বাড়ির লক্ষ্মীপুজো - শেষ পর্ব
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। প্রায় দুদিন ধরে আমার লক্ষ্মী পূজার পোস্ট শেষ হচ্ছে না। আজকে আমি পুজোর শেষ পোস্ট করছি। আসলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। আর এই উৎসবগুলো এত ধুমধাম করে হয় যে, একটা পোষ্টের মাধ্যমে সবকিছু শেয়ার করা সম্ভব নয়। তাই আমি এভাবে ধাপে ধাপে পোস্ট শেয়ার করছি।
প্রত্যেকটা পুজোতেই বাঙালিরা এত মাতামাতি করে। এবং দেখতে দেখতে বছর এভাবেই শেষ হয়ে যায়। এমনকি বছরের শেষের দিকেও কত পুজো লেগে থাকে। ছোটবেলায় রচনা লিখতে গিয়ে যখনই বাঙালির উৎসব নিয়ে রচনা লিখতে হতো, আমি সব থেকে বেশি মজা পেতাম। কারণ আমার বাড়িতে যেহেতু সব পুজোয় মোটামুটি হয়ে থাকে। তাই সব পুজোর কথা আমি, খুব ভালোভাবেই জানি। যাইহোক গতকাল যেখানে শেষ করেছি আজ তারপর থেকে লিখছি।
সেদিন ঠাকুরমশাইয়ের আসার কথা ছিল দুপুর দুটো নাগাদ। এই কথামতো ঠাকুরমশাই ঠিক টাইমেই এসে হাজির। আমাদের সমস্ত জোগাড় হয়ে গিয়েছিল। আমরা সাজিয়ে সাজিয়ে দিচ্ছিলাম। তারপরে ঠাকুরমশাই পূজা শুরু করলেন। আমরা সকলে মিলে একসাথে বসে পড়লাম। সকলে মা লক্ষ্মীকে এবং নারায়ণ ঠাকুরকে প্রণাম করলাম।
ঠাকুর মশাই পূজো শুরু করার আগে নারায়ণ ঠাকুরের স্নান সেরে নিলেন। এরপর পুজো শুরু হল, তারপর অঞ্জলি হলো, তারপর ঠাকুরমশাই আরতি করলেন , তারপর হোম হল। খুব ভালোভাবে বাড়িতে সুন্দর করে পুজো হলো।
পুজো হয়ে যাওয়ার পর একটু পর থেকেই বাড়িতে লোক আসা শুরু হল। বাড়ি ভর্তি লোক পুরো রাত ন'টা অব্দি। বিকেল সাড়ে চারটা থেকেই বাড়িতে এক এক করে সবাই আসতে লাগলো প্রসাদ খাওয়ার জন্য। সেদিন আমি একদম রেস্ট নেওয়ার সময় পাইনি। যেহেতু সত্যনারায়ণ পূজো হয়েছে। তাই সিরনি প্রসাদ হয়েছিল। যা খেতে আমি খুব ভালোবাসি। সকাল থেকে আমি মা এবং বাড়ির সবাই না খেয়ে ছিলাম। সকলকে দিতে দিতে একটু সুযোগ বুঝে সবাই মিলে খেয়েও নিয়েছিলাম।
যে শাড়িটা আমার পরনে দেখছেন সেটা আমার মায়ের শাড়ি। আজ থেকে ২৭-২৮ বছর আগেকার শাড়ি এটি। আমার মায়ের বিয়ের পর প্রথম পুজোতে আমার বাবা এই শাড়িটি আমার মাকে দিয়েছিল। এই শাড়িটি এতটাই সুন্দর দেখতে, আর মায়ের এতই পছন্দ যে মা খুব যত্ন করে এই শাড়িটি রেখে দিয়েছে। আর এটা আমারও খুব পছন্দের। তখনকার দিনে নাকি এই শাড়িতে গাছা শাড়ি বলা হত। আমি অনেকবার মার্কেটে গিয়ে এই শাড়ির খোঁজ করেছি কিন্তু এরকম পাইনি কখনো। তবে এই শাড়িটি পড়লে সবাইকে খুব সুন্দর দেখতে লাগে।।
এই শাড়ির পেছনে আরো একটি গল্প আছে। আমার বাড়িতে যে কজন দিদি ছিল, অর্থাৎ পিসতুতো এবং জেঠুর মেয়েরা , সকলের এই শাড়ি পড়ে ছবি আছে। আর প্রত্যেক মেয়েদের বিয়ের সময় সেই ছবি পাত্রপক্ষ এর কাছে পাঠানো হয়েছে। তাই আমার সব দিদিদের এই শাড়ি পড়া ছবিতে আমি দেখেছি। শাড়িটা এতটাই সুন্দর যে , সকলের এই শাড়িটি খুব পছন্দ হয়েছিল।