A man with a lot of achievement
এফসিপিএস পার্ট টু পরীক্ষার ফর্ম পূরণের একদিন আগে আমার লিউকেমিয়া ধরা পড়া। বেশ কিছুদিন ধরেই বেশ দুর্বল অনুভব করছিলাম। ভাবলাম পরীক্ষার চাপে হয়তো এমন মনে হচ্ছে। তাও সিবিসি করতে দিয়ে আসলাম। বাসায় ফেরার পথে মনের অজান্তে হাত গলায় চলে আসলো,লিম্ফ নোড ফার্ম পেলাম। বাসায় এসে দেখলাম, শরীরে র্যাশ। মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেলাম। রাতে যখন ল্যাবে ফোন দিলাম, বললো রিপোর্ট পেন্ডিং। আর কোন সন্দেহ রইলো না।
মানুষের জীবনে কখন কি হয়ে যায় তার কোন নিশ্চয়তা নেই। মুহূর্তের মধ্যেই সাজানো গোছানো একটা জীবন তছনছ হয়ে যায়। জীবনের এরকম একটি পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়া আমার পরিবারের জন্য ছিল বিশাল এক আঘাত। আমার তখন কোন সঞ্চয় নেই। চিকিৎসার খরচ চালানো আমার পক্ষে অসম্ভব ছিল। তবে আমি মনে করি জীবনের সকল ঘটনাই মানুষকে কিছু না কিছু দেখায় ও শেখায়। ক্যান্সার হবার পর আমি দেখেছি মানুষ মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারে। আমার শিক্ষকেরা ছুটিতে থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালে ছুটে এসেছেন, সবরকমের সহযোগিতা করেছেন। এফসিপিএস পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও সহকর্মী ও বন্ধুরা মন্ত্রণালয়ে ছোটাছুটি করেছে। যে যেভাবে পারে টাকা যোগাড় করার চেষ্টা করেছে। আমার গ্রামের মানুষেরা আমার সুস্থতার জন্য রোজা রেখেছে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছে।
অবশেষে চিকিৎসার জন্য আমি ইন্ডিয়া গেলাম। সেখানে ছিলাম সাত মাস। এসময় আমার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন আমার স্ত্রী। নিজের ক্যারিয়ার ও কোলের সন্তান ফেলে তিনি সাত মাস বিদেশে আমার সাথে পড়ে ছিলেন। প্রতিটি থেরাপির আগে একটা সাইকিয়াট্রিক সেশন হতো। সাইকিয়াট্রিস্ট আমাকে বলতেন যে দেখবেন আপনার মনের জোরের কারণেই আপনি বেঁচে যাবেন। আমি ভাবতাম, যদি বেঁচে যাই তবে তা হবে সৃষ্টিকর্তার রহমত ও কাছের মানুষদের দোয়া ও ভালবাসার কারণে। প্রতিটি থেরাপির আগেই মনে আশঙ্কা কাজ করত, এবারই হয়তোবা শেষ। তবুও হারার আগে হার মেনে নেইনি,লড়াই চালিয়ে গেছি। আমি ও আমারই ডিএমসিয়ান ছোট ভাই কে-৬২ ব্যাচের তন্ময় একই সাথে লিউকেমিয়ার চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলাম। সৃষ্টিকর্তার কি অদ্ভূত লীলা,আমাকে ফিরিয়ে দিলেন কিন্তু তন্ময়কে নিয়ে গেলেন।
একজন মানুষ যখন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসে, তার জীবন আর কখনোই আগের মত থাকেনা। সৃষ্টিকর্তা আমাকে বেঁচে থাকার আরেকটি সুযোগ দিয়েছেন, এমন সৌভাগ্য খুব কম মানুষেরই হয়। তাই আমি চেষ্টা করি সেই সুযোগটাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর। সুস্থ হয়ে আসার পর আমি photo courtesy from :sourceএন্ডোক্রাইনোলজিতে এমডি কমপ্লিট করেছি, সামনে এফসিপিএস পার্ট টু দেবারও ইচ্ছা আছে। জীবন থেকে যা শিখেছি, তা ছাত্রদের মাঝেও ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি, মৃত্যুর আগেই মৃত্যুকে মেনে নেবার কোন মানে হয়না। তাই ছাত্রদের শেখাই কখনোই আশা না হারাতে ও সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রাখতে। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকেই ব্যবহার করো ভাল কাজ করতে ও প্রতিনিয়ত ধন্যবাদ জানাও তোমার স্রষ্টাকে কারণ বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ।
thank you represent our bangladesh and bangla post 👍
supported by @nmb82ig & you got 4 upVote free