আজ আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।
![]() |
---|
নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি আমি কারণ সেই আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে জন্ম নিই নি।তাহলে হয়তো কন্যা সন্তান হওয়ার অপরাধে আমাকেও আমার পিতা জীবন্ত কবর দিয়ে দিতেন। নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি এজন্য যে আমি সেই যুগে জন্মগ্রহণ করিনি যে যুগে শাড়ির সাথে সায়া,ব্লাউজ পরিধানের কোন রীতি ছিল না।এমনও সময় ছিল যখন নারীরা তাদের বক্ষকে ঢাকার অনুমতি ও পেত না। ইস! কি ভয়াবহ সেই সময়টা।ভাবলেই যেন শরীর শিওরে ওঠে!!!
আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি এজন্য যে আমি সেই মীরজাফরের সময়ে জন্মগ্রহণ করিনি।তাহলে হয়তো বিশ্বাসঘাতকের পল্টনকে নিজ চোখে দেখতে হতো।যাদের কথা ভেবেই ঘৃণা পোষণ করি।যাদের জন্য আমরা ২০০ বছর পরাধীন ছিলাম।তাদেরকে দেখার বিবমিষা অনুভূতি পেতে হতো।
মাঝে মাঝে মনে হয় আমি তো মানুষ না হয়ে পশু-পাখি-প্রাণী এটাও তো হতে পারতাম। আচ্ছা! এই প্রাণীগুলো মানুষ কে দেখলে কি হতাশায় ভোগে? তারা কি ভাবে যে সৃষ্টিকর্তা মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।না জানি তারা কতই ভাগ্যবান! সত্যিই! আমি মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।
![]() |
---|
মাঝে মাঝে ভাবি ঘরে পালিত কুকুর,বিড়ালের কথা।আমার বোনের পালিত বিড়াল মার্সেলার কথা।ও কেমন আছে ওর মনিব কে ছাড়া!ওর অন্তরের অনুভূতিটা কি?কেমন অনুভূত হয় মনিবের সাথে মিশতে?ওরা কতটা প্রাণ ভরে তাদের মনিবকে ভালবাসে সে অনুভূতিটা আমরা কখনো বুঝতে পারি না।কারণ মানব জাতিতে মনিবের প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা বিরল বৈকি।
যে মায়ের বুকে জন্ম নিয়ে মায়ের চেহারাটা কলঙ্কিত করতে পারে তারা কাউকে কি ভালবাসবে?তারা তো নিজের জন্মদাত্রী মাকে ও কলঙ্কিত করতে আজ দ্বিধাগ্রস্থ নয়।আজ আমি নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারছি না। আমি এই যে একবিংশ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করেছি।যেখানে মোবাইল,ইন্টারনেট, থালা সদৃশ্য যোগাযোগের বস্তু,এমন অনেক আশ্চর্য যাদুযন্ত্র আমার চারপাশে ঘুরছে।
![]() |
---|
না,এরপরও আমি নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারছি না।আমি একটি স্বাধীন দেশে জন্মগ্রহণ করেছি।যেখানে আমার নিঃশ্বাস নেবার কথা প্রাণ ভরে।যে দেশের মাটি শস্য,শ্যামলা,সুফলা। প্রকৃতি আমার অন্তরকে জুড়িয়ে দেয়।সেই দেশের মানুষ গুলো যখন দেশের পবিত্র মাটিকে রক্তাক্ত করে তখন মনে হয়, আমার জন্ম বৃথা।কোথায় সেই দেশ প্রেম?কোথায় সেই দেশের প্রতি প্রতিজ্ঞা? যে প্রতিজ্ঞা মানুষ জন্মের সাথে সাথে দেশ মাতার প্রতি করে।
চারিদিকে লড়াই ধরিত্রীর বাতাসে সর্বদাই বয়েছে।কখনো প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে, কখনো ফিলিস্তিন ইহুদির যুদ্ধ, কখনো ভারত চীনের যুদ্ধ,কখনো আমেরিকা আফগানিস্তান যুদ্ধ,কখনো ভিয়েতনাম যুদ্ধ,কখনো আমার এই প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ পাকিস্তান যুদ্ধ।
আচ্ছা! কোন সময় জন্মগ্রহণ করলে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ হতে পারতাম?আসলেই সঠিক উত্তর বলা মুস্কিল।তবে একটা ক্ষেত্রে নিজেকে সবচেয়ে বেশি সৌভাগ্যবান মনে করি যে এমন সময়ে জন্মেছি যে আমি দেখেছি একঝাঁক তারুণ্যের ঝংকার। এই তারুণ্য এমন এক সম্পদ যা লুভর জাদুঘরে সাজিয়ে রাখার মত।
![]() |
---|
যা দেখা যায় না!!!শুধু অনুভব করতে হয়।মোনালিসার ছবির মত যেদিকেই তাকান বদলে যায়,সম্পূর্ণ করার পর ও কমতি রয়ে গেছে কিছু।আমার দেশেও কোথাও না কোথাও কমতি রয়েই যাচ্ছে।তবে বিজয় আসবে সুনিশ্চিত। আসুন প্রাণের স্পন্দনে জেগে উঠি।কিছু করতে পারি আর না পারি তবুও তরুণদের অফুরন্ত প্রাণ শক্তিতে আমরাও জেগে উঠি।
[নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে কোন ভাবেই আজকে ফ্রি সাইট থেকে ছবি নিতে পারিনি।তাই স্ক্রিনশট দিয়ে এই ছবিগুলো দিয়েছি]
একটি দেশ যখন ক্ষমতালোভে পড়ে কোন দল প্রচলন করে সেই দল কখনোই দেশকে ভালোবাসে না সে শুধু ক্ষমতাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
স্বাধীন দেশে আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা নাই। আমার ভাবতে ঘৃণা লাগে যে মানুষ কতটা ক্ষমতা লুভী হলে রক্তের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে তার বুক কাঁপে না। সমসাময়িক প্রেক্ষাপট নিয়ে খুব সুন্দর একটি আর্টিকেল আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন আপু।