বাচ্চাদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে কেন?
সন্তান লালন-পালন,এটি পুরোপুরি নিজের একটি ব্যাপার। এর জন্য না নিতে হয় কোন ট্রেনিং না আছে কোন চিরসত্য নিয়ম। প্রতিটি মানুষ যেমন একে অপর থেকে ভিন্ন তেমনি সন্তান লালন-পালন একে অপরের থেকে ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তাই একজন যেভাবে লালন-পালন করছে তার সন্তানকে আপনাকেও ঠিক একইভাবে করতে হবে এমন কোন বাধা ধরা নিয়ম নেই। তাই সন্তানকে নিজের মতো করে আদর্শ,সততা ও সুশিক্ষায় শিক্ষিত করাই করাই পিতা-মাতার দায়িত্ব। তবে মা বাবার বেশ কিছু অসতর্কতার কারণে শিশু সন্তানের মনে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আজকে এরকম একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি।
মূলত সন্তান মানুষ করা বেশ কঠিন কাজ। সেটা করতে গিয়ে নিজেকেও যেমন অনেকের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয়, তেমনই আগবাড়িয়ে অনেকের উপদেশও শুনতে হয়। তবে সন্তানের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় হল অভিভাবক কীভাবে বিষয়গুলো সামলাচ্ছেন তার উপরে। কারণ বাচ্চাদের সবচেয়ে কাছের মানুষ তারাই। অভিভাবকদের আচরণ ও ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে শিশুদের উপরে। সকলেই চান তাদের সন্তান যেন ভালোভাবে মানুষ হয়। তবে কোন পদ্ধতি বা পন্থা অবলম্বন করলে সন্তান ভালোভাবে মানুষ হতে পারে, তা অনেক সময়ই পিতা-মাতা ভালো করে বুঝে উঠতে পারে না। আর সে জন্যই অনেক সময়ে কিছু কারণে বাচ্চাদের আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানিতে এসে ঠেকে। কোন কোন বিষয়গুলো এর জন্য দায়ী আজকে তা জেনে নিই যাতে বাচ্চার আত্মবিশ্বাসে কখনও কমতি না হয়।
• ভুল হলেই চেঁচানো: বাচ্চারা ভুল করবেই। যদি সব সময়ই তার জন্য চেঁচান বকাবকি করেন, তাহলে বাচ্চার আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে। যদি তাকে শুধরায়ে চান, তাহলে ডেকে আলাদা করে কথা বলুন। তাকে বোঝান, কোথায় ভুল হল।
• তুলনা টানা: অন্যদের সঙ্গে নিজের বাচ্চাকে তুলনা করবেন না। প্রত্যেকেই আলাদা ব্যক্তিত্বের। সকলের আলাদা গুণ রয়েছে। সেটা মাথায় রাখবেন।
•বেশি ভালোবাসা: নিজের বাচ্চাকে ভালোবাসবেন তাতে দোষের কিছু নেই। তবে অতিরিক্ত আদিখ্যেতা, ভালোবাসায় নিজের আত্মবিশ্বাসের জায়গাটাই বাচ্চা তৈরি করতে পারবে না। সেটা মাথায় রাখবেন।
•সকলের সামনে অপমান করা: বাচ্চা যাই ভুল করুক না কেন, সকলের সামনে তাকে মারধর করা বা অপমান করা ইত্যাদি করবেন না। প্রয়োজনে আলাদা ডেকে কথা বলুন।
• বাহবা না দেওয়া: বাহবা দিলে বা সাহস দিলে বাচ্চাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়। তাই ছোট-বড় সব কাজেই বাচ্চাদের বাহবা দিন।
•অন্যদের দেখে কাজ করা: অন্য বাবা-মায়েরা কীভাবে বাচ্চাকে মানুষ করছেন, সেটা দেখে একই জিনিস নিজের বাচ্চার উপরে খাটানোর চেষ্টা করবেন না। প্রতিটি শিশুই আলাদা ধাঁচে তৈরি। তাই সকলকে আলাদা আলাদাভাবে মানুষ করতে হবে।
•বেশি শৃঙ্খলা: শৃঙ্খলা অবশ্যই প্রয়োজন। তবে বেশি শৃঙ্খলার জালে বাচ্চাকে আবদ্ধ করতে গিয়ে শৈশব যাতে নষ্ট হয়ে যায় ও বাচ্চা যাতে বিপদগামী না হয়ে পড়ে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে সন্তান মানুষ করুন।
আপনি খুব সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে এই পোস্টে আলোচনা করেছেন। বাবা মাকে সর্বপ্রথম এটা বুঝতে হবে যে প্রত্যেক মানুষ যেমন ভিন্ন তেমনি তাদের শিশু সন্তানও। সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে অন্যকে অনুকরণ বা অনুসরণ করলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বাচ্চাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য আপনি যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন আমি তার সঙ্গে সহমত পোষণ করি।