Contest of February#1 by @sduttaskitchen| All about my fovorite season.
[Edit by PicsArt]
@farhanahossin
@ruthjoe
@karobiamin71
@yahnel
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলা নিকেতন আমাদের এ বাংলাদেশ। প্রকৃতি যেন আপন হাতে এদেশকে সাজিয়েছে মনের মত করে। যেদিকে তাকাই শুধু সবুজের সমারোহ।ছবির মত সারি সারি গ্রাম, আঁকাবাঁকা নদী, দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের ক্ষেত, বন-বনানী আর পাখ- পাখালির মিষ্টি কলরব।আর এদেশে রয়েছে ঋতু বৈচিত্রের এক অপূর্ব সমাহার। আজ এমনই একটি ঋতু নিয়ে আপনাদের সাথে আমার মনের ভাব প্রকাশ করবো।
আপনার সর্বকালের প্রিয় মৌসুম কোনটি এবং কেন? |
---|
আমার সর্বকালের প্রিয় মৌসুম বর্ষাকাল। কেন!!!তা আপনাদের সাথে সংক্ষেপে আলোচনা করছি। যতগুলো ঋতু আছে তার মধ্যে বর্ষাকালে প্রকৃতি সবচেয়ে বেশি সেজে ওঠে বলে আমার মনে হয়। বর্ষাকালে গাছপালা যেমন তরতাজা থাকে ঠিক তেমনি নদী থাকে ভরপুর। পুকুরে পানি থাকে থৈথৈ যা দেখে আমার মনটা কেন যেন আনন্দে ভরে ওঠে।
আমি বড় হয়েছি মফস্বলে। ফলে গ্রামীণ পরিবেশের মধ্যে শহরের মিশ্রিত একটি স্থানে আমার বড় হয়ে ওঠা। প্রাকৃতিক সমস্ত সৌন্দর্যটাই আমি দুচোখ ভরে দেখতে পেরেছি। এক আকাশ বৃষ্টির পরে নদীর পাড়ে যে রংধনু দেখা যায় তা দেখার সৌভাগ্য আমার বর্ষাকালেই হয়েছে। বৃষ্টির প্যাচপ্যাচে কাদা আমাকে কখনো দেখতে হয়নি। বর্ষায় নদীগুলোতে জাগে দুরন্ত ঢেউ। সবুজে ঘেরা গ্রাম গুলো বর্ষার ভরা পানির মধ্যে যেন দ্বীপের মতো ভাসতে থাকে। পরিণত পাট গাছ কিংবা পাকা ধানগুলো পানির মধ্যে আকণ্ঠ ধরে থাকে। তখন এক অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা হয়। বিলে-বিলে ফোটে শাপলা আর পদ্ম ফুল। বনে-বনে ফোটে কদম ফুল।
এ সময় প্রায়ই সারাক্ষণ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে। যখন তখন আকাশ থেকে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির অবিচ্ছিন্ন ধারায় প্রকৃতির রাত হয় অসময়ে।যখন চারিদিকে অন্ধকার হয়ে বৃষ্টি নামে তখন আমার মনে এক স্নিগ্ধ অবসন্নতা তৈরি হয়। ঝমঝম বৃষ্টির আওয়াজে এক কাপ চা নিয়ে যখন বারান্দায় রকিং চেয়ারে বসে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকি এর থেকে যেন প্রশান্তি আমার আর কোন কিছুতেই লাগে না।
আপনি কিভাবে যে ঋতু উপভোগ করেন? বর্ণনা করুন। |
---|
ছোটবেলায় বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজতাম যা এখন আর হয়ে ওঠে না। তবে বর্ষণ সিক্ত সন্ধ্যার মেঘমেধুর আবহাওয়া আমার মনে এক বিচিত্র অনুভূতির জন্ম নেয়। একটানা বরিষণ সংগীত আমাকে তন্ময় করে তোলে। জানালার পাশে বা বারান্দায় আমি সময়টা কাটাতে খুব পছন্দ করি। আর প্রকৃতির রাজ্যের বর্ষণ সংগীত যে ধ্বনি সৃষ্টি করে তা আমি চোখ বন্ধ করে অনুভব করার চেষ্টা করি।দূরে তাকিয়ে দেখি বৃষ্টি আর বাতাসের যুগল নাচন, বৃক্ষের শাখা প্রশাখা, পত্রপল্লব দমকা বাতাসে যখন বারবার নড়ে ওঠে তখন আমার মনে যে ভাবনার ঝড় তৈরি হয় তা আমি কি করে প্রকাশ করব!!! তবে যদি আমি কবি হতাম তাহলে লিখে ফেলতাম অনেক কবিতা। ঠিক যেমনি আমাদের কবি রবি ঠাকুর লিখেছিলেন-
'জল পড়ে
পাতা নড়ে'
বর্ষণমুখর দিনে আমার সঙ্গী যেমন থাকে যেমন আমার অনুভূতি তেমনি আমার খাবারের মেনুতে থাকে বৈচিত্র্যময় কিছু খাবার। ইলিশ ভাজা, ইলিশ ডিমের তেল-ঝোল, ভুনা খিচুড়ি, বেগুন ভাজা আর নানা পদের ভর্তা। বর্ষার বৃষ্টির ঝুমঝুম আওয়াজ এর সাথে এ খাবার এতটা উপাদেয় লাগে যে কি আর বলব! এখানে বর্ষণমুখর দিনে যখন কোন কাজে ঘর থেকে বের হতে হয় তখনও এক অন্যরকম দৃষ্টিভঙ্গি আমার কাজ করে।
চারপাশের মানুষগুলো বৃষ্টিকে কিভাবে উদযাপন করছে, তাদের চোখে-মুখের কেমন ভাষা তা আমি অবলোকন করার চেষ্টা করি ।কেউ অসহায় ভাবে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে থাকে তো কেউবা রোমান্টিকতায়। আসলে বর্ষার দিনে একেক জন একেক ভাবে বৃষ্টিকে দেখে থাকে। তবে আমার কাছে রাতে ঘুমানোর সময় ঝমঝম বৃষ্টির শব্দ বড়ই রোমান্টিক মনে হয়।
কোন জিনিসগুলি আপনার কাছে ঋতুটিকে অনন্য করে তোলে? |
---|
গ্রীষ্মের আগমনে বাংলার প্রকৃতি রুক্ষ বিবর্ণ ও শুষ্ক হয়ে ওঠে। হারিয়ে যায় বাংলার সবুজ প্রকৃতির শ্যামল শোভা। এরপরে প্রচন্ড রুক্ষতা কাটিয়ে নেমে আসে বর্ষা। বর্ষার আগমনে পাল্টে যায় প্রকৃতির রূপ।বৃষ্টি অঝোর ধারায় গাছে- গাছে, পাতায়-পাতায় লাগে শিহরণ, জাগে সজীবতা। বর্ষা ঋতু কেন আমার কাছে এত অনন্য তার একটি ছোট্ট কারণ আজকে আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে চাই।
সাধারণত আমরা শীতের শুরুতে বা শেষে বেড়াতে যাই। কোন একবার হঠাৎ করে প্রোগ্রাম করি যে কক্সবাজার যাব যখন সময়টা ছিল বর্ষাকাল। বেড়ানোর জন্য একেবারেই উপযুক্ত ছিল না কিন্তু তারপরেও আল্লাহর নাম নিয়ে রওনা দিলাম। ভোর বেলায় যখন কক্সবাজারের পাহাড়ে বাস থামল গাড়ির পর্দা সরিয়ে যখন জানালার দিকে তাকালাম এতোঅভিভূত হয়ে গেলাম আমি এবং ওই মুহূর্তে আমার মনে হল যেন আমার মধ্যে কোন ব্যাটারি আছে এবং সেটা চার্জ হয়ে গেছে সম্পূর্ণভাবে। অথচ এই রাস্তা দিয়ে আমি আরো অনেকবার গিয়েছি। কিন্তু কখনোই এমন অনুভূতি হয়নি। এখানে আসলে বর্ষার রূপের কাছে বাকি সবার রূপ হার মেনে গেছে। এ কারণেই বর্ষাকাল ও তার প্রকৃতি আমার এত ভালো লাগে।
আমাদের প্রিয় ঋতু বজায় রাখতে, আপনি কি আমাদের গ্রহে ভারসাম্য বজায় রাখার উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন? ব্যাখ্যা করা. |
---|
বাংলাদেশের জলবায়ু সমভাবাপন্ন। বিভিন্ন ঋতুতে জলবায়ুর কিছুটা তারতম্য দেখা যায় যদিও আমাদের এখানে গ্রীষ্ম,বর্ষা ও শীত এই তিনটি ঋতুই বেশি পরিমাণ বেশি বোঝা যায়। উষ্ণ আদ্র গ্রীষ্মকাল ও শুষ্ক শীতকাল বাংলাদেশের জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য। গ্রীষ্ম ও শীতের মাঝামাঝি সময় থাকে বর্ষাকাল। এ সময় আকাশে মেঘ থাকে এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু আজকাল জলবায়ুর প্রভাবে ও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বর্ষাকালে বৃষ্টি থেকে গরম বেশি পড়ছে। যা কিনা বর্ষার সৌন্দর্যকে একেবারে ম্লান করে দিয়েছে।এখন আর বর্ষাকালে বৃষ্টির পরে ঠান্ডা অনুভূত হয়না। বরং তৈরি হয়ে এক ধরনের দম ঘুটানো গরম আবহাওয়া।
গাছপালার সংখ্যা কমে যাওয়া ও মানুষের তৈরি দূষণ এর জন্য দায়ী। আমাদের গ্রহের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য বর্ষার শুরুতে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো উচিত। তাহলেই বর্ষাকালে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হবে।শীতে যদি শীত না পড়ে,গরমে যদি গরম না পড়ে আর যদি বর্ষাকালে বৃষ্টি না হয় তাহলে তা আমাদের দেশের জলবায়ুর জন্য মোটেও সুখকর নয়। তাই আমার প্রিয় ঋতু কে স্বাভাবিক রাখতে ও আমাদের গ্রহে ভারসাম্য বজায় রাখতে বনায়ন, সবুজায়ন ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার সমস্ত কাজ করা খুবই জরুরী।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
আপু প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।
আপনার লেখাপড়ার মধ্য দিয়ে জানতে পারলাম আপনার প্রিয় ঋতু বর্ষাকাল ।
ভারী বর্ষার সময় ফুটবল খেলতে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে আপনাদের ভালোলাগার বিষয়গুলো সম্পূর্ণই আলাদা। বেশি ভালো লাগলো আপনার অভিমত গুলো পড়ে আর
বেশ ভালোভাবে আপনি সকল প্রশ্নের উত্তর গুলো সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।
আসলেই একেকজনের ভালোলাগার বিষয় একেক রকম। আমি যতদূর দেখেছি গ্রীষ্মকাল ও বর্ষাকাল এ দু ঋতুই অনেকেরই বেশ অপছন্দের। এজন্য বিভিন্ন কারণও দায়ী। সব মিলিয়ে আপনার মন্তব্যটি পেয়ে খুবই ভালো লাগলো।
সবাই যখন শীত ও বসন্ত নিয়ে ব্যস্ত তখন আপনি পছন্দ করলেন বর্ষাকে। খুব ভালো লাগলো একটি ব্যতিক্রমি লেখা পড়ে। শীত নিয়ে পড়তে পড়তে হাপিয়ে ঊঠেছিলাম। আপনি দারুণ ভাবে সব গুলো প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, পাশাপাশি আপনার ছোটবেলায় হারিয়ে যেতে দেখলাম।
ধন্যবাদ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য। শুভকামনা আপনার জন্য।
বাহ! আপনার মন্তব্য পেয়ে তো আমার মন ভালো হয়ে গেল। পুরো পোস্টে আপনি পড়েছেন এটাও বুঝতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।