বারোদোলের মেলা - কৃষ্ণনগর
নমস্কার বন্ধুরা। সুপ্রভাত সকলকে। আজ আমি একটি তথ্যপূর্ণ পোস্ট শেয়ার করতে চলেছি। তাহলে শুরু করা যাক ।
আমাদের কৃষ্ণনগরের সবচেয়ে বড় একটিই মেলা হয় । তার নাম হলো বারোদোলের মেলা। দীর্ঘকালের প্রাচীন এবং ঐতিহ্যপূর্ণ এই মেলা প্রতিবছর দোল পূর্ণিমার পর চৈত্রের শুক্লা একাদশী তিথিতে আমার শহর কৃষ্ণনগর এর রাজবাড়ির প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়।
লোকমুখে শোনা যায় , রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাঁর কুল বিগ্রহ বড় নারায়ন ব্যতীত আরো বারোটি কৃষ্ণ বিগ্রহের পূজা করতেন ।বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত এই বারটি বিগ্রহ এই মেলার সময় কৃষ্ণনগরে আনা হতো এবং তিনদিন নাট মন্দিরে থেকে বিগ্রহগুলির পূজা করা হতো। বারোটি বিগ্রহের জন্যই এর নাম বারোদোলের মেলা রাখা হয়।
আর এই অনুসারেই প্রত্যেক বছর মেলা শুরু হওয়ার পরপর তিনদিন তিন রকম বেশে বারটি বিগ্রহ পূজিত হয়। প্রথম দিনের রাজবেশে সোনার অলংকার সহ নানান মূল্যবান পোশাক পরিয়ে পূজিত করা হয় বিগ্রহ গুলি। দ্বিতীয় দিন ফুল বেশ অর্থাৎ সুগন্ধি পুষ্পমাল্য সজ্জিত করে বিদ্রোহগুলির পূজা হয়। এবং তৃতীয় দিন রাখাল বেশে অর্থাৎ দরিদ্র রাখালের বেশে ভগবানকে পূজা করা হয়।
এই বিগ্রহগুলি বিরহী ,শান্তিপুর ,সুত্রাগড় ,নবদ্বীপ ,অগ্রদ্বীপ বহিরগাছি প্রভৃতি স্থানে প্রতিষ্ঠিত ও নিত্য পূজিত হয়। সেখান থেকেই এই বিগ্রহগুলিকে এই কদিনের জন্য রাজবাড়ীতে আনা হয়।
এই বারোটি বিগ্রহ এর নাম - বলরাম ,শ্রীগোপীমোহন, লক্ষীকান্ত, ছোট নারায়ণ, ব্রহ্মাণ দেব, গড়ের গোপাল, অগ্রদ্বীপের গোপীনাথ ,নদিয়া গোপাল, তেহট্টের কৃষ্ণ রায় , কৃষ্ণচন্দ্র ,শ্রী গোবিন্দদেব, মদন গোপাল।
প্রত্যেক বছর মেলা শুরু হওয়ার এই প্রথম তিন দিন কৃষ্ণনগরের বারোদোলের মেলা মানুষের ভিড়ে গমগম করে ।
বারটি বিগ্রহ পূজা অর্চনার জন্য এবং বরণের জন্য অনেক দূর দূর থেকে এবং কৃষ্ণনগর এর সকল মানুষ নাট মন্দিরে উপস্থিত থেকে সকলকে আবির দিয়ে বরণ করে নেয় ।
এই সময় রাজবাড়ীর বাইরে বহু জায়গা থেকে প্রায় তিনশো জন ভিক্ষুক এবং সন্ন্যাসী তিন দিন যাবত রাজবাড়ীর বাইরে উপস্থিত থাকে। শরণার্থীরা তাদের সামর্থ্যমত সকলকে সাহায্য করার চেষ্টা করে। সাথে বারটি বিগ্রহ পরিদর্শন করে।
বারোদোলের মেলা টানা একমাস থাকে। মেলা এতটা বড় হয় যে পুরো মেলা একদিনে ঠিক ভাবে ঘোরা সম্ভব হয়না। আমি ছোট থেকেই এই মেলাতে যাই। কৃষ্ণনগরবাসি প্রতিবছর মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। এই মেলা বহু বছরের সম্পদ। সাথে মেলা মাত্রই মানুষের মিলন স্থল। তাই স্বাভাবিক ভাবেই আমারও যেতে ভালো লাগে। প্রতিবছর প্রথম তিন দিনের মধ্যে একদিন আমি বারোটি বিগ্রহ পরিদর্শন করতে যাই একবার। তারপর আবার মেলা ঘুরতে যাওয়ার জন্য আর দু তিন দিন যেতে হয়।
আশা করছি আমাদের শহরের এই এত পুরোনো মেলা সম্পর্কে আমি সকল তথ্য দিতে পেরেছি। আপনাদের পোষ্ট কেমন লাগলো , অবশ্যই জানাবেন। আজকে এখানেই শেষ করছি।সকলে ভালো থাকুন।
বারোদোলের মেলার বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছেন যেগুলো জেনে খুবই ভালো লাগলো ৷ আর প্রতি বছরে এই বারোদোলের মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে জেনে খুবই ভালো লাগলো বেশ মজা আনন্দ হয়ে থাকে মেলায় ৷
যাই হোক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ৷ ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷