The Diary Game | |A Very Busy Day At Hospital || 02 June, 2024
সকলের প্রতি ভালোবাসা জ্ঞাপন করার মাধ্যমে আজকে আমি আমার অতিবাহিত দিনটি শেয়ার করতে যাচ্ছি।
এলার্মের শব্দ শুনে ঘুম ভাঙে ঠিক ৭:০০ টায়।ডিউটিতে যেতে হবে ৮:০০ টায়। ঘুম থেকে উঠেই ফ্রেশ হয়ে সবাই মিলে প্রস্তুত হয়ে চলে যাই হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।যাওয়ার পথেই একটা হোটেলে সকালের খাবার হিসেবে খিচুড়ি খেয়ে নিই।এরপর সময়ের ঠিক কয়েক মিনিট আগেই পৌঁছে যাই গন্তব্যে। সেখনে কিছু ছবি ক্যামেরাবন্দী করে রাখি।বিশেষ করে করোনায় ভারতের দেওয়া উপহারসরূপ এম্বুল্যান্সগুলোর মধ্যে একটি আমি এখানে দেখতে পাই।এম্বুল্যান্সটি আমাদের দেশের সচরাচর দেখা এম্বুল্যান্স থেকে অনেক বড়।
এরপর আমি আমার ডিউটিতে যোগ দেই।গতকাল আমার প্রথমদিন হওয়ায় পরিচয়পর্ব ছাড়া কোনো কাজ করা হয়নি।আজকে আমার ডিউটি ছিলো ফিমেইল সার্জারি ওয়ার্ডে।সেখানে গিয়েই সিনিয়র স্টাফদের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী সকালবেলার মেডিসিন দিয়ে দেওয়া।আমাদের ওয়ার্ডে কমপক্ষে ২০০ জন পেশেন্ট ছিলো।আমরা স্টুডেন্ট ছিলাম সেখানে ৮ জন।তাই ঔষধ দিতে দিতে অনেক সময় লেগেছে।
এরপর ঔষধ দেওয়া শেষে আমরা একটু বিশ্রাম নিতেই ২ জন ডাক্তার স্যার একসাথে চলে আসলেন।এবার অনেক কাজ।আমার নতুন যায়গায় নতুন মানুষদের সাথে খাপ খাওয়ানো বেশ কঠিন।আমার নার্ভাসনেস কাজ করতেছে।এরপর একে একে ডাক্তার রোগী দেখা শুরু করলো।আমরাও স্যারদেরর সাথে থাকতে লাগলাম।একটানা ২:৩০ ঘন্টা সময় নিয়ে পেশেন্ট দেখলেন স্যারেরা।আমার পায়ের অবস্থা খুব খারাপ।অনেক ব্যথা করতেছিলো।
এরপর একটা ছোট্ট বাচ্চার হাত চুলার মধ্যে ঢুকে যায় এবং পুড়ে যায়।দেখে আমার হাত পা কাপতেছিলো🥺।যখন স্যার চলে যায় আমাকে বলে যায় যে তুমি এই বাচ্ছাটার ড্রেসিং করাবা ১ দিন পর পর।আর ৪ দিন পর এসে কিন্তু তোমার কাছেই জবাবদিহি নিবো।কিন্তু আমি তো সবেমাত্র ২য় বর্ষের ছাত্র। স্যার সেটা জানেন না।আমি বিপাকে পড়ে গেলাম।বাচ্ছাটাকে একজন সিনিয়রের সাহায্য নিয়েই ড্রেসিং করাই।
স্যার একবার কাছে ডাকলো।ভয়ে ভয়ে কাছে গেলাম।আর একটা ফানি ঘটনা ঘটলো।আমার গোফে হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে বলতেছে "তোমার গোফগুলা তো অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ট্রাপিস হেডের মতো।তোমার নাম কি।" ইত্যাদি ইত্যাদি কথা বলতে থাকলো।যাক আমার ভয়টা কিছুটা কাটলো😃।
আজকে আরেকটা বিষয় আমাকে খুবি কষ্ট দিছে।সেটি হচ্ছে একজন ২৪ বছর বয়সী নারীর মাম্পস নিয়ে এডমিশন নিলো।সাথে হাজবেন্ড আসছে।মহিলাটি ঔষধ খাওয়ার জন্য মুখ খুলতে পারতেছিলো না।ওনার স্বামী বলতেছে আমাদের কেউ নেই এখানে আসার মতো।খুব কষ্ট পেলাম।দৌড়ে প্রেশক্রিপশন নিয়ে গেলাম ৪ তলা থেকে ২ তলায়।ডাক্তার স্যারকে দেখালাম।উনি সবগুলোর ইঞ্জেকশন লিখে দিলেন।এরপর আমি মহিলাটির ক্যানুলা করানোর পর সেই মেডিকেশনগুলো পুশ কিরে দিলাম।
এরপর ২ :০০ টা বেজে গেলো। বাসায় চলে এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া করে নিলাম।এরপর একটু বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।বিকেলবেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বন্ধুদের সাথে নিয়ে ঘুরতে যাই।ঘুরাঘুরি শেষে কিছু জিনিসপত্র কেনার বাকি আছে, সেগুলো কিনে বাসায় চলে আসার কথা ভেবেই বাসা থেকে বের হই।প্রথমে বাইরে গিয়েই আমরা একটা করে সিঙারা খেয়ে নিই।এরপর আমরা বিভিন্ন যায়গায় ঘুরাঘুরি করি।
সন্ধ্যা হতেই আমরা যাই কাপড়ের মার্কেটে। আমার বন্ধু বুলবুল একটা টিশার্ট কিনবে তাই।এরপর সে একটি টিশার্ট কিনলো ২০০ টাকা দিয়ে।এরপর আমরা গেলাম একটা বাল্বের দোকানে।সেখান থেকে ৭ টা বাল্ব কিনে নিলাম।এতোগুলো বাল্ব নিলাম কারণ আলোক সল্পতা আমার একদিন ভালো লাগে না।২টা রুমে ২ টা করে মোট ৪ টা আর ডাইনিংয়ে ২ টা আর বাথরুমের জন্য ১ টা বাল্ব কেনা হলো।
এরপর হারপিক, ব্রাশ এবং একটা তালা কিনে নিলাম।একটা তালার ৬ টা চাবি বানিয়ে নিলাম।কারন একেকজনের একেক সময় ডিউটি। সেকথা ভেবেই সবাইকে একটা করে চাবি দেওয়া হয়।এরপর আমরা মেসে চলে আসি।আর এভাবেই আমার একটা সুন্দর দিনের সমাপ্তি ঘটে।
প্রতিদিনের মতোই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খিচুড়ি খেয়েছেন। পরে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিজ কর্মস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন। গত দিনে আপনার ডিউটির প্রথম দিন ছিল এজন্য তেমন কাজ করেন নি। তবে দ্বিতীয় দিন হিসেবে আপনার ফিমেল সার্জারি ওয়ার্ডে ডিউটি পড়েছিল। বেশি ব্যস্তময় দিন পার করেছেন। সন্ধ্যা বেলায় আপনার বন্ধু টি-শার্ট কিনবে এজন্য মার্কেটে কাপড় কিনতে গিয়েছেন।
সারাদিনের মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ডিউটি শেষ করে একেই তো পায়ে ব্যাথা তার উপর বন্ধুর টিশার্ট কেনার ঝামেরা।অনেক হাটাহাটি করতে করতে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছিলো।তবুও পছন্দ হলে দাম মিলে না আর দাম মিললেই পছন্দ হয় না।অবশেষে একটা পছন্দ টিশার্ট কম দামেই পেয়েছিলাম।
যেহেতু আপনি হসপিটালে কর্মরত রয়েছেন তাই আপনাকে ওখানেই সবটা সময় দিতে হয়। আসলে ছোট বাচ্চারা চুলের মধ্যে এবং চুলার কাছাকাছি একটু বেশি থাকার চেষ্টা করে। কেন সেটা আমি জানি না। তবে আপনারা যে বাচ্চার কথা বলেছেন তার হাতের অবস্থা এখন বর্তমান সময় কেমন আছে আমি জানিনা। দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা তাকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থতা দান করুক। যেহেতু আপনারা একজন এক এক সময় ডিউটি করেন। তাই একটা তালার ছয়টা চাবি বানিয়ে নিয়েছেন। বেশ ভালো কাজ করেছেন ধন্যবাদ একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার সম্পুর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।আসলে কিচ্ছু করার নেই।দূর্ঘটনা তো বলে কয়ে আসে না।এমন বাচ্ছা প্রতিদিনই কয়েকটি করে এখানে এডমিট হচ্ছে।কষ্ট তো সবার জন্যই লাগে।তবে সেইদিন যে বাচ্চার কথা বলছি আজকে তার রিলিজ হইছে