মেনে নেয়ার প্রবণতা সবার এক সমান নয়।
অনেকে গলা উঁচু করে সদর্পে বলে থাকে আমি ভাঙ্গি কিন্তু মচকাই না।এ কথাটি গুরুতর অর্থ বহন করে।ভেবে দেখুন তো, নিজেকে শেষ করে দেবে তবু একটু পরিবর্তন,একটা ঘটনা, হয়তো কোন কথা বা কোন অবস্থা মেনে নেবে না।
এমন মানুষ সমাজে খুব একটা বিরল নয়।এদের কে বেশির ভাগ বলা হয়ে থাকে ইগো সম্পন্ন বা অহংকারী।কিন্তু আসলেই কি তাই!!!এমনও হতে পারে এরা অধিকতর আত্মমর্যাদা সম্পন্ন।কিন্তু ভাবনার বিষয় হলো নিজের আত্মমর্যাদা কি সব সময় উপরে রাখবো।সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কি মানুষ বদলাবে না!!!
পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সবচেয়ে বেশি খাপ খাইয়ে যে নিতে পারে তা হলো মানুষ।এজন্য পৃথিবীতে বহু কিছুর বিলুপ্তি ঘটলেও মানুষের বিলুপ্তি হয়নি।
আমার মনে হয় এরজন্য বয়স অনেকাংশে দায়ী।যে কথাটি ১০-১২ বছরে কখনোই মেনে নিতাম না,ঘাড় তেড়া করে থাকতাম।হতে পারে সে কথাটি একটু পরিণত বয়সে খুব সহজে মেনে নিতে পারি।মানুষ বিভিন্ন কারণে নিজেকে পরিবর্তন করে।কখনো পরিস্থিতির কারণে, কখনো প্রিয়জনের জন্য,কখনো বা নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য।পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।
আসলে প্রিয়জনের জন্য বদলানোতে কোন লজ্জার কিছু নেই।না প্রিয়জনের জন্য নিজের প্রিয় জিনিস টাকে ছাড় দিতে।কারণ অসম্ভব কাজকে সম্ভব করা যায় শুধু ভালোবাসার দ্বারাই।বহু অসাধ্য কেও সাধন করা যায়।কিন্তু জীবনে যদি এমন সময় আসে যেখানে আপনার জীবনটাকে শুধু যাপন করে যাওয়া ছাড়া আর আপনার হাতে কোন অপশন নেই তখন কি করা উচিত? এই ভাবনাটা আমাকে ঘিরে রাখে সবসময়।
লড়াই করারও একটা সময় থাকে, বয়স থাকে। সব সময় লড়াই ভালো লাগেনা।নিজেকে বারবার প্রমাণ করতে ইচ্ছে করে না।বলতে পারেন এ কেমন হতাশার কথা!!! না এ হতাশার কথা নয়।বরং মধ্যে চরম পরিস্থিতিতে আপনার বেঁচে থাকার প্রাণসঞ্চারণ করে যাওয়ার চেষ্টা করা মাত্র।
হিন্দি নাটক, সিনেমা একটা কথা বহুবার শুনেছি।কথাটি হলো-
" জান হ্যায় তো জাহান হ্যায়।"
এবার আসি ব্যক্তিত্বের সাথে মেনে নেওয়ার সংঘাতের বিষয়টিতে।চরম ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ব্যক্তির সাথে মেনে নেওয়ার ব্যাপারটি কিছুটা সংঘর্ষিক।
কোন এক গল্পের বইতে এক প্রচন্ড ব্যক্তিত্বময় নারীর কথা পড়েছিলাম।তিনি তার স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কটি মানতে পারেননি। কিন্তু সামাজিক বিভিন্ন চাপে ও সন্তানদের কারণে সংসারও ছেড়ে যেতে পারেননি।ফলশ্রুতিতে তিনি মেনে নেওয়ার একটি নতুন পদ্ধতি চালু করেছিলেন।স্বামীর সাথে একই কক্ষে থাকতেন কিন্তু আলাদা ঘুমাতেন।আজীবন স্বামীর সাথে এভাবেই তিনি তার দাম্পত্য জীবন কাটিয়ে গেছেন।
আমি এ তর্কে যেতে চাই না যে উনি ঠিক করেছিলেন নাকি ভুল।সাতকাহনের দীপাবলি কে দেখেছি শেষ পর্যন্ত প্রচন্ড ব্যক্তিত্ব নিয়ে বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করতে।অস্তিত্ব নামক হিন্দি একটি সিরিয়াল অনেক আগে দেখতাম।সে সিরিয়ালে নায়িকার পিতা নায়িকা কে বলেছিল- স্বামীর প্রচন্ড অন্যায়,এমনকি পরকীয়া কেও ক্ষমা করে দেয়ার মত ক্ষমতা নাকি সব নারীরই থাকে।
তবে কারণ যাই হোক চারিদিকে যখন বিভিন্ন সম্পর্ক অবলোকন করি তখন একটা জিনিস খুব ভালোভাবেই পেয়েছি।আর তাহলো আমরা সবাই কোন না কোন ভাবে একে অপরকে মেনে নিচ্ছি।তবে এর মাঝে যে দু চারজন ব্যতিক্রম, মানতে পারছে না তারা ও কিন্তু উদাহরণ হয়নি। যদিও এটা বুঝবার ক্ষমতা সবার এক সমান নয়।
মানুষ বলতেই ভুল। আমাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যদি কাউকে ক্ষমা না করি তাহলে আমরা কখনোই জীবনের উন্নতি করতে পারবো না। মানুষ হিসেবে আমাদের উচিত সবকিছু মেনে নিয়ে সুন্দরভাবে জীবন যাপন করা। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।