Incredible India monthly contest of May#1| My preferred profession.

Pixabay

আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজ আমি অংশগ্রহণ করতে চলেছি আমাদের কমিউনিটি কর্তৃক আয়োজিত মে মাসের প্রথম সপ্তাহের কনটেস্টে, যার বিষয়বস্তু আমাদের জীবনের সাথেই ঔতপ্রোত ভাবে জড়িত।

আমরা জানি অর্থ উপার্জনের একমাত্র কারণ হলো জীবিকা নির্বাহ করা। জীবিকা নির্বাহের জন্য কোনো না কোনো কাজ আমাদেরকে করতে হয়। তার দ্বারা উপার্জিত অর্থ দিয়ে আমরা আমাদের যাবতীয় প্রয়োজনগুলো পূর্ণ করি।তবে জীবিকা ভিন্ন হয় কারণ আমাদের পছন্দটাও তো ভিন্ন। তবে জীবিকা যাই হোক না কেন তাতে যদি আনন্দ থাকে তাহলে জীবন যাপন অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে।

কনটেস্টের নিয়ম অনুসারে আমি আমার তিনজন বন্ধু
@farhanahossin
@josepha
@hafizur46n কে আমন্ত্রণ জানাতে চাই এই কন্টেস্টে অংশগ্রহণ করে নিজের মতামত প্রকাশ করার জন্য।আর@sduttaskitchen ম্যাম কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।চলুন এবার মূল লেখায় চলে যাই।

জীবিকা অর্জনের নিমিত্তে সকলেই কোনো না কোনো কাজ করে।আমার পছন্দের পেশা যদি বলতে চাই তা মনে হলে আমি নিজেও একটু হেসে নিই। কারণ আমার পছন্দের এই পেশাটি এমন যে আমি হয়তো কখনো ওই পেশায় যেতে পারবো না।

আমার পছন্দের পেশা হলো রাজনীতি।আমার জীবনের বড় একটি অংশ আমি ঢাকা শহরে কাটিয়েছি।এই শহরের অলিতে-গলিতে বিশেষ করে পুরনো ঢাকায় আমি বহু ঘুরেছি। যখনই বের হই তখন দেখি চারপাশে শুধু অব্যবস্থাপনা,নৈরাজ্য, ভোগ দখল ও এমন এমন কিছু দৃশ্য যা আমাকে ব্যথিত করে।

তখন আমি মনে মনে ভাবি আজ যদি আমার হাতে ক্ষমতা থাকতো তাহলে আমি এই গুলোকে ঠিক করে দিতাম। কিভাবে ঠিক করতাম তারও একটি পরিকল্পনা আমার আছে।

যেমন আমি যদি এই শহরের মেয়র হতাম তাহলে সবার আগে এই শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজে হাত দিতাম। এটার জন্য আমি সিটি কর্পোরেশনের কর্মীর উপরে কখনোই নির্ভর করতাম না। প্রতিটি রাস্তার দুপাশে যে বাড়িঘর বা দোকানপাট যা আছে তাদের মালিককে আমি দায়িত্ব দিতাম।

সে রাস্তার উপরের ধূলো -ময়লা-ভাঙ্গা অথবা অসমান যাই থাকুক না কেন এটির দায়িত্ব শুধু সেই জমি-বাড়ি বা দোকানের মালিকের হবে। সে পরিষ্কার করবে মেরামত করবে এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ করবে। বদলে আমি সিটি কর্পোরেশন থেকে তার কর কমিয়ে দিব এবং তাকে আরও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা প্রদান করবো। ফলে এ দায়িত্বটি সে আন্তরিকতার সাথে করবে বলেই আমি বিশ্বাস করি।

এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ড যেহেতু বিভক্ত আছে সে ওয়ার্ডগুলোর কমিশনারদের কে আমি দায়িত্ব দিব যাতে তার ওয়ার্ডে কতজন লোক থাকার জন্য আসছে, কতজন লোক বেরিয়ে যাচ্ছে, পরিবারের সদস্য সংখ্যা কতজন বাড়লো বা কমলো এরকম তথ্যাদি সহ সবকিছু একটি সিস্টেমের মধ্যে থাকবে। ফলে অপরাধ দমন থেকে শুরু করে সমস্ত কার্যাবলী খুব সহজেই করা যাবে।

Pixabay

এছাড়া ঢাকা শহরের প্রতিটি এরিয়াতে ব্যক্তি মালিকানাধীন বেশ বড় অংশের জায়গা আমি ক্রয় করে এটিকে পার্ক, গাছ, জলাধার ও খেলাধুলার জন্য মাঠ হিসেবে করে দিতে চাই।

এছাড়া প্রতিটি রাস্তার ডিভাইডারের মাঝখানে আমি দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য বর্ধনের সাথে সাথে অন্তত ১৫ শতাংশ গাছ লাগিয়ে এই শহরের প্রাণ ফিরিয়ে দিতাম।

এরকম আরো বিভিন্ন ধরনের ভাবনা আমার মনের মাঝে বাসা বেঁধে আছে। আমি যদি রাজনীতিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পারতাম তাহলে অবশ্যই আমি আমার শহরের চেহারা আমূল বদলে দিতে পারতাম। খুব বড় কোন পরিবর্তনের জন্য এমন পেশায় প্রয়োজন বলেই রাজনীতি আমার পছন্দের পেশা।

এক বছর আগেও আমি ছিলাম নিতান্তই একজন সাধারণ গৃহিণী। কিন্তু যে কারণেই হোক আমার কর্মক্ষেত্র কিছুটা বদলে গেছে। বর্তমানে আমি স্টিমিট প্লাটফর্মের একজন গর্বিত সদস্য। এক বছর ধরে আমি এই প্লাটফর্মে কাজ করছি এবং নিজের সামান্য অবস্থান হলেও গড়তে পেরেছি।

Pixabay

আমি আমার এই পেশায় সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট আছি। কারণ এই পেশার সাথেই আমি আমার সংসারের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব গুলো সুন্দরভাবেই পালন করতে পারছি। ফলে আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

এক বছর আগেও আমি যখন প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হই তখন আমি কিছুটা অন্ধকারে হাতড়ে বেড়িয়েছি। আমার বলতে দ্বিধা নেই যে ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া কমিউনিটিতে যুক্ত হওয়ার পরে আমি সঠিক দিশা পেয়েছি।

আমার মত যারা দীর্ঘদিন সংসারের কাজে নিয়োজিত ছিল তাদের জন্য সংসারকে অবহেলা করা খুবই কঠিন কাজ। তবে তারপরও যেহেতু আমি মানুষ তাই মাঝে মাঝে নিজের কাজ থেকে সত্যিই বিচ্যুত হয়ে যাই।

পরক্ষণেই আত্ম উপলব্ধি ঘটে।যে কাজ আমাকে আজকে এই সম্মান এনে দিয়েছে, নিজের একটি আত্মপরিচয় তৈরি করে দিয়েছে তা থেকে বিস্তৃত হওয়া আমার কখনোই উচিত নয়।

এটি যেমন উপার্জনের রাস্তা দেখিয়েছে তেমনি আমার নিজের ভাবনাগুলো,আমার মেধা-মনন ও স্বকীয়তাকে আমি ব্যবহার করতে পেরেছি। যখন কোন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হই বা অনেকের ভিড়ে নিজের নামটি দেখতে পাই তখন খুবই ভালো লাগে।

তখন বুঝতে পারি সত্যিকার অর্থে আমি সন্তুষ্ট এবং পরিতৃপ্ত। যতদিন কাজ করতে সক্ষম আছি চেষ্টা করবো এভাবেই কাজ করে যেতে।

আমি বিশ্বাস করি যে কাজের সন্তুষ্টি যেমন প্রয়োজন তেমনি যে কাজ করা হচ্ছে তাতে উপার্জন ও প্রয়োজন। অর্থ ছাড়া কোন প্রয়োজনই মিটানো সম্ভব নয়। ফলশ্রুতিতে অর্থ অনেক বড় একটি ব্যাপার।

কিন্তু কাজে যদি আনন্দ না থাকে সন্তুষ্টি না থাকে তাহলে সে কাজ বেশিদিন করা যায় না।
তবে উপার্জনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো যে কাজটি কতটা মূল্য যোগ করছে।

একটা অফিসের পিয়ন ও একটা অফিসের চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট দুজনেই একই অফিসে নির্ধারিত সময় কাজ করা সত্ত্বেও একজনের উপার্জন হয়তো লাখের উপরে তো আরেকজনের উপার্জন হয়তো হাজার দশেকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। ফলশ্রুতিতে একজন পিয়ন হয়তো তার কাজে সন্তুষ্ট নাও হতে পারে।

কিন্তু তাকে এটা বুঝতে হবে যে তার কাজটা সে অফিসে কতটা মূল্য যোগ করছে আর একজন চাটার্ড একাউন্ট্যান্ট এর কাজ কতটা মূল্য যোগ করছে। এই ব্যাপারটা যদি সবাই বুঝতে পারে তাহলে জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই আমরা সবাই সন্তুষ্ট হতে পারবে বলেই আমি মনে করি।

পূর্বের মতো এবারও আমি একই কথা বলছি যে আমার স্বপ্নের পেশা হলো রাজনীতি। আমার বড় ভাই রাজনীতির সাথে যুক্ত আছেন। তবে আমি রাজনীতিবিদ হিসেবে হতে চাই একদমই সমাজ সংস্কারী ও বিপ্লব আনয়নকারী।

তবে পেশা জীবনে না পারলেও ব্যক্তি জীবনে আমি এরই অনুসরণ করেছি। আমার পরিবারে যে কারো যেকোনো সময় সমস্যা হতে পারে এমন অনুমান করতে পেরে আমি শুরুতেই তার জন্য ব্যবস্থা নিই।

হোক সেটা কথা দিয়ে অথবা প্রতিবাদ করে,কখনো বা কাউকে সুপরামর্শ দিয়ে। এইসব ছোট ছোট বিভিন্ন কাজ দিয়ে আমি আমার অপূর্ণ স্বপ্নের কিছুটা রূপ সাধন করতে পেরেছি বলে মনে হয়।

Pixabay

তবে বর্তমানে আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে কাজের ক্ষেত্রে সফল হওয়াই আমার স্বপ্ন মনে করি। এ প্লাটফর্মে সফল হওয়ার জন্য যা যা অনুসরণ করা দরকার তা যদি আমি সঠিক ভাবে পালন করতে পারি তবেই নিজেকে সফল মনে করবো। সে পথ ধরে এগোচ্ছি এবং অগ্রজদের দেখানো পথ অনুসরণ করছি।