জুয়া খেলার পরিণতি ভালো হয় না।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমার ঐ বাদশা ভাইয়ের মতো অনেকে জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েন (Pathological gambling) এবং এ থেকে বের হয়ে আসতে পারেন না। ফলে নিজের ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনের সুনাম নষ্ট হয়ে বয়ে আনে দূর্ণাম ও দূর্গতি।
আসলে জুয়া (Gambling) একটি সামাজিক ব্যাধি। সামাজিক হিসাবে এর স্বীকৃতি না থাকলেও মৃদু বা হালকা জুয়া খেলার প্রচলন অনেক দেশে রাষ্ট্রীয় ভাবে অনুমোদন আছে, যেমন- লটারী জেতা, শেয়ার মার্কেট ব্যবসা। যদিও এগুলোকে জুয়া বলে চিহ্নিত করা হয় না। কিন্তু প্রকৃত অর্থে ঐ গুলিও জুয়া।
জুয়াসক্ত ব্যক্তি নিয়ে নানাবিধ পড়াশোনা করে এটা বুঝতে পারলাম এ ধরনের ব্যক্তি আসলে মনোরোগে ভুগতে পারেন। ঐ সমস্ত মানসিক ব্যাধির উপসর্গ হিসেবে জুয়া খেলতে পারেন। সেগুলো হলো: বিষণ্নতা (Depressive illness), সমাজ বিরোধী ব্যক্তিত্ব (Antisocial personality), দুশ্চিন্তা (Anxiety disorders), মাদকাসক্তি (Drug depndence), মদ্যপান (Alcoholism) ও মানসিক প্রশান্তির আশায় (way of cathersis)। অনেকে জীবনের একটি অংশ হিসেবে (way of life) জুয়া খেলায় মনোনিবেশ করতে পারে। জুয়াসক্তির কয়েকটি বিশেষত্ব আছে। সেগুলো হলো:
১. জুয়ারী ও তার পরিবারের সদস্যরা জুয়া খেলার পরিণতির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকেন।
২. জুয়াসক্ত ব্যক্তির চিন্তাধারা জুয়া খেলা নিয়েই থাকে।
৩. জুয়া না খেলতে পারলে তার মনে অস্বস্তিকর আবেগ তৈরি হয়।
৪. কেবল মাত্র জুয়া খেলতে পারলেই এই অস্বস্তি দূর করা সম্ভব।
৫. জুয়াখেলা অবস্থায় অর্থ ব্যায়ের পরিমাণ তার নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। যদিও তিনি উপলব্ধি করেন যে সীমাহীন টাকা তার ব্যয় হচ্ছে।
৬. জুয়াসক্তির ফলে তার অর্থনৈতিক, পারিবারিক ও সামাজিক অনিষ্ট হয়।
জুয়ারীরা আহার, নিদ্রা ইত্যাদিতে অনিয়ম করে বিধায় তারা শারীরিক সমস্যা ও ব্যাধিতে ভুগেন। জুয়াসক্ত ব্যক্তিরা তারা পরস্পর পরস্পরের প্রতি একটি টান বা আকর্ষণ অনুভব করেন। ফলে তাদের মধ্যে একটি ছোট সমাজ (Sub-culture) গড়ে উঠে। তারা এর মধ্যে সীমাবদ্ধ হওয়াটা বেশী পছন্দ করেন। শুধু সমাজ যে এদের ঘৃণা করে তা না, ইসলাম ধর্মে জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং পরিণতি সম্বন্ধে সতর্ক করা হয়েছে। এসম্বন্ধে কুরআনের নির্দেশ বাণী আছে। "শয়তান তো মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদিগকে আল্লাহর স্মরণে ও নামাযে বাধা দিতে চায় । তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না।”
চিকিৎসা : মানসিক ব্যাধি থাকলে তার চিকিৎসা করতে হবে। যাদের কোন মানসিক ব্যাধি নেই সেক্ষেত্রে সমাজের অন্যান্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও জুয়াড়ীকে সাহায্য করতে পারে।। শুধু মনোচিকিৎসকের একার পক্ষে ইহা সম্ভব নয়। পরিবারের কোন সমস্যা আছে কি-না তাও খেয়াল রাখতে হবে। কেবল মাত্র জুয়াড়ীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন (Anonymous) দ্বারা ভাল ফল পাওয়া যায়। কেননা এনুনাইমাস প্রকৃত পক্ষে Self-help organization হিসেবে কাজ করে। প্রতিটি সদস্য একত্রে বসে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিজেরা কিভাবে সংশোধন হওয়া যায় তার পথ বের করে নিবে। প্রয়োজনে একে অপরকে মানসিক সমর্থন দিবে। তাছাড়া দলগত চিকিৎসা (Group therapy) ফলপ্রসু বলে দাবী করা হয়। জুয়ারীকে মানসিক সমর্থন (Supportive psychotherapy) দিতে হবে। ইসলাম ধর্মের বিধি নিষেধ মেনে চলার মানসিক শক্তি অর্জনে চেষ্টা করতে হবে।
সবশেষে ভালো সংবাদ দিতে চাই যে, বাদশা ভাই জুয়ার আসক্তি থেকে একদম মুক্তিলাভ করেছিলেন। বর্তমানে তিনি একজন সফল কনট্রেকটার। নাতি-পুতি নিয়ে সুখের সংসার।
জুয়া খেলা খুবই খারাপ একটি খেলা। এটি এমন একটি খেলা যেখানে কোন প্রকার কোন শান্তি পাওয়া যায় না। আর জুয়া খেলা করলে সে সব মানুষের ধ্বংস নিশ্চিত। এই খেলা এমন একটি নেশায় পরিণত হয় যে যে এই জুয়া খেলা খেলে সে যতক্ষণ না পর্যন্ত জুয়া খেলা খেলতে পারে ততক্ষণ সে শান্তিতে থাকতে পারে না তার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। এজন্য জুয়া খেলা থেকে অবশ্যই বিরত থাকা উচিত।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা টপিক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য
খুব চমৎকার একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ছোটবেলা থেকে শুনেছি আমি যে ওখানে খারাপ একটা জিনিস কিন্তু বড় হয়ে দেখছি খারাপ বলতে এতটাই খারাপ যে একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দিতে পারে , এইতো কিছুদিন আগের কথা আমার বাড়ির পাশে একটা লোক জুয়া খেলে এমন অবস্থা করেছে তার সবকিছু বিক্রি করে দিয়ে নিশ্চয় হয়ে গিয়েছে এখন পথে পথে ঘুরছে মানুষ কখনো ভালো হতে পারে না জুয়া খেলে , জুয়া খেলার অধঃপতন গুলো আপনি খুব সুন্দর ভাবে, বিশ্লেষণ করেছেন।যারা জুয়া খেলে এ ধরনের মানুষ এর থেকে বেরিয়ে আসা না হলে ভয়ংকর কিছু তার সাথে ঘুরতে পারে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
আমি খেয়াল করে দেখলাম প্রায় সবারই আশেপাশে একজন পরিচিত জউয়আড়ঈ আছে। এটা সত্যি অবাক করার মত বিষয়।তার মানে জুয়া খেলাটা এখনো হারিয়ে যায় নি। আমাদের চারপাশে খুব সংগোপনে বাসা বেধে রয়েছে।
সামাজিকভাবে আমাদের কি উচিত এর নির্মূলের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
জুয়া খেলা আসলেই আমাদের সমাজের একটা ব্যাধি । আর এই সামাজিক ব্যাধি দূর করতে আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে না হলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন।
আপনি চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।
ভালো থাকবরন সবসময়। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
আপনি একদমই সঠিক কথা বলেছেন আপু। আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। ধন্যবাদ আপনাকে।
জোয়া খুবই মারাত্মক একটা জিনিস,, যেটা একবার একটা মানুষের ভেতরে আয়ত্ত করে ফেললে। সেই নেশা থেকে বের হয়ে আসাটা খুবই কষ্টকর ব্যাপার হয়ে পড়ে। আমাদের গ্রামে দুইজন মানুষ ছিল,, যারা কিনা রাত দিন 24 ঘন্টা এই জুয়া খেলা নিয়ে পড়ে থাকতো তাদের সংসার তাদের বাবা-মা ছেলে-মেয়ে কারো কথা শুনতো না।
বর্তমানে তারা দুইজন এই পৃথিবীতে নেই সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে পরপারে নিয়ে গেছে। যাই হোক জুয়া খেলা মোটেও ঠিক নয়,, এটা শরীয়তের দিক দিয়েও খুব খারাপ একটা বিষয়। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত এসব বিষয় থেকে নিজেদেরকে আড়াল করে রাখা। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,,, এই বিষয়টা আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।
আপনি যে আমার পোস্টটি ভালোভাবেই পড়েছেন তা বুঝতে পারলাম। এর জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
জুয়া খেলা এমন একটি খারাপ খেলা,,,, এটা এমন একটি খারাপ খেলা যেখানে কোন শান্তি পাওয়া যায় না। জায়া খেললে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে এটা একদম নিশ্চিত।
জুয়া খেলা রাতের ঘুমকে হারাম করে দেয়।জুয় খেলতে খেলতে এমন সময় একটা জিনিসে আসক্ত হয়ে যায় নিজের বউ বাচ্চা ছেলেকেও চিনি না। তাই আমাদের জুয়া খেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ,,, এত সুন্দর একটা টপিক আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনি জুয়াড়ীদের সম্পর্কে যে সুন্দর ভাবে বিশ্লেষণ করেছেন তার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ
আপনার আজকের পোস্ট পড়ে আমার এক ভাইয়ের কথা মনে পড়ে গেল।।। আমার এই ভাইটা একসময় অনেক টাকার মালিক ছিল, কিন্তু এই জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে তার যা কিছু ছিল।। সবকিছু বিক্রি করে আজ রাস্তায় বসে গেছে।।।
আপনি জুয়া খেলা নিয়ে অনেক বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং কিছু কিছু বাস্তবতা বলেছেন।।। খুবই ভালো লেগেছে আপনার পোস্ট।। ধন্যবাদ এত সুন্দর বিষয় নিয়ে পোস্ট করার জন্য।।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ