WEEKLY CHALLENGE । TALK ABOUT YOUR FAVOURITE BOOK ।
আমি যে বইটি সম্পর্কে বলতে চাচ্ছি, বইটির নাম "আরণ্যক"। লেখক বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়।
বিভূতিভূষণের "পথের পাঁচালি " আর "অপরাজিত " দুটি মাস্টারপিছ বই বাদেও "আরণ্যক" অনেকটা মন ছুঁয়ে গেছে। যারা বিভূতিভূষণের লেখা পছন্দ করেন, তারা অবশ্যই এই বইটি পড়ে দেখবেন।
বইটির হার্ড কপি আমার কাছে নেই, এজন্য সফটকপির স্ক্রিনশর্ট দেয়া হলো।
বইটি ঠিক ভ্রমণবৃত্তান্ত ও না, আবার উপন্যাস ও না। যদি বইটিকে উপন্যাস ধরা হয়, তবে এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র অরণ্য নিজেই। যদিও "সত্যচরণ" নামের এক চরিত্রের মাধ্যমে অরণ্য তার অস্তিত্ব ফুটিয়ে তুলেছে, তারপরও পুরো গল্প জুড়ে অরণ্যই জায়গা গড়ে নিয়েছে।
গল্পের কথক "সত্যচরণ " কলকাতায় চাকরির অভাবে খুবই কষ্টের দিন কাটাচ্ছিলো। এমতবস্থায় তার একটা চাকরির সন্ধান মিলে। কিন্তু কলকাতা শহর থেকে বহুদূরে, পূর্ণিয়ার দিকে। সব মেনে নিয়েই তিনি চাকরিতে যোগদান করেন। তার কাজ জমিদারি দেখাশোনা করা। তিনি ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত হন। কিন্তু জমিদারির জায়গাজুড়ে পুরোটাই বন্যভূমি। সত্যচরণের কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঘুরে বেড়ানো, এক বন থেকে অন্য বনে, অন্য জমিদারিতে যাতায়াত, আদিবাসীদের সাথে মেলামেশা এসবের মাধ্যমেই অরণ্য তার নিজ জায়গায় ফুটে উঠেছে।
গল্পের অধিকাংশ চরিত্রই গরীব শ্রেণির লোক। এদের দৈনিক একবেলা কি দুই বেলা আহার যোগানোই এদের বাঁচার অন্যতম লক্ষ্য। এরা চিনা ঘাসের বিচি খেয়ে জীবনধারণ করে থাকে। চরিত্রগুলোর মধ্যে রাজু পান্রী, মাটুকনাথ পান্রী, ধাওতাল সাহু, কুন্তা, মান্চি, রাসবিহারী সিং। এদের মধ্যে রাসবিহারী সিং একজন জমিদার। তিনি অনেকটা অত্যাচারী জমিদার। প্রায়ই প্রজাদের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি করে দেয়, অন্য জমিদারিতে হস্তক্ষেপ করার প্রচেষ্টা করেন।
এছাড়া এ গল্পে এক বৃদ্ধ সাঁওতাল রাজার রাজ্য তুলে ধরা হয়। যারা বিতাড়িত হতে হতে গভীর বনে আশ্রয় নিয়েছে। সাঁওতাল রাজার রাজকণ্যার বর্ণনা আমাকে অনেকটা মুগ্ধ করে। তাছাড়া গল্পের কথক "সত্যচরণ" অন্য কোন বনে ভ্রমণে গেলে, নতুন কোন ফুলগাছের প্রজাতি চোখে পড়লে, তিনি সেটা সংগ্রহ করেন। এবং নিজের বনে সেটা আবার রোপণ করেন। এভাবে কয়েক বছরের মধ্যে সেই ফুল গাছে বন ভরে উঠে।
পরিশেষে বলতে চাই, বইটি সত্যিই দারুণ। যারা গাছাপালা, নির্জনতা পছন্দ করেন, তারা বইটি পড়ে দেখতে পারেন। আশাকরি ফলপ্রসু হবে।
special thanks to @bangladesh.com for this amazing contest.