জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।
আপনাকে যদি কেউ প্রশ্ন করে আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ কি? তাহলে কি বলবেন গাড়ী, বাড়ী, অর্থ, জমাজমি,স্ত্রী- পরিবার? যদি তাই বলেন বলতে পারেন। অন্য কিছুও বলতে পারেন। প্রকৃত পক্ষে বড় সম্পদ কি তা জিজ্ঞাস করা আপনাকে বিপাকে ফেলার জন্য নয়। বরং এর উত্তর দিতে গেলে মনস্তাত্বিক ভাবে তিনটি উত্তর পেতে পারি।
প্রথমত আপনার গাড়ী-বাড়ী, সম্পদ, স্ত্রী- পরিবার, সন্তান-সন্ততি, আরাম -আয়েস, বিলাস, সুখ অর্থাৎ যা কিছু সুখ ও ভোগের তাইই এবং আরো চাই, আরো পাই ইত্যাদি যাকে বলা হয় আদিম প্রবৃত্তি।স্বার্থপরতা এর ধর্ম। শৈশব কালে মা বাবার স্বার্থপরতা,নৈতিকতাহীন শিক্ষার প্রভাবে আপনি প্রভাবিত হলে এ ধরনের উত্তর দিতে পারেন।
দ্বিতীয়ত উভয় চাহিদা পূরণ করতে চায় Ego অর্থাৎ অহম। সে দেখে এতে অনেক বাঁধা আছে। এগুলো ঠেকাতে ধৈর্য্য, শ্রম, অর্থ এবং আমার বলতে সব আমার নয় আমাদেরও। অর্থাৎ বাস্তববাদী। এই ক্ষেত্রে অহম অবদমিত হয়ে বলতে হয় অনেক ক্ষেত্রে। আপনার শৈশব জীবনে যদি অহম এর বিকাশ সঠিকভাবে হয়ে থাকে তাহলে আপনি বাস্তবধর্মী।
তৃতীয়তঃ ধর্মীয়, নৈতিক এবং সামাজিক মূল্য বোধ ধারা গড়ে উঠে। আপনার ব্যক্তিত্ব বিকাশে যদি অতি অহম প্রাধান্য বিস্তার করে তাহলে আপনি নীতি, ধর্ম, সামাজিক, ন্যায়নীতি পরিপন্থী কোন কাজ করতে পারবেন না। ঐ ধরনের কথায় সায় দেবেন না। সমর্থনও করবেন না। পার্থিব সম্পদকে গুরুত্বও দেবেন না।
আপনি প্রশ্নটির কি উত্তর দিতেন তা মনে মনে নিশ্চয়ই ঠিক করে রেখেছিলেন? আমাকে আপনার উত্তরটি না বলে মনের সঙ্গে যাচাই করুন। নিজেকে মূল্যায়ন করুন।
প্রশ্নটির সমাধান এখনও হয়নি। আপনার জীবনের সবচাইতে বড় সম্পদ কি? মনে মনে যাই বলুন আপনি প্রকাশ না করলেও মানুষ জেনে যায়।
অর্থের প্রতি যদি মোহ থাকে তাহলে অর্থই হবে আপনার উত্তর। স্বার্থপরতা থাকলে আপনি ঢেকে রাখবেন! কি দিয়ে? আপনার প্রতিটি কাজ ও কথায় আপনার সমাজে মূল্যায়ন হচ্ছে। ছোট্ট শিশুটিকে আপনি একবার মিথ্যে আশ্বাস দিলে আপনাকে মিথ্যেবাদী বলে জানবে। আর বিশ্বাসই করতে চাইবে না।
আপনি সমাজে লোভী, স্বার্থপর কাজ করবেন আর আপনাকে ত্যাগী, নিঃস্বার্থ মানুষ ভাববে এমন ভাবনা ভাবেন কি ভাবে? আম গাছের চারা লাগিয়ে কাঁঠাল ফল কি কখনও কেউ পেয়েছেন?
অর্থ, নারী, গাড়ী, বাড়ী হচ্ছে আপনার নিজের জন্য। এই স্তরে নেতৃত্ব দিলে মানুষ যে কোন অপরাধ করতে পারে। অপরাধের জন্ম এখান থেকেই। এর বিপরীত হচ্ছে সেটাই যেটা মানুষকে আদর্শবান করে। এই স্তরে মানুষ খারাপ কোন কাজ করতে পারে না। এর বিকাশে মানুষ নীতিবান, চরিত্রবান, ব্যক্তিত্ববান, আদর্শবান হয়। এরাই পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ শ্রেণী স্থান পেতে পারে।
তাহলে এবার কি বলবেন আপনার জীবনের সবচাইতে বড় সম্পদ হচ্ছে ব্যক্তিত্ব।
ব্যক্তি কোন ধরনের গুনাবলীর অধিকারী তার ভিত্তিতে ই সমাজে তার মূল্যায়ন হয়।আমাদের চোখের সামনে অনেক রাজনৈতিক নেতা, সমাজ কর্মী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্ব আছেন। আপনি তাদেরকে একজন একজন করে আপনার চোখের সামনে হাজির করুন আর যুক্তি দিয়ে বিচার করুন।
দেখবেন কাউকে বিদেশী এজেন্ট বলে আপনি তার কথাই শুনতে চাইবেন না। কাউকে ধর্মীয় গোঁড়ামী বলে গালি দিবেন। কাউকে কমিউনিষ্ট বলে প্রত্যাখ্যান আবার কাউকে উদার গণতান্ত্রিক বলে গ্রহণ করবেন। গ্রহণ আর বর্জন এর দুটির একটিই হল আমাদের করণীয়।
আপনার শিক্ষকদের সকলকেই কি আপনি সমান সম্মান করেন? না করেন না। তাকেই বেশী সম্মান করেন যার মধ্যে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব আছে। একইভাবে ব্যবসায়ী গুলোকে দুভাগে ভাগ করে ফেলতে পারেন সৎ ও -অসৎ।
তাই জীবনের বড় সম্পদ আপনি কি মনে করেন নিশ্চয়ই আজ মন্তব্যের ঘরে তা জানিয়ে যাবেন।
বেশ সুন্দর একটি শিক্ষনীয় বিষয়ে আজকে আলোচনা করেছেন অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট টি পড়ে ৷
আশা করি এমন পোস্ট আমাদের মাঝে আবারো নিয়ে আসবেন ৷
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷
চেষ্টা করব এরকম পোস্ট আরো লিখতে। তবে এ ধরনের পোস্ট লিখতে সময় অনেক বেশি লাগে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
জীবিনের সবথেকে বড় সম্পদ মানুষ আমাকে কিভাবে মূল্যায়ন করে সেটি। সবাই মন থেকে ভালোবাসুক, ভালো বলুক এয়াতাই তো বড় পাওয়া তাই নয় কি?
আসলে জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ কি এটা এক কথা বলায় খুবই মুশকিল। তবে আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয় এতকিছুর পরেও এই যে আমরা বেঁচে আছি শ্বাস নিতে পারছি এটিই বা কম কিসের। যদি এটা সম্পদ নয়। যাইহোক আমি কোন তর্ক বিতর্কে যেতে চাই না। আপনার মন্তব্য পেয়ে খুবই ভালো লাগলো।
একদম ই তাই, বড় সম্পদ কি আসলে এটা আমরা হয়তো শেষ বয়সে গিয়ে বুঝতে পারবো।