সাধারণ চিনাবাদামের অসাধারণ গুণ।
![]() |
---|
অবসর সময়ে বা আড্ডায় সঙ্গ দিতে চীনাবাদামের জুড়ি নেই। বাংলাদেশে তো বটেই সারা বিশ্বজুড়ে চীনাবাদাম টাইমপাস ফুড হিসেবে জনপ্রিয়। পৃথিবীতে যত ধরনের বাদাম উৎপাদিত হয়, চীনাবাদাম তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয়। কাঁচা এবং ভাজা বাদাম তো বটেই, চীনাবাদাম মাখন, জ্যাম, চানাচুর, কেক, বিস্কুট, তরকারি, ভর্তা, তেল ইত্যাদি তৈরীতেও ব্যবহার করা হয়।
চীনাবাদামের শুরুতে চীন শব্দটা থাকলেও এটা মূলত দক্ষিণ আমেরিকায় প্রথম পাওয়া যায়। এছাড়া প্রাচীনকালেও এর চাষ করা হতো। পেরুর লিমায় পাওয়া বহু প্রাচীন নিদর্শনের গায়ে বাদাম গাছের চিত্রাংকন দেখা গেছে। ধারণা করা হয়, ইনকা সভ্যতার সময়েও বাদাম খাওয়ার প্রচলন ছিল।
![]() |
---|
চীনাবাদাম ইউরোপে নিয়ে আসে স্প্যানিশরা। তামাকপাতার মতো তখন বাদামও ব্যবহার হতো বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে। পরে ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের থেকে আফ্রিকায় চীনাবাদামের প্রচলন শুরু হয়। অবশেষে আফ্রিকান ক্রীতদাসদের মাধ্যমে আফ্রিকা থেকে বাদাম প্রবেশ করে উত্তর আমেরিকায়।
যুক্তরাষ্ট্রে চীনাবাদাম খাওয়া প্রচলন শুরু হয় তাদের গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে। তবে তখন তা গৃহপালিত পশুদের খাবার হিসেবেই বেশি প্রচলিত ছিল। যুদ্ধের সময় খাদ্য সংকট দেখা দিলে কিছু সৈনিক বিকল্প খাদ্য হিসেবে বেছে নেয় চীনাবাদাম। পরে ধীরে ধীরে তা সৈনিকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার কিছু দিন পর পিটি বারনাম নামে এক সার্কাস দলের মালিক সার্কাস চলাকালে বাদাম ভেজে বিক্রি করা শুরু করে এ বাদামভাজা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। অনেক ফেরিওয়ালাই তখন আয়ের নতুন উপায় হিসেবে চীনাবাদাম ভাজাকে বেছে নেয়।
![]() |
---|
বর্তমানে সারা বিশ্বে চীনাবাদানের মোট উৎপাদনের ৪১ ভাগ চীন উৎপাদন করে। এ কারণেই বোধহয় এ বাদামকে চীনাবাদাম বলা হয়। চিনা বাদামই একমাত্র বাদাম যা মাটির নিচে হয়।
চীনাবাদাম কে ইংরেজিতে পিনাট বলা হয়।এর নাম পিনাট হওয়ার কারণ হলো এটা কিছুটা 'পি' বা মটরের মতো দেখতে। অন্যান্য বাদামের তুলনার চীনাবাদাম খুব সহজলভ্য বলেই হয়তো অনেকেই একে পাত্তা দিতে চান না। কিন্তু খাদ্যগুণে চীনাবাদাম কোনো অংশেই কম নয়।
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা চীনাবাদামে রয়েছে:-
ভিটামিন | পরিমাণ |
---|---|
কার্বোহাইড্রেট | ৬০ গ্রাম |
প্রোটিন | ৫৩.৩ গ্রাম |
খাদ্যশক্তি | ৫৬৬ কিলোক্যালরি |
ক্যালসিয়াম | ৯০ মিলি গ্রাম |
আয়রন | ৩৫০ মিলিগ্রাম |
ক্যারোটিন | ৩৭ মাইক্রোগ্রাম |
ভিটামিন | বি-১ ০.৯০ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন | বি-২ ০.৩০ মিলিগ্রাম |
![]() |
---|
বাদাম ভেজে নিলে এর ক্যারোটিনের মান কমে যায়। তবে বাকি সব উপাদান প্রায় সমানই থাকে। স্বাস্থ্য রক্ষায় চীনাবাদামের রয়েছে নানা অবদান। যেমন-
১।চীনাবাদামের প্রোটিন দেহ গঠনে ও মাংসপেশি তৈরিতে সাহায্য করে।
২।এর কো-এনজাইম হার্টকে অক্সিজেনের অভাব থেকে রক্ষা করে।
৩।চীনাবাদামে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট। যা রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে।
৪।এতে উচ্চমাত্রায় নিয়াসিন থাকার ফলে দেহকাষ সুরক্ষিত থাকে। বার্ধক্য জনিত স্মৃতিভ্রংশ রোগ প্রতিরোধ করে।
৫। মস্তিষ্কের রক্তনালী সুস্থ রাখে ও শরীরে রক্ত চলাচলে বাধা দূর করে।
৫। চীনাবাদাম বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার ও হার্টের রোগ প্রতিরোধ করে।
৬।চীনাবাদামে রয়েছে প্রচুর আয়রন।এটি রক্তে লোহিতকণিকার কার্যক্রম বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৭।চীনাবাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
ই। আরো আছে ক্যারোটিন। এই ক্যারোটিন ত্বক ও চুল সুন্দর রাখে। ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।
![]() |
---|
.
বাদাম আমার একটি পছন্দের খাবার। সকাল বেলা উঠে মাঝে মধ্যেই বাদাম খাওয়া হয়। দক্ষিণ আমেরিকায় এটি প্রথম পাওয়া যায় শুনে বেশ অবাক হলাম। আমি এতদিন ভাবতাম নামের আগে চীনা শব্দটি আছে তাই এটি চীন থেকেই বোধহয় আগত। শুনেছি যে, বাদাম খেলে ব্রেনের অনেক উপকার হয় এর সাথে সাথে যে আরও এত উপকার পাওয়া যায় তা আপনার পোস্ট থেকে জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
বাদাম নিয়ে ছাত্রজীবনে অনেকের অনেক ঘটনা রয়েছে। আমিও এর বাইরে নই। আজ আপনার বাদাম নিয়ে লিখা পড়ে পুরনো অনেক কিছুই মনে পরে গেলো। যাইহোক চিনা বাদাম আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয়। আমার সব থেকে বেশি ভালো লাগে বাদাম ভর্তা খেতে। সকালে বাদাম ভর্তা দিয়ে ভাত সত্যি যেন অমৃত।
আপনি বাদাম নিয়ে দারুন সব তথ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। নতুন অনেক কিছু জানলাম আপনার লিখা পড়ে। ভালো থাকবেন। আপনার আগামী লিখা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
আমরা নিজেরাই চীনাবাদাম চাষ করি আর আমাদের এই দিকে বাদামের চাষ প্রচুর পরিমাণে হয়ে থাকে ৷ একসময় বাদাম খেতেই মন চায় না তবে চীনাবাদাম খেতে বেশ টেষ্টি লাগে ৷ বাদামের ভর্তা খেতেও বেশ ভারি মজা লাগে ৷
তাছাড়াও বাদামের বেশ কিছু পুষ্টি গুন রয়েছে এবং বাদাম দিয়ে বেশ কিছু ব্যবহারকারী জিনিস ও তৈরি হয়ে থাকে ৷
জেনে খুব ভালো লাগলো যা আপনারাও চিনাবাদাম চাষ করেন। নিশ্চয়ই তাজা বাদাম আপনারা ভেজে খেয়ে দেখেছেন। ভাজা বাদাম খেতে সত্যিই ভালো লাগে। খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে।
বাদাম পছন্দ করে না এমন কাউকে হয়ত পাওয়া যাবে না। তবে আমার কাছে চিনা বাদামের থেকে কাঠ বাদাম বেশি পছন্দ করি এবং খেতে বেশ ভালো হয়ে থাকে।
চমৎকার লাগলো তথ্যটা। আর তাছাড়া আপনার পোস্টটি অনেক তথ্য তুলে ধরেছেন যেগুলো আমাদের জানা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে।
চিনা বাদাম পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে বিশেষ করে আমি তো অনেক পছন্দ করি ।।
খাবারের তালিকায় প্রতিদিন না পারলেও চেষ্টা করি দুই একদিন পরপর চিনা বাদাম খাওয়ার।
চিনা বাদামের অনেক উপকারিতা সম্পর্কে জানা থাকলেও তবে আপনি যে উপকারিতা গুলো শেয়ার করেছেন , সেগুলো সম্পর্কে অবগত ছিলাম না ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লেখা শেয়ার করার জন্য।