ইংরেজি সাহিত্যে Neoclassical Period (1660-1789)
সাধারণ মানুষ রাজতন্ত্র নিয়ে বিরক্ত। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার সূচনালগ্ন উপস্থিত। সামন্ত ভূমিপ্রভূ আর অভিজাত পরিবারের পাশাপাশি একটি বণিকশ্রেণি গড়ে উঠছে যাদের সম্পদে সমৃদ্ধ হচ্ছে টেমস নদীর দুকূল। অথচ সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদের উপস্থিতির কোনও সুযোগ সৃষ্টি হয় নাই। প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চের প্রাচীন অবকাঠামো দিয়ে ধর্মীয় ও আত্মিক প্রশান্তির সুযোগও দেখা যাচ্ছেনা। এই অবস্থায় সমাজ দ্বিধাবিভক্ত। রাজ্যানুরাগী ক্যাভালিয়ের আর গণতন্ত্রানুরাগী রাউন্ডহেড। রক্ষণশীল প্রোটেস্ট্যান্ট আর নতুনের ধারণা নিয়ে আসা পিউরিটান। রেনেসাঁর শেষ হয় নতুনের জয়ে। চার্লস-১ এর শিরশ্ছেদে পতন হয় রাজতন্ত্র। অলিভার ক্রোমওয়েলের কমনওয়েলথ নিয়ে আসে পিউরিটান সমাজ।
ঘোর রক্ষণশীল পিউরিটানরা লন্ডনের থিয়েটারগুলো পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়। সমস্ত রাজত্বে “হাসতে আছে মানা” টাইপ অবস্থা। মানুষজন অতিষ্ঠ। তাদের মনে হয়, “আমরা তো রাজতন্ত্রেই ভালো ছিলাম”। তারা ফ্রান্স থেকে ২ নম্বর চার্লসকে খুঁজে বের করে আবার রাজত্বে বসায়। শুরু হয় রাজতন্ত্রের Restoration যুগ। যেহেতু পূর্বতন ক্যারোলিন যুগে মানুষ প্রাচীনের আরাধনায় মেতেছিল। এবারে সেটাই ফিরে আসে। Baroque ধারার Renaissance Art এর সাহসী জটিলতা বাদ দিয়ে পশ্চিমের 16 মানুষ পুনরায় ফিরে যায় তাদের গ্রেকো রোমান স্বর্ণযুগে। সেকালের শিল্পকে বলা হয় আদর্শ আকৃতি, সারল্যের মধ্যে আভিজাত্য।
প্রিন্টিং প্রেসের ব্যবহার কেবল বাইবেল ছাপানোর চেয়ে বেশি কিছু হয়ে উঠেছে। মানুষ মজেছে জার্নাল ও পিরিওডিক্যালের নেশায়। ত্রৈমাসিক, মাসিক, পাক্ষিক, সাপ্তাহিক, দৈনিক সব ধরনের জার্নালের উত্থান এই যুগে। এসব জার্নালে সাহিত্য প্রকাশের ব্যাপারটা ভিক্টোরীয় যুগ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে, তবে সাহিত্যমান সম্পন্ন সামাজিক ব্যাঙ্গচিত্র প্রকাশ হয়ে হর হামেশাই শোরগোল তুলে দিতো। নবায়িত রাজতন্ত্রে নবাগত বণিক ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির কথা বলার একটা জায়গা তৈরিই হলো। রীতিমতো গালাগাল ও কাদা ছোড়াছুড়ির প্রতিযোগিতা করে হল্লা তুলে দিলো নতুন রাজনৈতিক বিভাজন। রাজকীয় বংশগতির বিরোধী পক্ষ Whig আর পক্ষে থাকা Tory। এরা একে অন্যকে শব্দাঘাতে বজ্রাহত করার প্রচেষ্টায় জন্ম দিলো ইংরেজি ভাষায় বক্রভাষণের অনন্য সব পদ্ধতি। এই বক্রতার রেশ আজও বজায় আছে ব্রিটিশ হিউমারে।
এদিকে কর্তৃপক্ষের তেমন কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা একটি প্রধান সাফল্যের মুখ দেখলো। সমৃদ্ধ ভারত উপমহাদেশ চলে এলো ব্রিটিশ করতলে। সম্পদ ও সমৃদ্ধির অভাবনীয় এক উৎকর্ষের যুগ যেন ভাগ্যগুণে ধরা দিলো। উদীয়মান এলিটরা গণহারে শিক্ষিত হতে শুরু করলো। তাদের বিনোদনের চাহিদাও জটিল হতে ধরলো। এরই ধারাবাহিকতায় জন্ম নিলেন Milton, Dryden, Pope। পুরাতন সাহিত্যরীতি যেমন- মহাকাব্য, প্যাস্টরাল এলিজি এঁরা নতুন করে উপস্থাপন করলেন। মহাকাব্য হলো Mock Heroic Epic, নাটক হয়ে উঠলো Comedy of Manners। এইভাবে ইংরেজি সাহিত্যেও লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠলো যার নিরিখে আমরা এই যুগবিভাগটি করছি। Neo শব্দের অর্থ New বা নতুন। আর Classic শব্দের অর্থ ধ্রুপদি, চিরন্তন বা সর্বোৎকৃষ্ট। সর্বপ্রথম Classical শব্দটি ব্যবহার করেন Aulus Gelius নামক এক প্রাচীন রোমান লেখক। ইংরেজি সাহিত্যে Classical Literature বলতে বুঝায় প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সাহিত্য। মূলত Neo- Classical যুগে Classical Period এর সাহিত্যিকদের অনুসরণ করা হয় বলে এর নামকরণ এরকম করা হয়েছে। এ যুগকে Pseudo-Classical Periodও বলা হয়। Pseudo অর্থ নকল বা কৃত্রিম।