লোকনাথ পুজোর দিনের সকলের মুহূর্তগুলো
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন। আশা করছি সকলে ঈশ্বরের আশীর্বাদে সুস্থ আছেন। আজ আমি চলে এলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আমার আরও কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলো।
বেশ কিছুদিন আগেই লোকনাথ পুজো ছিল। আমি ২রা জুনের কথা বলছি। প্রতিবছরই আমার পিসতুতো দাদার বাড়িতে লোকনাথ পুজো করা হয়। দাদা যবে থেকে বাড়ি করেছে তবে থেকেই বাড়িতে এই পুজো ও করে থাকে এবং ঠাকুরটিও ওর নিজের হাতেই বানানো। ঠাকুরটি মাটির নয় ফাইবারের। তাই ওদের বাড়িতে লোকনাথ বাবার নিত্য পুজো হয়। একটা সময় ছিল যখন আমি আমার বাড়িতে ছোট করে পূজা করতাম। তখন আমি খুব ছোট।
কিন্তু বড় হওয়ার পর থেকে সময় সুযোগ হয়ে ওঠে না ,সাথে যেহেতু দাদার বাড়িতে পুজো হয়, সেখানে যেতে হয়, তাই বাড়িতে আর পূজা করি না।
এবারেও আমাদের নিমন্ত্রণ ছিল। যেহেতু আমার সমস্ত পিসির বাড়ি কাছাকাছি ,তাই আমি মাঝে মধ্যেই ওদের বাড়িতে যাই। কিন্তু পুজোর দিন যাওয়ার ব্যাপারটা আলাদা। সকাল বেলা থেকেই আমাদের সকলের ওদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ থাকে। যেহেতু এবার বাবা বাইরে আছে কাজের সূত্রে। তাই আমার মা বলেছিল সকাল সকাল চলে যেতে।
সেই মতোই সকাল সকাল স্নান করে নিয়ে সকাল দশটার মধ্যে রেডি হয়ে আমি, মা আর ভাই চলে গেলাম আমার পিসতুতো দাদার বাড়িতে। দাদাও কাজের সূত্রে বাইরে ছিল। তাই বৌদি এবং পিসিকে পুরো পুজোর দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। ওদের বাড়িতে সকালবেলাতেই পূজো হয়ে গিয়েছিল ৭টার সময়। কিন্তু সারা দিনের প্রচুর কাজ রয়েছে।
এই দাদা হল আমার বড় পিসির ছেলে। আর এই বড় পিসিদের পাশেই আমাদের নিজেদের ফ্যাক্টরি। যেখানে আমাদের সমস্ত রকম কাজ হয়। আমি এর আগেই বলেছি আমার বাবা একজন শিল্পী এবং আমাদের বাড়িতে মূর্তির ব্যবসা আছে। ছোট বড় সব প্রকারের , নানান ম্যাটেরিয়ালের মূর্তি।
তাই প্রথমে পিসিদের বাড়িতে না ঢুকে, গেলাম কারখানায়। কারখানায় ঢুকেই দেখি সবাই চলে এসেছে। আমি যখন ঢুকেছি তখন মোটামুটি ১২ জন টোটাল কাজ করছে। ছবিগুলো থেকে দেখতে পারবেন সবাই এক একটা মূর্তি নিয়ে ব্যস্ত। সবার সাথে বেশ আলাপচারিতা হলো। কে কি কাজ করছে সেগুলোও একটু দেখে নিলাম।
তারপর কারখানার পাশের বাগানে চলে গেলাম। দেখি চ্যাটার্জি আম বেশ ভালোভাবে হয়েছে। অন্যান্য আমগুলো দেখলাম। কিন্তু এবারে আমের ফলন কম ।তাই গাছের ফাঁকে ফাঁকে লুকিয়ে থাকা আমগুলোকে খুঁজে পেতেও সমস্যা হচ্ছিল।
কারখানায় বেশ কিছুক্ষণ থাকার পরে সবার সাথে কথা বলার পর আমি, মা ,ভাই চলে গেলাম পিসির বাড়িতে। যেখানে পূজো হচ্ছিল। প্রথমে গিয়েই ঠাকুর প্রণাম করে,খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম। সকালের খাওয়া দাওয়াই ছিল লুচি, আলুর দম আর মিষ্টি।
বাড়ি ভর্তি লোকজন ।সবার সাথে অনেকদিন পরে আলাপ হয়ে বেশ মজা হচ্ছিল ।যেহেতু সারাদিন থাকতে হবে তাই আমি সেরকম ভাবেই গুছিয়ে এসেছিলাম। সাথে করে বইখাতাও নিয়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমার সামনেই পরীক্ষা।
সবাই নিচে চারিপাশে আনন্দ করছে এই গরমের মধ্যে, আমার বাইরের বেরোতে ইচ্ছা করছিল না। আমি বৌদির ঘরেই এসি চালিয়ে পড়াশোনা করছিলাম। কিছুক্ষণ পড়ার পরে আমার দাদা দিদির ছেলে মেয়েরা এসে হাজির হলো। কারোর আমি পিসি হই , কারোর আমি মাসি। তার সাথে ছিল আমার ছোট ভাই ঈশান।
ওরা খুব দুষ্টুমি করতে লাগলো ঘরের মধ্যে। যখন ওদের নিয়ে আর সামলানো যাচ্ছে না ,তখন একটু বকুনি দিতে হল। আমার বকুনি শুনে ওরা চুপ তো হলই। কিন্তু আমার একটু খারাপ লাগলো, তাই আমি ওদের সাথে খেলতে লেগে গেলাম। ভাবলাম ওদের সাথে খেললে ওরাও মজা পাবে এবং শান্ত হয়ে বসে থাকবে।
সেই মতোই আমি ওদের সাথে মজার মজার নানা রকম খেলা খেলছিলাম। তার মধ্যে বেশিরভাগ ছিল মাইন্ড গেম। আমার নিজেরও খুবই পছন্দ। এই গেম বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খুবই পরিমাণে সাহায্য হয়। খেলার ফাঁকে আমার বৌদি এসে আমাদের হাতে কোল্ড ড্রিংকস ধরিয়ে দিয়ে গেল। ছোট বাচ্চাদের সাথে গল্প করতে বেশ মজা লাগে। সবই যেহেতু ছেলে তাই ওদের দুরন্তপনা বেশি। কিন্তু তার মধ্যে একটি ছোট্ট মেয়েও দেখতে পারছেন, ও খুব শান্ত হয়ে আমার সাথেই ছিল সব সময়।
বাকি পরের ঘটনাগুলি আমি না হয় আপনাদের সাথে পরের পোস্টে শেয়ার করব। আজকে এখানেই শেষ করলাম। তবে এই লোকনাথ পুজোর দিন খুব ভালোভাবে কেটেছে।
দেখে মনে হচ্ছে লোকনাথ পুজোর দিন ভালোই মজা করেছো । একা কারখানায় ঘুরতে চলে গেলে একবার বললেও না। পোস্টটা পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো ।এই সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পোস্ট পরিদর্শন করে আপনাদের নতুন নতুন পুজো সম্পর্কে জানতে পারছি। দেখেও বেশ ভালো লাগছে। তবে আপনাদের এত ধরনের পুজো হয়ে থাকে সেটা আমার জানা ছিল না। আপনার দাদার বাড়িতে এই পুজো করা হয়ে থাকে। যবে থেকে উনি বাড়ি করেছেন তবে থেকে উনার বাড়িতেই করে থাকেন এবং নিমন্ত্রণ পেয়ে সাথে সাথেই চলে যান। একদমই ঠিক কাজ করেছে আপনার মা, যেহেতু আপনার বাবা বাড়িতে নেই তো সকালবেলা যাওয়াটাই উত্তম বলে মনে করেছেন। ধন্যবাদ লোক নাথ পুজোয় যাওয়ার মুহূর্ত এত সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।