুবই সুন্দর একটা রেসিপি আপনি তৈরি করেছেন। খুবই ভালো লেগেছে তোমার কাছে। আরেকটি সুন্দর বিষয় ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে আপনি ধাপে ধাপে সকল কিছুর বর্ণনা দিয়ে গেছেন। এছাড়াও কখন কি করতে হবে সেই বিষয়টা আপনি সুন্দরভাবে উল্লেখ করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।