Better Life With Steem | The Diary game | 15th November |

in Incredible India2 years ago
IMG_20231115_090526.jpg

অনেকদিন ধরেই দেশে নিয়মিতভাবে অবরোধ চলছে। সপ্তাহে মঙ্গলবার একদিন বন্ধ রেখে বাকি ৪ দিনই থাকছে অবরোধ।এ কারণে প্রথমদিকে বাচ্চাদের স্কুল কিছুটা গ্যাপ করলে ও এখন আর স্কুলে যাওয়া বন্ধ করছি না। নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছি কারণ বাচ্চাদের এখন পরীক্ষার সময়। তাই একটু ঝুঁকি থাকলেও সাহস নিয়ে চলতে হচ্ছে।

যাই হোক রুটিন মতো ভোরে ঘুম থেকে উঠে গেলাম। আজকে কয়দিন ধরে বাচ্চাদের টিফিন বানানোর সময় পাচ্ছি না। ওরা বাইরে থেকেই কিনে খাচ্ছে। সকালে অবশ্য নাস্তা খেয়েই যাচ্ছে বাসা থেকে।এরপরে কাজ গুছিয়ে রেডি হয়ে আমি বেরিয়ে পড়লাম ক্যান্টনমেন্টের উদ্দেশ্যে। ছেলে কে অ্যাসেম্বলিতে দিয়ে আমি ওয়েটিং রুমে বসলাম কিছুক্ষণ। একটু পরে নিয়মমাফিক হাঁটতে চলে গেলাম। প্রায় আধা ঘন্টা হেঁটে আসলাম।

IMG_20231115_093121.jpg
IMG_20231115_093112.jpg

এসে দেখি এলাহী কারবার!!! আজকে আমার কয়েকজন বান্ধবী নানা ধরনের খাবার বাসা থেকে তৈরি করে এনেছে।কোনটা রেখে কোনটা খাব এই দোটানায় পড়ে গেলাম। এদিকে নিজেও নাস্তা এনেছি বাসা থেকে। সকাল সকাল মুরগীর হালিম পেয়ে গেলাম ।সাথে আমি বাসা থেকে নিয়ে এসেছিলাম রুটি। তা দিয়ে নাস্তা করলাম। কিছুক্ষণ পরে আরেক বান্ধবী কলিজার সিঙ্গারা, সমুচা নিয়ে আসলো। আমি অবশ্যই এগুলো না খেয়ে ব্যাগে রেখে দিয়েছিলাম।

এরপরে কিছুক্ষণ গল্প-গুজব, আড্ডা করতে করতে ১১ টার দিকে আরেক বান্ধবী বের করল তার চটপটির বক্স।সবাই মিলে খুব মজা করে চটপটিও খেলাম। আমার এক বান্ধবীর মেয়ের আগামীকাল জন্মদিন।আমি তাকে সারপ্রাইজ দিতে চাইলাম।আমি গতকাল একটি কেকের অর্ডার দিয়ে রেখেছিলাম।কেকটা স্কুল ছুটি হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ডেলিভারি দিতে বলি। সোয়া এগারোটার দিকেটার দিকে কেক নিয়ে আসলে ও খুব অবাক হয়ে যায় এবং তার একটি হাস্যেজ্জল ছবি আমি তুলি।খুব ভালো লাগছিল ওর মুখে হাসি দেখে। আসলে এরকম ছোট ছোট উপহার বন্ধুকে দিতে পারলে খুব ভালো লাগে।

IMG_20231115_105502.jpg
IMG_20231115_105446.jpg

আরেকজন বান্ধবী যিনি আমাদের থেকে বয়সে বেশ বড়, উনি আমার জন্য রবিবারে মোকা কেক বানিয়ে আনবেন বললেন।আমি বহুদিন আগে একবার বলেছিলাম যে আমার মোকা কেক খুব পছন্দ। উনি সেটা মনে রেখেছিলেন।আমি তো খুব খুশি হয়ে গেলাম। আসলে উনার নাতনি নিয়ে স্কুলে আসেন।তাই ওনাকে আন্টি বলি। এখন ভাবছি আন্টিকে কি উপহার দেব?

এইসব ভাবতে ভাবতে দেখি আরেক বান্ধবী প্রায় ২৫-৩০ টার মতো আইসক্রিম নিয়ে আসলো। এবং ওখানে যত জন ছিল সবাইকে আইসক্রিম খাওয়ালো।এই আইসক্রিমটা আমি আগে খাইনি এবং খাওয়ার পরে মনে হল যেন আমি আম খাচ্ছি। কারণ এইটার স্বাদ পুরোপুরি আম্রপালি আমের মতো।আমি সাধারণত আইসক্রিম বা মিষ্টি জাতীয় খাবার একটু কম খাই।কিন্তু আজকের আইসক্রিম আমি খুব মজা করে খেয়েছি। আমাদের এত খাবারের গল্প শুনে আপনারা আবার ভেবে বসে না যে, এরা খালি খায় আর খায়। আসলে ৪-৫ ঘন্টা ওখানে বসে থাকি।নিয়মিত কমবেশি সবাই খাবার আমরা আনা নেওয়া করি। কিন্তু মাঝে মাঝে একটু বেশি বেশি হয়ে যায়।

IMG_20231115_113029.jpg
IMG_20231115_113024.jpg

এসব করতে করতে ছেলের স্কুলের ছুটির সময় হয়ে গেল।বাচ্চাদের স্কুল ছুটি নিয়ে আমি খুব বিপাকে পড়েছি। আমার মেয়ের স্কুল শীতকালীন সময় ১৫ মিনিট বাড়িয়ে একটায় করেছে। আর ছেলের স্কুল শীতকালীন সময় ছুটি কমিয়ে সময় কমিয়ে বারোটায় করেছে।একই জায়গা থেকে দুটি বাচ্চার ছুটির গ্যাপ হয়ে পড়েছে এক ঘন্টা। এই এক ঘন্টা আমি কি করবো এটাই ভেবে পাইনা।তো যাই হোক ছেলেকে সেজন্য আধা ঘন্টা দোলনায় বসিয়ে রাখি।এরপর মেয়ের কলেজে চলে যাই। ওখানেও কিছুক্ষণ বসে থাকি ওর ছুটি হওয়া পর্যন্ত। তারপর মেয়েকে নিয়ে বাসায় চলে আসি।

বাসায় আসতে আসতে প্রায় দুইটা বেজে গেল। এরপর গোসল সেরে নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেই। ইদানিং চারিদিকে মনে হয় মাছ ধরার উৎসব শুরু হয়েছে।আমার হাসবেন্ড নিয়মিত মাছ নিয়ে আসছে এই বেলায়। বুঝতে পারছি সে এখন আমাকে খুবই জ্বালাবে কিছুদিন।আজকে নিয়ে এসেছে কাচকি মাছ ও ছোট বোয়াল মাছ। এবার তার কথা অবশ্যই আজকে একটা মাছ রান্না করতে হবে।কি আর করা বিকালে প্রস্তুতি নিতে লাগলাম মাছ রান্নার। এদিকে আমার ছেলে বলছে সে খিচুড়ি খাবে।তাই আজকে আর বেশি কিছু রান্না করবো না। শুধু খিচুড়ি আর একটি বোয়াল মাছ ভুনা করেছি।

IMG_20231115_161812.jpg
IMG_20231115_161753.jpg
IMG_20231115_192614.jpg

এরপর লিখতে বসলাম। বেশ কয়েকদিন ধরে আমার লেখায় অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছিল। কারণ অন্যান্য কাজে আমি একেবারেই সময় করতে পারছিলাম না। তাই আজকে জলদি বসে গেলাম লেখা শেষ করতে। আর এখন লেখা শেষ করে সবকিছু গুছিয়ে আবার আগামী দিনের প্রস্তুতি নিতে থাকলাম।এভাবেই আমার এক একটি দিন ব্যস্ততার সাথে কেটে যায়। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যাতে সুস্থ সবল থেকে আমি আমার দিনগুলো কাটাতে পারি।

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQCjo8xoKWHSEpzPyRNRsVL6gfxRoM2huMuKokQX4y8WbgZrrXEJ88FyZYkLnmKa7wBX1sioJmC.png

Sort:  
Loading...
 2 years ago 

আপনার আজকের দিনের কার্যাবলি পড়ে বেশ ভালই লাগলো। বিশেষ করে কেকটি যিনি বানিয়েছেন তাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। কেকটি অনেক সুন্দর হয়েছে। সব মিলিয়ে আপনার দিনটি আজ অনেক ভালো কেটেছে বলে আমার ধারণা।
তবে এই অবরোধের সময় আমাদের প্রত্যেকেরই সাবধাণ থাকা উচিত। ভালো থাকবেন ম্যম। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আপনাকে অনেক অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি দিনলিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করারর জন্য ।অপেক্ষায় রইলাম নতুন পোস্টের জন্য।
আপনার জন্য রইল শুভকামনা ।

 2 years ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

সারাদিনের কর্মব্যস্ততা পাশাপাশি বান্ধবীদের সাথে কাটানো সুন্দর কিছু মুহুর্ত শেয়ার করেছেন, খুব ভালো লাগলো আওনার লেখাটি পড়ে। শুভকামনা আপনার জন্যে।

 2 years ago 

আমি আপনার সারা দিনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ পড়লাম। আপনার দিনলিপি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনি ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে বের হয়ে গেছেন আপনার বাচ্চাকে সাথে নিয়ে।

তারপর আপনি আপনার বান্ধবীদের সাথে দেখা করেছেন। তাদের কাজ থেকে খাবার খেয়েছেন। আপনার বান্ধবীর মেয়ে জন্মদিন জন্য কেক অর্ডার করেছেন।

তারপর আপনি বাড়ি এসে মাছ কেটে ভাত ও তরকারি রান্না করেছেন। এভাবে আপনি আরো একটি কর্মব্যস্তময় দিন পার করেছেন। যাইহোক আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় দিনলিপি পড়ার জন্য অপেক্ষা থাকলাম এবং আপনি ভালো থাকবেন আপনি সবসময় সেই কামনা করি।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য।

 2 years ago 

বাচ্চাদের স্কুলে ঢুকিয়ে দেবার পরে সবাই মিলে এই আড্ডার মজাই আলাদা। আগে বাসা স্কুলের কাছাকাছি হবার জন্য প্রায়ই এরকম খাবার নিয়ে সব ভাবিরা আসতো। আপনার লেখা পড়তে গিয়ে সেই দিনগুলোতেই যেন চলে গিয়েছিলাম।
ভালো থাকবেন সবসময়। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 2 years ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটা দিনলিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম। থ্যাঙ্ক ইউ

 2 years ago 

গত সকালে ঘুম থেকে উঠে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছেন এবং স্কুলে দিয়ে আপনি কিছুটা সময় আপনার বান্ধবীদের সাথে হাঁটাহাঁটি করলেন। এরপরে বান্ধবীদের সাথে মিলে নাস্তা করলেন খুব মজার মজার খাবার,
এরপরে আপনি আপনার একটা বান্ধবীর মেয়ের জন্য একটা জন্মদিনের কেক গিফট করলেন ।
এর এই কেকটা আগের দিন অর্ডার দিয়ে রেখেছিলেন। এবং আজ আপনাকে ডেলিভারি করে দিল। এবং আপনার বান্ধবী গিফট পেয়ে খুব আনন্দিত।
সেই সাথে আপনি আনন্দিত বন্ধুকে খুব সুন্দর একটি গিফট দিতে পেরে। আর হ্যাঁ আপনাদের আনন্দ দেখে আমি অনেক আনন্দিত হয়েছি আপনাদের জন্য হলে অনেক অনেক প্রার্থনা।

 2 years ago 

আমার বান্ধবী খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিল। কারণ তাকে আমি একেবারেই না জানিয়ে এই কাজটি করেছিলাম। আর এরকম অপ্রত্যাশিত কেক পেয়ে ওর মেয়েও অনেক খুশি হয়েছিল। আপনার মন্তব্য জেনে খুবই ভালো লাগলো। মাঝে মাঝে বন্ধুদেরকে এরকম সারপ্রাইজ দিতে আসলে ভালই লাগে।

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.32
JST 0.034
BTC 108915.32
ETH 3861.81
USDT 1.00
SBD 0.62