একটি বিয়ের দিনকে ঘিরে আমার অনুভূতি।

in Incredible India4 hours ago
IMG_20240713_185102.jpg

বিয়ের দিন যে কোন মেয়ের জন্য অনেক বিশেষ একটি দিন।এই দিনটিতে একটা মেয়ে চায় তাকে যেন সবচেয়ে সুন্দর লাগে।যে নতুন জীবনে পদার্পণ করছে তা যেনো হয় আনন্দে পরিপূর্ণ।সকলেরই কামনা থাকে নতুন জীবনের যে দিনগুলো আসছে তা চমৎকার কাটবে। নতুন জীবন শুরু করার পূর্বে সকলের কাছ থেকে এই দোয়া কামনা থাকে নব বর-বধূর।

বেশ কয়েকদিন ধরে আমি একটি বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত আছি।গতকালের দিনটিও ব্যতিক্রম ছিল না।গতকাল ছিল বিয়ের মূল অনুষ্ঠান।মূলত মেয়ের পিতার আয়োজিত অনুষ্ঠান।বর্তমানে বিয়ের যে প্রচলিত রীতিনীতি এগুলো ইসলামের নিয়মের সাথে ব্যাপকভাবেই সাংঘর্ষিক।

IMG_20240712_220934.jpg

কারণ আমাদের মুসলিম রীতিতে বিবাহের সময় মেয়ের পিতার একটি টাকা ও খরচ করার প্রয়োজন পড়ার কথা না।মেয়ের পিতার কোন অনুষ্ঠানের আয়োজনের দরকার নেই।অনুষ্ঠান আয়োজন করবে ছেলে এবং যাবতীয় খরচ সহ সমস্ত কিছু দায় দায়িত্ব ছেলেকে নিতে হবে। উপরন্তু মেয়েকে দিতে হবে সামর্থ্য অনুযায়ী মোহরানা অর্থাৎ দেনমোহর।

ইসলামের এই সুন্দর রীতি কেন যেন আমাদের জীবন ব্যবস্থা থেকে গায়েব হয়ে গেছে। বরং প্রচলিত আছে অনেকগুলো ধাপের অনুষ্ঠান। যেমন- দেখাদেখি পর্ব, আংটি পরানো,গায়ে হলুদ(তাও দুপক্ষের আলাদা আলাদা),বরযাত্রা,বউ ভাত, ফিরানী, জামাই বাজার ইত্যাদি।

IMG_20240712_214923.jpg

যেহেতু আমার ছবি তোলার অভ্যাসটা একটু কম তাই গতকাল ও খুব বেশি ছবি তোলা হয়নি।বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছি মাঝরাত পর্যন্ত। বাড়ি পৌঁছাতে প্রায় রাত দুইটা বেজে গেছে।আপনারা অনেকেই জানেন গতকাল শুক্রবার সকালে প্রচন্ড বৃষ্টিতে ঢাকায় বেশ জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছিল।আমরা যখন সন্ধ্যার পরে কমিউনিটি সেন্টারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ততক্ষণেও পানি খুব বেশি কমেনি।

রাত আটটার দিকেই কমিউনিটি সেন্টারে পৌঁছে গেলাম।যেহেতু আমরা বর পক্ষের অতিথি তাই জানতাম যে বরের আসতে আরো দেরি হবে।কিন্তু বিশেষ কিছু অতিথি চলে এসেছে তাই আমাদেরকে একটু আগেই যেতে হলো।সেখানে গিয়ে কনে ও কনের অভিভাবকদের সাথে ছবি তোলার পর্ব শুরুতেই শেষ করে নিয়েছিলাম। এরপর বরের জন্য অপেক্ষা করা।

IMG_20240713_001310.jpg

IMG_20240713_001301.jpg

কনেপক্ষের কিছু অতিথি তাদের খাওয়া দাওয়া শেষ করে উপহার দিয়ে দশটার মধ্যেই চলে গিয়েছিল।আর দশটার পরে বর আসলো।কনে পক্ষের ছেলে মেয়েরা বরকে দরজা সাজিয়ে আটকালো।যদিও এটা আগেই নির্ধারিত ছিল তাই ৩০ হাজার টাকায় দফারফা হলো।

গতকাল খাবারের মেনুটি ও আমার বেশ পছন্দ হয়েছে।রুমালি রুটির সাথে গ্রিল চিকেন আর গরুর রেজালা।এ ছাড়া মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি,আলুবোখারার চাটনি,কাটিং সালাদ, বোরহানি এবং সবশেষে মিষ্টিতে ছিল শাহী মালাই জর্দা।হাত ধোয়ানোর জন্য ক্যাটারিং এর লোকেরা খুব আয়োজন করে আসলো এবং হাত ধুইয়ে দাঁড়িয়েছিল।১০০ টাকা বকশিশ দিতে হলো আমাকে।

IMG_20240713_185732.jpg

IMG_20240713_185712.jpg

খবর পেলাম মেয়ের বাবা এই আয়োজন উপলক্ষে প্রায় ষাটটি খাসি কিনেছেন।হিসেব কষছিলাম শুধু এক কাচ্চি বিরিয়ানিতে কনের বাবার কি পরিমাণ টাকা খরচ হলো!!!যদিও তিনি হাসিমুখে সব কিছুর আয়োজন করেছেন। আল্লাহ তাকে সেই সামর্থ্য ও দিয়েছেন।

শেষের দিকে বিদায় বেলাতে যখন মেয়ের বাবা-মা মেয়ের হাত ছেলের বাবা মা ও ছেলের হাতে তুলে দিচ্ছিলেন তখন এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল।সবকিছু ছাপিয়ে দেখলাম ছেলের বাবা ও কাঁদছে।ভালো লাগলো ব্যাপারটি।ব্যতিক্রম আমিও নই।চোখ থেকে পানি আমারও ঝরলো।

IMG_20240713_010937.jpg

IMG_20240713_185617.jpg

অবশেষে কনেকে কান্না ভেজা চোখে গাড়িতে তুলে নিয়ে আমরা আবার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।মেয়ের পরিবারের সকল সদস্যের ওই মুহূর্তের চেহারাটি সত্যিই ভুলে যাওয়ার মত নয়।এত বছর ধরে অতি যত্নে একটি মেয়েকে লালন পালন করে সারা জীবনের জন্য আরেকজনের হাতে তুলে দেয়া,অনেক কষ্টকর একটি মুহূর্ত।সৃষ্টিকর্তা সকল কন্যার পিতা মাতাকে এই সময়টিতে ধৈর্য ধারণ ও সহ্য করার তৌফিক দান করুন এটাই দোয়া করছিলাম।

(আজকে যে ছবিগুলো দিয়েছি তার কিছু আমার মোবাইলে তোলা কিছু আমার হাজবেন্ডের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে নেওয়া।যেহেতু সব গুলো ছবি নিজে তুলতে পারিনি তাই কিছুটা এডিট করতে হয়েছে।)

DeviceName
Androidvivo v19
Cameratriple camera 48mp+8mp
LocationBangladesh 🇧🇩
Shot by@hasnahena

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xyWsw1kHnXVkn7Qp6hme6bwxmeXAsiaziMYqPesnvAxBKoZxpvAxoJGLfGnEUeMr1gEv2DbujLXro4ihMK4nci7VnRSHt.png

◦•●◉✿ধন্যবাদ সবাইকে লেখাটি পড়ার জন্য।✿◉●•◦
Sort:  
Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58617.29
ETH 3164.87
USDT 1.00
SBD 2.44