শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণদেবের লীলাক্ষেত্র দক্ষিণেশ্বর - পর্ব ১
সকল সদস্যকে জানাই নমস্কার 🙏🏾
রামকৃষ্ণদেবের লীলাক্ষেত্র ছিল, এই দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি ও বাগান, যেখানে তিনি জীবনের প্রায় তিরিশ বছর (১৮৫৫-১৮৮৫) কাটিয়ে ছিলেন। ১৮৫৫ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন রানি রাসমণি। এই মন্দির কলকাতা থেকে প্রায় ১০ কিমি উত্তরে গঙ্গার পূর্ব তীরে অবস্থিত। এটির জমির পরিমাণ প্রায় ২০ একর। নয় লক্ষ টাকা ব্যয় করে মন্দিরটি নির্মাণ করতে প্রায় আট বছর লেগেছে।
UkipidiaOld map of Dakshieswar Kali Temple
এই সময়কালে তার কাছে অগুন্তী সাধু, ভক্ত, গৃহী, হিন্দু, খ্রীস্টান, ব্রহ্মজ্ঞানী, শাক্ত, বৈষ্ণব, সবাই আসতেন। এই স্থানেই ঠাকুরের সঙ্গে নরেন্দ্রনাথের ( পরবর্তীতে বিবেকানন্দ) প্রথম সাক্ষাত হয়। এই মন্দিরের মা কালীকে শ্রীরামকৃষ্ণ জীবন্ত দর্শন করেছিলেন। ঠিক সেভাবেই মা ভবানী আজো বর্তমান। পঞ্চবটিতে ঠাকুর সাধনা করেছেন। এখানে একটা ঘরে তিনি থাকতেন ও ঈশ্বরের সঙ্গে কথাবার্তা বলতেন। আজ অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থীদের সমাগমে এটি একটি জনাকীর্ণ স্থানে পরিণত হয়েছে। রানি রাসমণি এই দেবালয় তৈরি করে অসংখ্য লোককে সচল কালীমা ও এই মহাপুরুষের লীলাস্থান দর্শন ও পূজা করার সুযোগ করে দিয়েছে। মন্দির চত্বর প্রায় এক বিঘা জমিতে অবস্থিত।
নতুন দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনের স্কাই ওয়াক
আমি এই কালিবাড়ীর বর্ননা করার চেষ্টা করলাম।
সিংহ দরজা
প্রথমেই একটি কংক্রিটের সিংহ দরজা যেখান থেকে মন্দির প্রাঙ্গন শুরু। তারপর মূল প্রবেশদ্বার, এটা এখন সুরক্ষার কারনে দর্শনার্থীদের বাহির পথ হিসেবে ব্যবহার হয়, এর সংলগ্ন ছাদের নিচে সামনের ফাকা জায়গাটা কে দেউড়ি বলে।
দপ্তরখানা ও ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবের ঘর
আপনার সমস্ত ইলেকট্রনিক মোবাইল বা ক্যামেরা জমা নেয় সিকিউরিটি । প্রথমেই উত্তর দিকের সারি সারি ঘর বারান্দা সহ। এর ঠিক মাঝখানে আছ চাঁদনী, একবারে পশ্চিম কোনার ঘরটি ছিল ঠাকুরের। এই ঘরের পশ্চিম দিকের অর্ধ গোলাকৃতি বারান্দায় বসে ঠাকুর গঙ্গা দর্শন করতেন। বাকি ঘর গুলিতে ছিল দপ্তরখানা।
পাকা উঠান ও বিষ্ণুঘর
দেউড়ি বা চাঁদনী পার করলে একটি প্রসস্থ ঢালাই করা উঠান। উঠানের আয়তন প্রায় ১০০ মিটার বাই ৭৫ মিটার। চাতালের পূর্বদিকে সারি দিয়ে তিনটি মন্দির। প্রথম রাধামাধব মন্দির চাতাল থেকে চার ফুট উঁচু বেদীর উপর, তাই সিড়ি বেয়ে উঠতে হয়। এর দক্ষিণে আছে কালী মায়ের মন্দির। এখানে শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণের যুগল বিগ্রহ পশ্চিম মুখী সংহাসনে অধিষ্ঠিত। এর চাতাল পাথর দিয়ে বাঁধানো। মূল মন্দিরের সামনে ভক্তদের জন্য বসার জায়গা আছে। ঠিক তার উপর ছাদে একটা ঝার বাতি লালা শালু কাপড় দিয়ে ঢাকা। মন্দিরের চৌকাঠে একটি পাত্রে শ্রীচরণামৃত রাখা থাকে ভক্তদের জন্য। একবার কৃষ্ণের মূর্তির পা ভেঙ্গে যাওয়ায় একটি নতুন মূর্তি বানানোর কথা ভাবা হয়েছিলো। কিন্তু ঠাকুর ঐ মূর্তি সঠিক ভাবে জোড়ে দিয়ে পূজা করেন। সেই মূর্তি আজও পূজা করা হয়। দৃঢ় বিশ্বাস ও ভক্তি তাকে ঈশ্বরের থেকে অভিন্ন করে । ১৮৫৭-৫৮ সালে রামকৃষ্ণদেব এই মন্দিরের পূজার দায়িত্ব পান।
আমার পোস্টটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
যদিও বিভিন্ন রকম টিভি শো বা ইউটিউব মাঝে মাঝে শ্রী রামকৃষ্ণদেবের নাম শুনেছি! কিন্তু উনার সম্পর্কে আমার তেমন মোটেও ধারণা নেই! বিশেষ করে রানী রাসমণি যে একটা দেবালয় তৈরি করেছে! সেটাও আমি আপনার পোস্ট থেকে জানতে পারলাম! আসলে আপনি অনেক তথ্যবহুল একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন! যেখানে আপনি অনেকগুলো তথ্য আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন! এই তথ্যগুলো আমাদের জানা অবশ্যই প্রয়োজন।
অসংখ্য ধন্যবাদ,, আমাদের সাথে এই অজানা তথ্যগুলো শেয়ার করার জন্য! আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল! ভালো থাকবেন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।